বুধবার, ২৯ জুলাই, ২০১৫

আত্মার খোরাক (৩)

হযরত মূসা আ.-এর একজন উম্মত। সে ছিলো অত্যন্ত দরিদ্র ও নিঃস্ব। একবার হযরত মূসা আ.-এর সাথে তার সাক্ষাত হয়। সে হযরত মুসা আ.-এর নিকট আবেদন করলো, হে আল্লাহর রাসূল ! আপনিতো কালীমুল্লাহ ! আপনি তূর পাহাড়ে আল্লাহর সাথে কথা বলেন। সুতরাং আপনি আমার পক্ষ থেকে আল্লাহর কাছে এ ফরিয়াদটুকু পেশ করবেন, যেনো তিনি আমার ভবিষ্যত জীবনের সবটুকু জীবিকা এক সাথে আমাকে দান করেন। যাতে করে কয়েকদিন হলেও আমি তৃপ্তির সাথে জীবন যাপন করতে পারি। একটু আরামে পানাহার করতে পারি।
:
হযরত মূসা আ. আল্লাহর দরবারে তার ফরিয়াদ পেশ করলেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কবুল করে নিলেন তার ফরিয়াদকে এবং তাকে কিছু বকরী, কিছু গম ইত্যাদি তার ভাগ্যে যা ছিলো তা প্রদান করলেন।
:
এক বছর পর। হযরত মূসা আ. তার খোঁজ নেয়ার জন্য তার বাড়িতে গেলেন। তার বাড়ি পৌঁছে হযরত মূসা আ. যারপর নাই বিস্মিত হলেন। তিনি অবাক দৃষ্টিতে লক্ষ্য করলেন, সে আলিশান এক প্রাসাদ নির্মাণ করেছে। বন্ধুদের আপ্যায়নের জন্য আয়োজন করেছে এক আড়ম্বরপূর্ণ ভোজসভার। দস্তরখানে প্রস্তুত রয়েছে বাহারী রঙ্গের ফল-মূল ও নানা স্বাদের ভোজ্য সামগ্রী। সকলেই পানাহার শেষে ফুর্তিতে মত্ত।
হযরত মূসা আ. হতবাক হয়ে গেলেন।
:
কিছুদিন পর হযরত মূসা আ. আবার যখন তূর পাহাড়ে গেলেন, তখন তিনি আরয করলেন, হে আমার মালিক ! আপনি ঐ লোককে তার সারা জীবনের রিজিক একত্রে দান করেছেন। কিন্তু তাতো ছিলো সামান্য পরিমাণ। অথচ সে এখন বিপুল সম্পদের অধিকারী। কী করে এমন হলো?
:
আল্লাহ জবাবে বললেন, হে মূসা ! আমি যে পরিমাণ রিজিক তাকে দিয়েছি সে পরিমাণই ছিলো তার রিজিক। সে যদি শুধু নিজের জন্যই খরচ করতো তাহলে তার রিজিক আমার প্রদত্ত পরিমাণই থাকতো। কিন্তু সে তার প্রাপ্ত রিজিক দ্বারা আমার সাথে লাভবান ব্যাবসা করেছে।
:
হযরত মূসা আ.আশ্চার্য হয়ে বললেন, হে আল্লাহ ! সে কীরূপ ব্যাবসা করেছে?
আল্লাহ জবাবে বললেন, সে এই সামান্য রিজিক পাবার পর অতিথি আপ্যায়ন শুরু করে এবং আমার রাস্তায় খরচ করতে শুরু করে। আর আমার রীতি হলো , যে ব্যক্তি আমার রাস্তায় খরচ করে তাকে আমি কমপক্ষে দশগুন বেশী দান করে থাকি। সুতরাং এভাবে সে আমার সাথে অধিক মুনাফা ব্যাঞ্জক ব্যাবসা করে অনেক সম্পদের মালিক হয়েছে।
:
বন্ধুরা ! রমজান প্রায় বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে। সত্তর থেকে সাতশ গুন মুনাফা অর্জনের সুবর্ণ ও মোক্ষম সময় এ পবিত্র রমজান। ক্ষমা ও নৈকট্যের চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে যাওয়ার মাহেন্দ্র ক্ষণও এ রমজান। আগামি বছর এ সুযোগ হয়তো নাও পেতে পারি। নাও আসতে পারে আমার জীবনে এমন সুবর্ণ লগ্ন।
:
তাই আসুন না ! আল্লাহর সাথে মুনাফা, ক্ষমা, নৈকট্য ওজান্নাতের সওদাটা করে ফেলি। তিনি দিতে প্রস্তুত। আপনি নিতে প্রস্তুত তো?
:
আল্লাহ আমাদের সবাইকে তৌফিক দান করুন। আমীন।।


চলবে.............................. 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন