বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৫

পর্দা করতে গেলে মাঝে মাঝে খাটের নীচেও ঢোকা লাগে... !

লিখেছেন : বোন মারজানা ইসরাত
ঈদের দিন প্রতিবেশী এক ভাই এসেছিলেন বাসায়।আমাকে নাকি অনেক বছর ধরে দেখেন না তাই ডাকাডাকি করছিলেন।
আমি সামনে যাবনা এটা আম্মা এবং আপু উনাকে বুঝাচ্ছিলেন কিন্তু কে শুনে কার কথা!
আন্তাজি কিসের পর্দা করে বলে উনি নিষেধ সত্ত্বেও প্রতি ঘরে ঘরে উঁকি দিচ্ছিলেন।
বাধ্য হয়ে খাটের নীচে ঢোকা ছাড়া আমার আর কোন উপায় ছিলনা.......
আমি জানি সামনে না যাওয়াতে উনি অপমানবোধ করেছেন...
এমন অপমানবোধ আরো অনেকে করেন.....
আমার নিজের কাজিনরাই মাঝে মাঝে অভিমান করে....
আর কোনদিন বাসায় আসবেনা বলেও শাসায়....(তবে নিজের লোকেদের একটা ব্যাপার ভাল লাগে তা হল তারা সামনাসামনি কটু কথা বলে,টিজ করে কিন্তু আড়ালে অনেক প্রশংসা করে...)
কিন্তু তারপরও আমার কি করার আছে?
আমি যার দাসত্ব করি সেই মালিক যদি আমাকে অনুমতি না দেন গায়রে মাহরামের সামনে যেতে তবে আমার কি করার থাকতে পারে!
যার হাতে আমার জীবন-মরণ,যার কাছে আমাকে ফিরে যেতে হবে আমার সমস্ত কর্মফল নিয়ে তাঁর অবাধ্যতা করে কি নিজের ধ্বংস নিজেই ডেকে আনব?
নিজ ভাল তো পাগলেও বুঝে........আমি কেন বুঝবনা?
পর্দার গুরুত্ব যে বুঝেনা তাকে তা বুঝানো বেশ কঠিন।
গায়রে মাহরাম থেকে আড়ালে থাকা,বাইরে গেলে ফুল প্যাকেট হয়ে বের হওয়া,পূর্ণ পর্দার সাথে জীবন যাপন করা চাট্টিখানি কথা না........
এভাবে চলতে গেলে অনেক কষ্ট করতে হয়,নিজের ভাল লাগার অনেক কিছু থেকে দূরে থাকতে হয়,অনেক স্যাক্রিফাইস করতে হয়...
তবু অনেক টিজ শুনতে হয়...
আমার আম্মাকে প্রায়ই শুনতে হয়- আপনার মেয়ের বিয়ে ক্যামনে দিবেন! এই মেয়ের তো কিছুই দেখা যায়না....ভূতের মত চলাফেরা করে...
কেউ সরাসরি আমাকেই বলে- এই মেয়ে,জামাই পাব কই আমরা?
এই বয়সে এগুলা করতে কে বলেছে?
আমার সরল স্বীকারোক্তি- আমার আল্লাহ বলেছেন....
তখন কারো মুখে কথা থাকেনা....
কিছু প্রসঙ্গ এড়িয়ে যেতে হয়...চুপ থাকতে হয়...
কিন্তু মনের মাঝে একটা ব্যাপার ঘুরপাক খায়- এরা পর্দার সাথে বিয়ে কে কেন টেনে আনে?
পর্দা করার জন্য যদি বিয়ে না হয় তো না হোক....তাতে আফসোস নেই...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন