বুধবার, ২৪ জুন, ২০১৫

কিছু বানী

 জ্ঞানচর্চা যেন ভুল নিয়াতের কারণে ঈমান ধ্বংসের কারণ না হয়


ইলম ও জ্ঞানচর্চার দ্বারা যদি তোমার উদ্দেশ্য হয়ে থাকে আত্মগৌরব ও বড়াই-অহংকার করা, সমকালীন লোকদের উপর প্রাধান্য বিস্তার করা, আপন প্রভাব ও প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠা করা, বিশ্ববাসীর নিকট প্রিয়পাত্র অথবা ভক্তিভাজন হওয়া, পার্থিব গৌরব অর্জন করা এবং রকমারী ধন-সম্পদ কুক্ষিগত করা, তাহলে জেনে রাখো– এই জ্ঞান অর্জনের দ্বারা তুমি তোমার দ্বীন ও ঈমান ধ্বংস করছ, স্বীয় মূল্যবান জীবন বিনষ্ট করছ। নশ্বর এই পৃথিবীর বিনিময়ে আখিরাতের অনন্ত জীবনকে বিক্রয় করে দিচ্ছ। নিঃসন্দেহে এটা অত্যন্ত গর্হিত ও ক্ষতিকর কাজ। এই ব্যবসায় তোমার বৃহৎ লোকসান ছাড়া লাভের কিছু অবশিষ্ট থাকছে না।”
 ইমাম আল-গাজ্জালী (রাহিমাহুল্লাহ)
[বিদায়াতুল হিদায়াহ : ইমাম আল-গাজ্জালী , প্রকাশক: দারুল কিতাব, পৃ-১১]​


   দ্বীনি ইলমই হচ্ছে একমাত্র বিদ্যা যা অন্তরে খোদাভীতি সৃষ্টি করব


“দ্বীনি ইলমই হচ্ছে একমাত্র বিদ্যা যা তোমার অন্তরে খোদাভীতি সৃষ্টি করবে, নিজের দোষ-ত্রুটি উপলব্ধি করার জ্ঞান বাড়াবে, সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তার পরিচয় করিয়ে দিবে। দুনিয়ার মোহান্ধতা হ্রাস করে আখিরাতের প্রতি শওক ও আগ্রহ বৃদ্ধি করবে, পাপকার্যের কুফল সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করবে। ফলে, পাপাচার থেকে বেঁচে থাকার মন-মানসিকতা গড়ে উঠবে, শয়তানের ধোঁকা ও প্রতারণা সম্পর্কে সতর্ক করবে।”
 ইমাম আবু হামিদ আল গাজ্জালী (রাহিমাহুল্লাহ)
[বিদায়াতুল হিদায়াহ : ইমাম আল-গাজ্জালী , প্রকাশক: দারুল কিতাব, পৃ-৪৬


         আপনারই জ্ঞানের দিকে এগিয়ে যাওয়া উচিত

‘ইলম (জ্ঞান) আপনার কাছে এগিয়ে আসার কথা নয়, বরং আপনারই ‘ইলমের (জ্ঞানের) দিকে এগিয়ে যাওয়া উচিত।”
 ইমাম মালিক ইবনে আনাস
[আদাব শারি’ইয়্যাহ, ২/১৪৪]



আল্লাহ আদমের শ্রেষ্ঠত্বের প্রকাশ করেছিলেন জ্ঞানের মাধ্যমে


“আল্লাহ আদমের শ্রেষ্ঠত্বের প্রকাশ করেছিলেন ‘ইলমের (জ্ঞানের) মাধ্যমে। বান্দা যেসব মহৎ গুণাবলী ধারণ করতে পারে সেগুলোর মধ্যে ‘ইলম অন্যতম।”
— শাইখ আবদুর-রহমান আস-সাদী
[তাইসির-উল-কারিম, পৃ ৪৯]


ইলম তাদের জন্যই উপলভ্য রয়েছে যারা এটাকে খুঁজে পেতে চায়

জ্ঞান (‘ইলম) হলো তীরবিহীন এক সমুদ্র যা গোটা উম্মাহর মাঝে বন্টন করে দেয়া হয়েছে। ‘ইলম তাদের জন্যই উপলভ্য রয়েছে যারা এটাকে খুঁজে পেতে চায়।”
— ইমাম আয-যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ)
[সিয়ার আ’লাম আন-নুবালা, ৬৮/১২]


খারাপ স্মৃতিশক্তি থেকে উত্তরণের সমাধান

বর্ণিত আছে, আল-শাফা’ই (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন:
“আমি (আমার শাইখ) ওয়াকীকে আমার খারাপ স্মৃতিশক্তির ব্যাপারে অভিযোগ করেছিলাম এবং তিনি শিখিয়েছিলেন আমি যেন পাপকাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখি।
তিনি বলেন, আল্লাহর জ্ঞান হলো একটি আলো এবং আল্লাহর আলো কোন পাপচারীকে দান করা হয় না।”
[শাইখ মুহাম্মাদ সালিহ আল মুনাজ্জিদ, ইসলামকিউএ/৩৩২৮]


স্মৃতিকে শক্তিশালী করতে পারে তা হলো পাপ করা ছেড়ে দেয়া

আল-খাতীব তার​ আল-জামী(২/৩৮৭) গ্রন্থে ​বর্ণনা করেন যে ইয়াহইয়া বিন ইয়াহইয়া বলেন:
“এক ব্যক্তি মালিক ইবনে আনাসকে প্রশ্ন করেছিলেন, “হে আবদ-আল্লাহ, আমার স্মৃতিশক্তিকে শক্তিশালী করে দিতে পারে এমন কোন কিছু কি আছে? তিনি বলেন, যদি কোন কিছু স্মৃতিকে শক্তিশালী করতে পারে তা হলো পাপ করা ছেড়ে দেয়া।” ​
[শাইখ মুহাম্মাদ সালিহ আল মুনাজ্জিদ, ইসলামকিউএ/৩৩২৮]


প্রাসাদের চেয়ে বই অনেক বেশি উত্তম

আমার কাছে রাজা-বাদশাহদের প্রাসাদের চেয়ে বই অনেক বেশি উত্তম।”
— শাইখ হামাদ আল-আনসারি
[আল-মাজমু, ১/৩৯৫]


হাসিঠাট্টা আর খেলার সাথে জ্ঞানকে মিশ্রিত করো না

জ্ঞান অর্জন করো। যখন তুমি জ্ঞানার্জন করবে, তখন তা দৃঢ়ভাবে ধরে রাখ এবং তাকে পালাতে দিয়ো না। হাসিঠাট্টা আর খেলার সাথে জ্ঞানকে মিশ্রিত করো না; নইলে তোমার হৃদয় তার ভেতর থেকে তোমার অর্জিত জ্ঞানকে উগড়ে ফেলে দেবে।”
— সুফিয়ান আস-সাওরি (রাহিমাহুল্লাহ)
[বায়োগ্রাফি অফ সুফিয়ান আস-সাওরি, পৃ ১৫২]



জ্ঞানার্জনের ধাপসমূহ

“জ্ঞানের প্রথম ধাপ হলো শোনা, এরপর নিশ্চুপ থাকা এবং মনোযোগী হওয়া। এরপরের ধাপগুলো হলো সেটিকে সংরক্ষণ করা, কাজে পরিণত করা এবং তারপরের ধাপ হলো সেটিকে প্রচার করা।”
— সুফিয়ান ইবনে উইয়াইনাহ
[হিলইয়াহ আউলিয়া, ৩/২৮৩]


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন