মঙ্গলবার, ৯ জুন, ২০১৫

এক দেশে এক লোক ছিল।

এক দেশে এক লোক ছিল। সে প্রতিদিন কাঁধে ঝোলানো একটা বাঁশের দু’মাথায় দুটো কলসিতে করে তার গ্রামে পানি নিয়ে আসতো।
কলসি দুটোর একটা ছিল খুব পুরনো, গায়ের কয়েক জায়গায় ফুটো। এই কলসির অর্ধেক পানিই বাড়ি আনতে আনতে রাস্তায় পড়ে যেত।
যে কলসিটা ভাল ছিল, সে নিজের কাজ ঠিকঠাক মত করতে পেরে তো দারুণ খুশি! কিন্তু অন্য কলসিটার সবসময় লজ্জায় মুখ ভার হয়ে থাকতো।
একদিন লোকটা যখন পানি আনতে যাবে, বুড়ো কলসি তখন লজ্জার মাথা খেয়ে বলে উঠলো,
“আমাকে দিয়ে তো তোমার কোন কাজই হয় না। এত কষ্ট করে যে পানিটা নিয়ে আসো, তার অর্ধেকটাই তো পড়ে যেয়ে নষ্ট হয়। বাকিটা কাজে লাগে কেবল।”
লোকটা হেসে বললো, “আজ বাড়ি ফেরার পথে, রাস্তার দিকে একটু খেয়াল কোরো।”
আসার সময় পুরনো ভাঙা কলসিটা অনেক ফুল আর গাছপালা দেখতে পেলো পথে।
লোকটা তাকে বললো, “দেখেছো তোমার দিকের রাস্তাটা কত সুন্দর?
এমনটা কী করে হয়েছে জানো?
বলছি শোনো।
তোমাদের নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তোমার অর্ধেকটা পানি পড়ে যাতে নষ্ট না হয়, এজন্য আমি পথের ধারে গাছের চারা লাগিয়েছি। তোমার হারানো পানিটা ওদের খুব কাজে লাগে, আর আমারো! আমি আমার বাচ্চাদের ভালো ভালো শাকসবজি খাওয়াতে পারি, গোলাপ দিয়ে ঘর সাজাতে পারি;
তোমার কারণেই তো!
পরিশেষ: আমরা ভাবি বুড়ো হলে আমাদের কাজের ক্ষমতা কমে যায়, কিন্তু তা কেন হবে?
আমরা আগের গুণগুলো হারিয়ে নতুন কিছু যোগ্যতা অর্জন করি কেবল। সেগুলো ঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলেই বুড়িয়ে যাওয়াটা সার্থক।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন