লেখালেখির নিয়ম-কানুন : কাব্যচর্চার অনুমোদন ও তার সীমা
হাকীমুল উম্মত হযরত আশরফ আলী থানবী (রহ.)
এক ভদ্র লোক নিবেদন করলেন, কাব্যচর্চা কি না-জায়েয? তিনি বলেন, না-জায়েয তো নয়, তবে অনেক কবির অধিকাংশ বিষয় শরীয়ত-বিরোধী হয়ে থাকে। এ-কারণে তাদের জন্য অবশ্যই না-জায়েয। অনুরূপভাবে যদি এতে আত্মলিপ্ততা অতিরিক্তভাবে বেড়ে যায় তাকে নিষেধ করতে হবে। এক কবি ছিলেন যদি নামাযেও কোনো কবিতা স্মরণে আসত তবে তিনি নামায ছেড়ে সেটি লিখে নিতেন। বলা হলো, এই কী? বললেন, নামায তো কাজা হয়, কিন্তু কবিতার তো কাজা নেই। অধিকাংশ মূর্খ কবিদের কাছে কাব্যচর্চার ক্ষেত্রে কোনো সীমাই নেই। জনৈক উগ্রবাদীর কবিতা:
پئے تسکین خاطر صورت پیراہن یوست
محمد کو جو بھیجا حق نے سایہ رکھ لیا قد کا
অর্থাৎ ইয়াকুব (আ.) যেমন ইউসুফ (আ.)-এর পোশাক-পরিচ্ছদ রেখেছিলেন, অনুরূপভাবে নাউযূ বিল্লাহ মহান আল্লাহ হুযুর (সা.)-এর ছায়া নিয়ে নিয়েছেন। এতে ইয়াকুব (আ.)-এর সাথে মহান আল্লাহর তুলনা দেওয়া হলো নাউযূবিল্লাহ। এখন এ-বিষয়টিকে কতটুকু বৈধ বলা যায়?
বাকি ছায়া না-হওয়ার কারণ হচ্ছে, অধিকাংশ সময় হুযুর (সা.)-এর পবিত্র মাথার ওপর মেঘমালা ছায়া হয়ে থাকত। অতএব ছায়া কীভাবে হবে? কোনো কোনো সময় ছায়া থাকতও না। যেহেতু হাদীস শরীফে এসেছে, এক সাহাবী কর্তৃক নবীজির ওপর কাপড় দ্বারা ছায়া করার কথা প্রমাণিত আছে। এ থেকে বোঝা যায়, মেঘমালার ছায়াও সবসময় থাকত না।
সূত্র: মালফূযাতে হাকীমুল উম্মত, খ. ৩, পৃ. ৯১
ভাষান্তর: মু. সগির আহমদ চৌধুরী
মাসিক আত-তাওহীদ, মার্চ ২০১৫
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন