বুধবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৫

হযরত ইমামে আযম আবু হানীফা নোমান ইবনে ছাবিত র.

হযরত ইমামে আযম আবু হানীফা নোমান ইবনে ছাবিত র.। তিনি শুধু একজন ফকীহই ছিলেন না, বিচক্ষণতাও ছিলো তাঁর পাহাড় সম। 
এক দিনের ঘটনা। এক ব্যক্তি তাঁকে অপদস্ত করার মানসে কয়েকটি প্রশ্ন নিয়ে তাঁর কাছে এলেন। বললেন, হুজুর! আপনি ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে কী বলেন, যার মাঝে নিন্মোক্ত বদগুনগুলো রয়েছে? 
: কী বদগুন?
: ১. যে দেখা ব্যতীত সাক্ষ্য দেয়
২. ইয়াহুদী নাসারাদের কথাকে বিশ্বাস করে। ৩. আল্লাহর রহমত থেকে পালিয়ে বেড়ায়। ৪. মৃত বস্তু বক্ষণ করে। ৫. আল্লাহ যেদিকে তাকে আহ্বান করে সেদিকে ভ্রূক্ষেপ করে না। ৬. যে জিনিসের ব্যপারে আল্লাহ ভীতি প্রদর্শন করেছেন তাকে ভয় করে না। ৭. ফেতনা- ফাসাদকে ভালোবাসে।
.
: ইমাম আবূ হানীফা র. বললেন, অবশ্যই সে মুমিন। প্রশ্নকারী কিংকর্তব্যবিমূঢ় !
: কী করে সে মুমিন হয়? খুলে বলুন!
: দেখো ! ১. তুমি বলেছো সে না দেখে সাক্ষ্য দেয়। মুমিনগন আল্লাহকে না দেখেই সাক্ষ্য দেয়।
.
২. বলেছো, সে ইহুদী- নাসাদের কথাকে বিশ্বাস করে। কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে, “ ইহুদীরা বলে নাসারাগন সত্যের অনুসারী নয়, নাসারাগন বলে, ইহুদীগন সত্যের অনুসারী নয়।“ আর মুমিন তাদের উভয়ের কথাকে বিশ্বাস করে। লোকটি বললো, যথার্থ।
.
: তুমি বলেছো, ৩. আল্লাহর রহমত থেকে পালিয়ে বেড়ায়। দেখো! বৃষ্টি আল্লাহর রহমত। বৃষ্টি দেখে তো সবাই পলায়ন করে যাতে কাপড় না ভিজে যায়।
: এটাও যথার্থ।
.
৪. মৃত বস্তু বক্ষণ করে। মাছ তো মরা। মাছ সকলেই তো মজা করে খায়।
: জ্বি ঠিক।
.
৫. আল্লাহ যেদিকে তাকে আহ্বান করে সেদিকে ভ্রূক্ষেপ করে না। সেটি হলো জান্নাত। কেননা আল্লাহ তাআলা জান্নাতের দিকে আহ্বান করেন। কিন্তু বান্দার কাছে আল্লার দীদারই হচ্ছে আসল চাওয়া। আল্লাহর সন্তুষ্টিই মূল লক্ষ্য। সত্যিকারের প্রিয়তম আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর দিকে দৃষ্টি দেয়া পছন্দ করে না।
.
৬. যে জিনিসের ব্যপারে আল্লাহ ভীতি প্রদর্শন করেছেন তাকে ভয় করে না। সেটা হলো দোযখ। বান্দা প্রিয়তমের অসন্তুষ্টির চিন্তায় এতো বিভোর যে, জাহান্নামের আগুনে পোড়ার তার কোনো ভয় নেই।
.
৭. ফিতনা কে পছন্দ করে। তা হচ্ছে সন্তান-সন্ততি। কেননা আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয় তোমাদের সম্পদ ও তোমাদের সন্তানরা তোমাদের জন্য ফিতনা।“ প্রত্যেক বক্তিরই সন্তানের প্রতি জন্মগত মহব্বত হয়ে থাকে। সুতরাং সে মুমিন।
:
প্রশ্নকর্তা এমন বেনযীর জবাব শুনে হতভম্ব হয়ে গেলো।
:
বন্ধুরা ! আমাদের সমাজের কিছু কিট ইমাম আযমের ইলমি প্রজ্ঞা ও গভীরতার ব্যাপারে অবান্তর প্রশ্ন তোলে। কেউ কেউ তো তিনি হাদীস বুঝেন নি বা তার থেকে বেশী হাদীস আমাদের কাছে আছে বলার মতো ধৃষ্টতাও দেখায়। ইমাম আবু হানীফা র.-এর জীবনের এমন অসংখ্য ঘটনা আছে যাতে তাঁর ইলমকে অনুমান করা যায়। আর তিনি ছিলেন তাবেঈ। তিনি হাদীস বুঝেননি তুমি বোঝো, তাইনা? তাঁর তাকলিদ করবো না, তোদের তাকলিদ করবো? তিনি সহি হাদীস পান নি , ১৪শত বছর পর তোরা সব সহি হাদীস খুঁজে পাচ্ছিস ? যত্তোসব ভাওতাবাজের দল।
:
তাই আসুন ! প্রতিরোধ গড়ে তুলি। মজবুত প্রতিরোধ। তাদের সব ষড়যন্ত্রকে রুখে দাঁড়াই। ছিন্ন করে দেই সকল ফিতনার জালকে।
.
আল্লাহ আমাদের হিফাযত করুন তাদের ফিতনা থেকে। জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম নসীব করুন ইমামে আবু হানীফা র.কে । আমীন।।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন