রবিবার, ২৬ জুলাই, ২০১৫

হায়রে মুসলমানের সত্যিকার ভালবাসা , ফুলের বিছানায় বাসর রাত আর জান্নাত "

হায়রে মুসলমানের সত্যিকার ভালবাসা , ফুলের বিছানায় বাসর রাত আর জান্নাত "
যদি শক্তি থাকতো এই পোষ্ট ব্লগের সকল ' নারী পুরুষদের " একবার পড়তে বাধ্য করতাম।"ঈমান তাজা এবং চোখে পানি আসবে 'ইনশাআল্লাহ '
হযরত সাদ সালামি আল্লাহর নবীর একজন সাহাবী ছিলেন | তিনি অত্যন্ত গরীব সাহাবী ছিলেন | গায়ের রং ছিল খুব্ই কালো এবং মুখের মধ্যে ছিল বসন্তের দাগ | একদিন সাদ (রা:) রাসূলে পাকের দরবারে বসে কাঁদতে ছিলেন | হুজুর ( সা: ) তাকে কান্না করার কারন জিজ্ঞেসকরলেন?জবাবে সাদ (রা:) বলতে শুরু করলেন,ইয়া রাসুলাল্লাহ আমি আপনার হাতে কালেমা পড়ে মুসলমান হয়েছি ৮ মাস হল | এই ৮ মাস আমি মদিনারঅলিতে গলিতে কত জায়গায় ঘুরলাম বিয়ের জন্য কিন্ত আমি দেখতে অসুন্দর বলে কেউ আমাকে মেয়ে দেয়না | আমি আপনার সকল সুন্নাত পালন করতে পারলেও আপনার একটি সুন্নাত বিয়ে যা
আমি পালন করতে পারিনি |
তাই আমি ভয়ে কান্না করছি যদি এই সুন্নাত না মানার জন্য আল্লাহ্ আমাকে জান্নাত হতে বঞ্চিত করেন | একটি সুন্নাত না মানার জন্য সাহাবীর পরকাল নিয়ে এত চিন্তা আর আজ আমরা নিজেদের কে সুন্নী আসেকে রাসুল বলে দাবি করি | রাসুল (স:) সাদকে বললেন এই মদিনার সবচেয়ে ধনী লোক আমর ইবনে ওহাবের মেয়ে মদিনার সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ের সাথে আমি রাসূল তোমার বিয়ে দিয়ে দিলাম | এখন তুমি আমর ইবনে ওহাবের বাড়িতে যাও এবং তাকে গিয়ে বল আমি তার মেয়ের সাথে তোমার বিয়ে দিয়ে দিয়েছি | সাদ (রা:) আমর ইবনে ওহাবের বাড়িতে গেলেন এবং আমর ইবনে ওহাবকে সব কিছু খুলে বললেন | সাদ (রা:) এর কথা শুনে আমর ইবনে ওহাব খুব রাগন্নিত হয়ে তার সাথে খারাপ আচরণ করে বাড়ি হতে বের করে দিলেন |
এদিকে আমর ইবনে ওহাবের মেয়ে ঘরের ভেতর থেকে সব শুনতে পেলেন | যখন আমর ইবনে ওহাব ঘরে ঢুকলেন তার মেয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলো বাবা তোমাকে এত বড় সাহস কে দিল যে রাসূলের কথা অমান্য করলেন ?
আল্লাহর রাসূল আমার জন্য যে ছেলেকে পছন্দ করেছেন আমিও তাকে স্বামী হিসেবে মেনে নিলাম |
মেয়ের কথা শুনে আমর ইবনে ওহাব দৌড়ে রাসূলের দরবারে গেলেন এবং রাসূলের কাছে মাফ চাইলেন | আমার দয়াল নবীজী তাকে মাফ করে দিলেন | আর
সাদ (রা:) এর বিয়ের জন্য ৬০০ দিরহাম মোহরানা ধার্য করলেন এবং বললেন এখন তুমি তোমার স্ত্রীর কাছে যাও | কিন্ত সাদ (রা:) এত গরীব ছিলেন তার পক্ষে
৬০০ দিরহাম জোগাড় করা সম্ভব ছিল না |
তাই অন্যান্য সাহাবীরা মিলে সাদ
(রা:) কে সাহায্য করলেন যাতে উনি
উনার স্ত্রীর মোহরানা আদায় করেও নতুন
বৌয়ের জন্য কিছু সদাই করতে পারেন |
ওদিকে সাদ (রা:) বাজারে চলে গেলেন
কেনাকাটা করার জন্য |
যখন নতুন বৌয়ের জন্য কেনাকাটা করতে
দোকানে ঢুকলেন হঠাৎ শুনতে পেলেন
মদিনার বাজারে কে যেন জিহাদের ডাক
দিচ্ছে !
জিহাদের ডাক শুনে সাদ (রা:)
ভাবলেন আমি সাদ ফুলের বিছানা বাসর
ঘরে নতুন স্ত্রীর কাছে যাবো না আমি
রাসূলের মহব্বতে জিহাদে যাবো |
তাইতিনি বিয়ের টাকা খরচ করে যুদ্ধের
সরঞ্জাম ক্রয় করে জিহাদে চলে গেলেন |
এদিকে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে | সাদ (রা:)
একের পর এক কাফিরকে হত্যা করে
জাহান্নামে পাঠাতে লাগলেন | যুদ্ধ
করতে করতে এরকম হঠাৎ সাদ (রা:)
শাহাদাতের পেয়ালায় শরবত পান করে
শহীদ হয়ে গেলেন | এদিকে যুদ্ধ শেষ হল |
দূর হতে দেখা যায় কার যেন লাশ পড়ে
আছে ? রাসুল (স:) ও সাহাবীরা কাছে
গিয়ে দেখলেন এ যে সাদের লাশ | মাথার
লোহার টুপি ভেঙ্গে মগজ বের হয়ে গেছে
আর জিহবা বের হয়ে আছে | সাদের
চেহারার দিকে তাকিয়ে রাসূল (স:)
কেঁদে দিলেন আবার পরক্ষণেই আকাশের
দিকে তাকিয়ে হাসলেন এবং আবার
আকাশ হতে মুখ ফিরিয়ে নিলেন | একজন
যুবক সাহাবী আবু লুবাবা রাসূলকে এর
কারণ জিজ্ঞেস করলেন।
রাসুল (স:) বললেন আমার সাদ ফুলের বিছানা বাসর
ঘরে যায়নি,আমার মহব্বতে শহীদ হয়ে গেল তাই স্নেহের কারণে আমার চোখ হতে পানি ঝড়ে পড়ল | আর আকাশেরের দিকে তাকিয়ে হাসলাম কারণ আল্লাহ
আমার সাদকে খুব সুন্দর একটা মাকাম দান
করেছেন আর চোখ ফিরিয়ে নেওয়ার কারণ
হল আমার সাদ শহীদ হয়েছে তাই
আকাশের সব দরজা খুলে গিয়েছে |
বেহেস্ত হতে অসংখ হুর দৌড়ে আসতেছে
যে কার আগে কে সাদকে কোলে নিবে ?
দৌড় দেওয়ার কারণে হুরদের সামনের
পর্দা সরে যাচ্ছিলো যা দেখে আমি
রাসূল লজ্জায় চোখ ফিরিয়ে নিলাম |

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন