একদেশে একজন গুরুভক্ত শিষ্য ছিলো। শিষ্যটি ছিলো খুব সহজ-সরল। নিজের মাঝে ভালো-মন্দ যাচাই করার কোনো যোগ্যতা ছিলো না। তাই গুরু যেভাবে বলতো সেভাবেই নিজেকে পরিচালিত করতো। কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলেই স্মরণাপন্ন হতো গুরুর। গুরুও অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে তার শিষ্যকে কল্যানের পথ বাতলে দিতেন। ফলে শিষ্যের সরল জীবন খুব সুন্দর কেটে যাচ্ছিলো।
:
একবার গুরু-শিষ্য সফরে বের হলেন। ঘুরতে ঘুরতে এমন এক আজব শহরের সন্ধান পেলেন, যেখানে সোনার দাম ১টাকা, রুপার দাম ১টাকা, দুধের দাম ১টাকা, মধুর দাম ১টাকা, ঘিয়ের দাম ১টাকা, তেলের দাম ১টাকা। কাপড়ের দাম ১টাকা, তুলার দাম ১টাকা, সুতার দাম ১টাকা। মাছের দাম ১টাকা। মোটকথা সবকিছুর দাম ১টাকা। শিষ্য তো দেখেই দিলেন লাফ। এরচে‘ ভালো আর হতেই পারে না। গুরু তার প্রজ্ঞার দ্বারা অনুধাবন করলেন, যে দেশে সবকিছুর মূল্য ১টাকা সেখানে আর কিছু থাক-না থাক অন্তত ইনসাফ নেই সেটা নিশ্চিত।
কিন্তু শিষ্য কোনোভাবেই তা মানতে নারাজ। গুরুর সাথে গোঁ ধরে বসলেন, গুরু ! আমি এ দেশেই থাকবো। কিছুদিন অন্তত খেয়ে দেয়ে স্বাস্থ্যটা মোটাতাজা করে নিই। গুরু যতোই বোঝালো, সে তা মেনে নিলো না। তাই অত্যন্ত ভগ্ন মনোরথে গুরু তার আদরের শিষ্যকে রেখেই চলে গেলেন। বললেন, কখনো প্রয়োজন মনে করলে তোর এই গুরুকে স্মরণ করিস।
:
এভাবে দেখতে দেখতে একবছর কেটে গেলো। সরল শিষ্যও খেয়ে-দেয়ে বেশ নাদুস-নুদুস হয়েছে। একদিনের ঘটনা। চুরি হয়েছে দেশের রাজার বাড়িতে। রাজার মেয়ের হার চুরি গেছে। পাইক-পেয়াদারা খুঁজে খুঁজে চোর বেটাকে ধরে নিয়ে আসা হলো দরবারে। রাজা চোরের জন্য ফাঁসির আদেশ দিলেন। কিন্তু বিপত্তি হলো অন্যখানে। চোরের গলা চিকন হওয়ায় ফাঁসির দড়ি বড়ো হয়ে যাচ্ছে। রাজাকে জানানো হলো তা। রাজা ফায়সালা করলেন, যার গলার সাথে মিলে তাকে ফাঁসিতে চড়াও।
:
এবার ফাঁসির দড়ির মাপের সাথে মিলে গেলো ঐ শিষ্যের গলা। তাই সিদ্ধান্ত হলো তাকেই ফাঁসিতে চড়ানো হবে। অবোধ শিষ্যের তখন গুরুর কথা মনে পড়লো। গুরু বলেছিলো, “যে দেশে সব কিছুর মূল্য ১টাকা, সেদেশে ইনসাফ নেই।“ এখন তো তাই প্রমাণ হলো। যাক শেষ ইচ্ছা হিসেবে গুরুকে দেখতে চাইলো সে। বহু খুঁজে গুরুকে উপস্থিত করা হলো দরবারে। গুরুকে দেখামাত্র শিষ্য ঝাঁপিয়ে পড়লো তার বুকে। সব কথা খুলে বললো তাকে।
:
ফাঁসির ক্ষণ এলো। গুরু চিৎকার করে বললেন, মহারাজ ! আমার শিষ্যের পরিবর্তে আপনি আমাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিন। প্লিজ !!!!
: কেনো?
: আজ এমন এক দিন, আজ যে ই ফাঁসিতে ঝুলবে সে সর্গে যাবে। তাই আমি সর্গে যেতে চাই।
এবার রাজা চিন্তা করলেন, যদি সর্গে যেতেই হয় তাহলে আমিই তার বেশী হকদার। তাই তিনি সিদ্ধান্ত পাল্টে নিজেই ফাঁসিতে ঝুলে গেলেন। সুযোগ বুঝে চুপিসারে পালিয়ে গেলেন গুরু-শিষ্য।
:
দৃশ্যপট-[২]
:
সাধারণ মানুষের কোনো জ্ঞান নেই। তারা আগে উলামায়ে হক্বানীর পরামর্শ মেনে নিজেদের জীবন পরিচালনা করতো। যখন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতো তারা উলামায়ে দ্বীনের স্মরণাপন্ন হতো। এভাবেই সব ঠিকঠাক চলছিলো। একদিন কাবীলের পরামর্শ দাতা কাকের মতো সামনে এলো এক অদ্ভুত বাকসো। একজন ডাক্তার। শুরু হলো ফতোয়ার ফুলঝুড়ি। দ্বীনের দাঈ হতে কুরআন শুদ্ধ লাগে না। কারণ তুমি আহলে হাদীস। তারাবী ৮ রাকাত, সহি হাদীস। স্ত্রীর দুধ খাওয়া জায়েয, সহি হাদীস। কালিমায় মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ বলা যাবে না, সহি হাদীস। মাযহাব মানা যাবে না, সহি হাদীস। পীর বা আলেম উলামার দরবারে যাওয়া যাবে না, সহি হাদীস। মাদরাসায় যাকাত না দিয়ে পিস টিভিতে যাকাত দিতে হবে, সহি হাদীস। হিন্দুস্তানে বাস করে আমি হিন্দু, সহি হাদীস। বিতির নামায ১ রাকাত, সহি হাদীস। পর্দা মানা লাগবে না, সহি হাদীস। কোর্ট-টাই পড়া বৈধ, সহি হাদীস। জুমার খুতবা বাংলায় দিতে হবে, সহি হাদীস। এ সকল ফতোয়া শুনে সাধারণ মানুষ খেই হারিয়ে ফেললো। উত্তম মনে করে থাকতে লাগলো। ছেড়ে দিলো উলামায়ে কেরামের সংশ্রব। উলামায়ে কেরাম বুঝলেন, সহি হাদীসের আদলে এ এক ভন্ডামী। উলামায়ে কেরাম বোঝালেও সাধারণ মানুষ মানতে নারাজ। বিভ্রান্ত। এভাবে চলতে চলতে একদিন ঈমানটাকে চুরি করে ঠেলে দিলো জাহান্নামের পথে। সাধারণ মানুষকে প্রভুর পথে ফিরিয়ে আনতে আবার উলামায়ে কেরামই উদ্যোগী হলেন। চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন অবিরত। আল্লাহ সকলকে সহি সমঝ দান করুন।
:
একবার গুরু-শিষ্য সফরে বের হলেন। ঘুরতে ঘুরতে এমন এক আজব শহরের সন্ধান পেলেন, যেখানে সোনার দাম ১টাকা, রুপার দাম ১টাকা, দুধের দাম ১টাকা, মধুর দাম ১টাকা, ঘিয়ের দাম ১টাকা, তেলের দাম ১টাকা। কাপড়ের দাম ১টাকা, তুলার দাম ১টাকা, সুতার দাম ১টাকা। মাছের দাম ১টাকা। মোটকথা সবকিছুর দাম ১টাকা। শিষ্য তো দেখেই দিলেন লাফ। এরচে‘ ভালো আর হতেই পারে না। গুরু তার প্রজ্ঞার দ্বারা অনুধাবন করলেন, যে দেশে সবকিছুর মূল্য ১টাকা সেখানে আর কিছু থাক-না থাক অন্তত ইনসাফ নেই সেটা নিশ্চিত।
কিন্তু শিষ্য কোনোভাবেই তা মানতে নারাজ। গুরুর সাথে গোঁ ধরে বসলেন, গুরু ! আমি এ দেশেই থাকবো। কিছুদিন অন্তত খেয়ে দেয়ে স্বাস্থ্যটা মোটাতাজা করে নিই। গুরু যতোই বোঝালো, সে তা মেনে নিলো না। তাই অত্যন্ত ভগ্ন মনোরথে গুরু তার আদরের শিষ্যকে রেখেই চলে গেলেন। বললেন, কখনো প্রয়োজন মনে করলে তোর এই গুরুকে স্মরণ করিস।
:
এভাবে দেখতে দেখতে একবছর কেটে গেলো। সরল শিষ্যও খেয়ে-দেয়ে বেশ নাদুস-নুদুস হয়েছে। একদিনের ঘটনা। চুরি হয়েছে দেশের রাজার বাড়িতে। রাজার মেয়ের হার চুরি গেছে। পাইক-পেয়াদারা খুঁজে খুঁজে চোর বেটাকে ধরে নিয়ে আসা হলো দরবারে। রাজা চোরের জন্য ফাঁসির আদেশ দিলেন। কিন্তু বিপত্তি হলো অন্যখানে। চোরের গলা চিকন হওয়ায় ফাঁসির দড়ি বড়ো হয়ে যাচ্ছে। রাজাকে জানানো হলো তা। রাজা ফায়সালা করলেন, যার গলার সাথে মিলে তাকে ফাঁসিতে চড়াও।
:
এবার ফাঁসির দড়ির মাপের সাথে মিলে গেলো ঐ শিষ্যের গলা। তাই সিদ্ধান্ত হলো তাকেই ফাঁসিতে চড়ানো হবে। অবোধ শিষ্যের তখন গুরুর কথা মনে পড়লো। গুরু বলেছিলো, “যে দেশে সব কিছুর মূল্য ১টাকা, সেদেশে ইনসাফ নেই।“ এখন তো তাই প্রমাণ হলো। যাক শেষ ইচ্ছা হিসেবে গুরুকে দেখতে চাইলো সে। বহু খুঁজে গুরুকে উপস্থিত করা হলো দরবারে। গুরুকে দেখামাত্র শিষ্য ঝাঁপিয়ে পড়লো তার বুকে। সব কথা খুলে বললো তাকে।
:
ফাঁসির ক্ষণ এলো। গুরু চিৎকার করে বললেন, মহারাজ ! আমার শিষ্যের পরিবর্তে আপনি আমাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিন। প্লিজ !!!!
: কেনো?
: আজ এমন এক দিন, আজ যে ই ফাঁসিতে ঝুলবে সে সর্গে যাবে। তাই আমি সর্গে যেতে চাই।
এবার রাজা চিন্তা করলেন, যদি সর্গে যেতেই হয় তাহলে আমিই তার বেশী হকদার। তাই তিনি সিদ্ধান্ত পাল্টে নিজেই ফাঁসিতে ঝুলে গেলেন। সুযোগ বুঝে চুপিসারে পালিয়ে গেলেন গুরু-শিষ্য।
:
দৃশ্যপট-[২]
:
সাধারণ মানুষের কোনো জ্ঞান নেই। তারা আগে উলামায়ে হক্বানীর পরামর্শ মেনে নিজেদের জীবন পরিচালনা করতো। যখন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতো তারা উলামায়ে দ্বীনের স্মরণাপন্ন হতো। এভাবেই সব ঠিকঠাক চলছিলো। একদিন কাবীলের পরামর্শ দাতা কাকের মতো সামনে এলো এক অদ্ভুত বাকসো। একজন ডাক্তার। শুরু হলো ফতোয়ার ফুলঝুড়ি। দ্বীনের দাঈ হতে কুরআন শুদ্ধ লাগে না। কারণ তুমি আহলে হাদীস। তারাবী ৮ রাকাত, সহি হাদীস। স্ত্রীর দুধ খাওয়া জায়েয, সহি হাদীস। কালিমায় মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ বলা যাবে না, সহি হাদীস। মাযহাব মানা যাবে না, সহি হাদীস। পীর বা আলেম উলামার দরবারে যাওয়া যাবে না, সহি হাদীস। মাদরাসায় যাকাত না দিয়ে পিস টিভিতে যাকাত দিতে হবে, সহি হাদীস। হিন্দুস্তানে বাস করে আমি হিন্দু, সহি হাদীস। বিতির নামায ১ রাকাত, সহি হাদীস। পর্দা মানা লাগবে না, সহি হাদীস। কোর্ট-টাই পড়া বৈধ, সহি হাদীস। জুমার খুতবা বাংলায় দিতে হবে, সহি হাদীস। এ সকল ফতোয়া শুনে সাধারণ মানুষ খেই হারিয়ে ফেললো। উত্তম মনে করে থাকতে লাগলো। ছেড়ে দিলো উলামায়ে কেরামের সংশ্রব। উলামায়ে কেরাম বুঝলেন, সহি হাদীসের আদলে এ এক ভন্ডামী। উলামায়ে কেরাম বোঝালেও সাধারণ মানুষ মানতে নারাজ। বিভ্রান্ত। এভাবে চলতে চলতে একদিন ঈমানটাকে চুরি করে ঠেলে দিলো জাহান্নামের পথে। সাধারণ মানুষকে প্রভুর পথে ফিরিয়ে আনতে আবার উলামায়ে কেরামই উদ্যোগী হলেন। চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন অবিরত। আল্লাহ সকলকে সহি সমঝ দান করুন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন