শুক্রবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৭

১৬ হিজরি সনে ওমর রা.


১৬ হিজরি সনে ওমর রা. -এর সিরিয়া সফরকালে অন্যান্য সামরিক অফিসারদের সাথে 'বিলাল হাবশি' রা.- ও ‘জাবিয়া’ নামক স্থানে খলিফাতুল মুসলিমীনকে স্বাগত জানান এবং ‘বাইতুল মুকাদ্দাস’ সফরে তিনি খলিফার সঙ্গী হন। সফরের এক পর্যায়ে একদিন খলিফা বিলালকে অনুরোধ করলেন আযান দেওয়ার জন্য। বিলাল বললেন, ‘যদিও আমি অঙ্গীকার করেছি, রাসূলুল্লাহ সা. - এর পর আর কারো জন্য আযান দিব না, তবে আজ আপনার ইচ্ছা পূরণ করবো।’ এ কথা বলে তিনি এমন হৃদয়গ্রাহী আওয়াযে আযান দিলেন যে, উপস্থিত জনতার মধ্যে অস্থিরতা দেখা দিল। হযরত ওমর রা. - এত কাঁদলেন যে, তাঁর বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। হযরত আবু উবাইদা ও হযরত মুয়ায বিন জাবাল রা.- ও কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছিলেন। সবারই মনে তখন নবী-যুগের ছবি ভেসে উঠছিল, অন্তরে তখন এক বিশেষ অনুভূতি জেগে উঠেছিল।
:
রাসূল সা. -এর মৃত্যুর পর বিলাল রা. - মদিনা ছেড়ে দীর্ঘদিন যাবত সিরিয়ায় বসবাস করতে থাকেন। একদিন স্বপ্নে দেখলেন, রাসূল সা.- বলছেন, ‘বিলাল, এমন নিরস জীবন আর কতকাল? আমার যিয়ারতের সময় কি তোমার এখনো হয়নি?’ এ স্বপ্ন তাঁর প্রেম ও ভালোবাসার ক্ষত আবার তাজা করে দিল। তখুনি তিনি মদীনার উদ্দেশে রওয়ানা হলেন এবং পবিত্র রওজা মুবারকে হাজির হয়ে জবাই করা মোরগের মত ছটফট করতে লাগলেন। 
:
রাসুলুল্লাহ সা. - এর কলিজার টুকরা হযরত হাসান ও হুসাইন রা. - কে জড়িয়ে ধরে আদর করতে থাকেন। তাঁরা দু’জন সে দিন সকালে ফজরের আযান দেওয়ার জন্য হযরত বিলাল রা.- অনুরোধ করেন। তাঁদের অনুরোধ তিনি প্রত্যাখ্যান করতে পারেননি। সুবহে সাদিকের সময় মসজিদে নববীর ছাদে দাঁড়িয়ে তিনি ‘আল্লাহু আকবার’ বলছিলেন, আর সে ধ্বনি মদীনার অলিতে গলিতে প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরছিল। তাঁর সে আযান ধ্বনি শুনে মদীনার জনগণ তাকবীর ধ্বনি দিয়ে আকাশ বাতাস মুখরিত করে তুলছিল।
:
তিনি যখন ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ’ বললেন, তখন মদীনার নারী-পুরুষ সকলেই অস্থিরভাবে কাঁদতে কাঁদতে ঘর থেকে বেরিয়ে মসজিদের দিকে দৌড়াতে শুরু করেন। বর্ণিত আছে, এমন ভাব-বিহ্বল দৃশ্য মদীনায় আর কখনো দেখা যায়নি।
:
:
সুত্র- আরবের জনপ্রিয় ফেইসবুক পেইজ (التاريخ الاسلامي -Islamic History) হতে অনূদিত


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন