রবিবার, ২৮ জুন, ২০১৫

রমাদান মাসে করনীয় আমলসমূহ।

তবে এই আমলগুলো পালনের জন্য কিছু শর্ত আছে। তা হলঃ
(১) ইখলাসঃ অর্থাৎ ‘‘একনিষ্ঠতার সাথে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্যে আমল করা। সুতরাং যে আমল হবে টাকা উপার্জনের জন্য, নেতৃত্ব অর্জনের জন্য ও সুনাম-খ্যাতি অর্জনের জন্যে সে আমলে ইখলাস থাকবে না অর্থাৎ এসব ইবাদাত বা নেক আমলের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হবে না বরং তা ছোট শির্কে রূপান্তরিত হতে পারে।
(২) ইবাদাতের ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণঃ সহীহ হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যে সকল ইবাদাতের কথা উল্লেখ আছে সেগুলো পরিপূর্ণ অনুসরণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো বাড়ানো বা কমানোর সুযোগ নেই। কারণ, ইবাদাত হচ্ছে তাই যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিখিয়ে দিয়েছেন।
কুরআনে এসেছে, ‘এবং রাসূল তোমাদের জন্য যা নিয়ে এসেছেন তা তোমরা গ্রহণ কর, আর যা থেকে সে তোমাদের নিষেধ করে তা থেকে বিরত হও’ [সূরা হাশর: ৭]
এ বিষয়ে রাসূল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে এমন ইবাদত করল যাতে আমাদের কোন নির্দেশনা নেই তা পরিত্যাজ্য হিসাবে গণ্য হবে’’। [সহীহ মুসলিম : ৪৫৯০]
যাইহোক, রমাদান মাসের করনীয় আমলগুলো একনজরে নিচে দেয়া হলঃ
(১) একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সিয়াম পালন করা বা রোযা রাখা।
(২) সেহেরী খাওয়া যা রাসুল (সাঃ) হুকুম, সুতরাং সেহেরী খেতে হবে।
(৩) সময় হওয়ার সাথে সাথে তাড়াতাড়ি ইফতার করা।
(৪) প্রতিদিন অন্তত একজন রোজাদারকে ইফতার করানোর চেষ্টা করা।
(৫) সময় মত নামায আদায় করা।
(৬) কিয়ামুল লাইল (তারাবীহ, তাহজ্জুদ, রাতের যে কোন নফল নামায) আদায় করা।
(৭) ফজরের নামাযের পর (বিভিন্ন তাসবিহ তাহলিল এর মাধ্যমে) সূর্যোদয় পর্যন্ত মাসজিদে অবস্থান করে দুই রাকাত নামায আদায় করা।
(৮) কুরআন তেলাওয়াত করা এবং এর মর্ম উপলব্ধি করা।
(৯) সহীহভাবে কোরআন শিকা করা এবং অপরকে কোরআন শিক্ষা দেওয়া।
(১০) বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করা এবং একজন অপরজনকে কুরআন তিলাওয়াত করে শুনানো।
(১১) কোরআনের অর্থ অনুধাবন এবং সে অনুযায়ী আমল করা।
(১২) কোরআন মুখস্থ বা হিফয করা।
(১৩) মিসওয়াক করা।
(১৪) কল্যাণকর কাজ বেশি বেশি করা।
(১৫) দাওয়াতে দ্বীনের কাজ করা।
(১৬) আল্লাহর রাস্তায় বেশী বেশী দান ও সদকা করা।
(১৭) উত্তম চরিত্র গঠনের অনুশীলন করা।
(১৮) সামর্থ্য থাকলে উমরা পালন করা।
(১৯) ইতেকাফ করা এবং রামাদানের শেষ দশদিনে লাইলাতুল ক্বদর অনুসন্ধান করা।
(২০) বেশী বেশী দোয়া করা।
(২১) বেশী বেশী আল্লাহর যিকর করা।
(২২) বেশী বেশী তাওবাহ ও ইস্তেগফার করা।
(২৩) যাদের উপর যাকাত ফরয তাদের যথাযথভাবে যাকাত দেওয়া।
(২৪) ফিতরাহ দেয়া।
(২৫) অপরকে খাদ্য খাওয়ানো।
(২৬) আত্মীয়তার সম্পর্ক উন্নীত করা।
(২৭) বেশী বেশী করে আল্লাহর কাছে জান্নাত চাওয়া এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি কামনা করা।
(২৮) বেশী বেশী করে শুকরিয়া আদায় করা।
(২৯) মিথ্যা বলা থেকে পরিপূর্ণ মুক্ত থাকা।
(৩০) সকল প্রকার নাটক, সিনেমা দেখা বর্জন করা।
আল্লাহ, আমাদের সকলকে রমাদানের প্রতিটি করনীয় এবং বর্জনীয় আমল পরিপূর্ণভাবে করার তৌফিক দান করুক। আমীন...।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন