বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৫

ছাত্রছাত্রীদেরর উপর সিনেমার প্রভাবঃ

ছাত্রছাত্রীদের বিরাট একটি অংশ সিনেমা দেখার ভয়ংকর রোগে আক্রান্ত। কিন্তু অল্পসংখ্যক অভিভাবকই এ ব্যাপারে খবর রাখেন। অথচ এতে সমাজের ভাবী কর্ণধার এ নবীনদের ভবিষ্যত জীবনের উপর সাংঘাতিক বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে। লেখাপড়া ও স্বাভাবিক কাজকর্মে ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা জড়িয়ে যাচ্ছে এদের জীবনধারার সাথে। যা সুন্দর ও উজ্জল জীবন গড়ার পথে এক দূর্ভেদ্য অন্তরায়। এ কথা পরীক্ষিত সত্য যে, যেসব ছেলেমেয়ে সিনেমা দেখতে অভ্যস্ত তারা ধীরে ধীরে পিতামাতার অবাধ্য হয়ে যায়। বরং অধিকাংশ সময় কঠিন ও রূঢ় ব্যবহার নিয়ে তাদের সম্মুখীন হয়। সিনেমার নেশা উদয় হওয়ার পর বাবা-মা'র নিকট টাকা চেয়ে ব্যর্থ হলে তারা বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা বাহানার আশ্রয় নিতে থাকে। যেমনঃ এই বলে টাকা দাবি করে যে, কলেজে অমুক কাজের জন্য এত টাকা চাঁদা ধার্য্য করা হয়েছে। অতঃপর এ টাকা নিয়ে কলেজ কামাই দিয়ে সিনেমার ক্লাশকেই জমজমাট করে তোলে! আবার কখনো বইপত্র হারিয়ে যাওয়ার বাহানা করে কিংবা বাবার পকেট কাটার পথ খুলে বসে! ভেবে দেখুন, শুধুমাত্র সিনেমার কারণেই একটি ছেলে জীবনের প্রথম অংশেই মিথ্যা বাহানা, কুটকৌশল, চুরি ইত্যাদির মত জঘন্য কাজে অভ্যস্ত হয়ে যায়।পরে অবশ্য এ অভিজ্ঞতা থেকেই অনেকে ছিনতাই, ডাকাতি পর্যস্ত পৌঁছে যায়। অথচ বাবা-মা'র অবহেলা কিংবা অসর্কতার কারণেই এহেন পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটে। কারণ এ মা-বাবাই প্রথম এদেরকে সিনেমা দেখতে নিয়ে গেছে কিংবা যাওয়ার পথে উপযুক্ত বাধা দেয়নি।
কলেজের ছাত্রছাত্রীরা সিনেমা দেখে দেখে সম্পূর্ণ ফিল্মী কায়দায় অবৈধ প্রেমপ্রীতির বাজার গরম করে তোলে। একদল হিরো'কে অনুসরণ করে অন্যদল হিরোইনকে। ঠিক সিনেমার মতই ভাবভঙ্গি করে কথা বলে বলে নিজেদের মাঝে প্রণয়ের জন্ম দেয়। একজন অন্যজনের প্রতি আকৃষ্ট হয়। মিষ্টি মিষ্টি কথার রেশ ধরে সম্পর্ক হয় ঘনিষ্ঠ থেকে ঘনিষ্ঠকর। নেমে আসে প্রেমের পাগলা তুফান। এদিকে লেখাপড়ার বেহাল অবস্হা। ভাল রেজাল্টের আশায় পড়ে গুড়ে বালি। পরীক্ষারর দিন ঘনিয়ে আসে। কিন্তু কোন পরোয়া নেই। বরং এতোদিনে প্রেমের অনেক স্তর অতিক্রম শেষে হাজির হয় আখেরি মনজিলে। যেখানে এসে সব শেষ। শেষ পর্যন্ত এদেরকে বিয়ে দেয়ার সময় অভিভাবকের ভোগ কররতে হয় অসহ্য কষ্ট। সিনেমা দেখার কারণে ছাত্রছাত্রীদের স্মৃতিশক্তিও লোপ পায়। কারণ অশ্লীল সিনেমা দেখে দেখে এদের মাঝে বিভিন্ন প্রকার বদস্বভাব জন্ম নেয়। ফলে শারীরিক শক্তি হ্রাস পাওয়ার সাথে সাথে মেধার তীক্ষ্ণতাও লোপ পেতে থাকে। জানিনা আত্মভোলা এ জাতির চক্ষু কবে খুলবে? কবে কাটবে এ উন্মাদনারর ঘোর?
মূলতঃ প্রত্যেকেরই উচিৎ জীবনের এ মূল্যবান সময়গুলো চিত্ত বিনোদনের নামে এ ধ্বংসাত্মক পথে ব্যয় না করেরে আল্লাহর সন্তুষ্টি তথা দ্বীনের প্রচার-প্রসার ও হিফাজতের ক্ষেত্রে ব্যয় করা।
---"কোন অনল গহবরে জীবন দিওনা বলিদান
যিনি দিয়েছেন প্রাণ হও তার লাগি কুরবান"---

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন