বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৫

সালাত সাহায্য, দৃঢ়তা, ইহকাল ও পরকালের সফলতার অন্যতম মাধ্যম :

সালাত সাহায্য, দৃঢ়তা, ইহকাল ও পরকালের সফলতার অন্যতম মাধ্যম :
আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ. الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ ﴿المؤمنون:১-২﴾
“মুমিনগণ সফলকাম হয়েছে, যারা নিজদের সালাতে বিনয়ী”।
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন :
قَدْ أَفْلَحَ مَنْ تَزَكَّى. وَذَكَرَ اسْمَ رَبِّهِ فَصَلَّى ﴿الأعلى:১৪-১৫﴾
“নিশ্চয় সে সাফল্য লাভ করবে যে পবিত্রতা অবলম্বন করে এবং তার পালনকর্তার নাম স্মরণ করে অতঃপর সালাত আদায় করে”।
সালাতকে কল্যাণ নামকরণ করা হয়েছে। তার প্রতি আহ্বানকে করা হয়েছে কল্যাণের প্রতি আহ্বান। যেমন- حي على الصلاةএসো সালাতের দিকে। حي على الفلاح এসো কল্যাণের দিকে। ফালাহ বলা হয়, উদ্দেশ্যে জয়লাভ করা, কল্যাণ স্থায়ী হওয়া।
সালাতের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার কাছে সাহায্য চাওয়া হয়। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন :
اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ ﴿البقرة:১৫৩﴾
“তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও” ।
আল্লাহ তা‘আলা আরো ইরশাদ করেন :
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا إِذَا لَقِيتُمْ فِئَةً فَاثْبُتُوا وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ ﴿الأنفال:৪৫﴾
“হে ঈমানদারগণ, তোমরা যখন কোন দলের সাথে সংঘাতে মিলিত হও, তখন সুদৃঢ় থাক এবং আল্লাহকে স্মরণ কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার”।
সম্ভবত যুদ্ধের ময়দানে সশস্ত্র অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও সালাতুল খাওফের বিধান দেওয়া হয়েছে যাতে সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য লাভ করা যায়।
সা‘দ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা এ উম্মতের সাহায্য করবেন দুর্বলদের দ্বারা। তাদের দাওয়াত, তাদের সালাত ও তাদের ইখলাসের দ্বারা।
আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
إِنِّي مَعَكُمْ لَئِنْ أَقَمْتُمُ الصَّلَاةَ وَآَتَيْتُمُ الزَّكَاةَ ﴿المائدة:১২﴾
“আমি তোমাদের সঙ্গে আছি যদি তোমরা সালাত কায়েম কর ও যাকাত আদায় কর” ।
এ আয়াতের ব্যাখ্যা হল, আমি তোমাদের সঙ্গে আছি সাহায্য সহায়তার জন্য যদি তোমরা সালাত কায়েম কর ও যাকাত আদায় কর। আল্লাহ যার সাথে থাকবেন, তার দায়িত্ব নিবেন। আল্লাহর সাথে যে শত্র“তা করবে, আল্লাহ তাকে সম্মানিত করবেন না। যে তার সাথে বন্ধুত্ব করবে তাকে লাঞ্ছিত করবেন না। বরং লাঞ্ছনা তার সাথেই থাকবে। যে তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে এবং তাঁর অবাধ্য হবে, আমি তাদেরকে বিজয় দান করলে তারা লোকদের মাঝে সালাত কায়েম করবে আল্লাহর আয়াতই এ কথার সাক্ষ্য দেয়। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
الَّذِينَ إِنْ مَكَّنَّاهُمْ فِي الْأَرْضِ أَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآَتَوُا الزَّكَاةَ وَأَمَرُوا بِالْمَعْرُوفِ وَنَهَوْا عَنِ الْمُنْكَرِ وَلِلَّهِ عَاقِبَةُ الْأُمُورِ ﴿الحج:৪১﴾
“তারা এমন লোক যাদেরকে আমি শক্তি সামর্থ্য দান করলে তারা সালাত কায়েম করবে, যাকাত দেবে এব সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ করবে। প্রত্যেক কর্মের পরিণাম আল্লাহর এখতিয়ারভুক্ত”।
ইমাম খাত্তাবী র. বলেন, এ আয়াত প্রমাণ করে যে, জামাআতে হাজির হওয়া ওয়াজিব। যদি মুস্তাহাব হত তাহলে দুর্বল ও ক্ষতিগ্রস্তদের জামাআত ত্যাগ করার সবচে’ বেশি অবকাশ থাকত। ইবনে উম্মে মাকতুমের অবস্থাও এরকমই ছিল। কিছু লোকের মত হল জুমু‘আ ও দুই ঈদ ব্যতীত পাঁচ ওয়াক্ত সালতের জামাআত সুন্নতে মুয়াক্কাদা। জুমু‘আ ও দুই ঈদের জামাআত শর্ত। এটা ওয়াজিবের কাছাকাছি। এমনকি যদি শহরবাসীরা তা তরক করে, তাহলে তাদেরকে হত্যা করা হবে। আর যখন একজন তরক করবে তাকে প্রহার ও বন্দি করা হবে। কারো তরক করার অনুমতি নেই। তবে অধিক অন্ধকার ও প্রচণ্ড ঠাণ্ডা বা বৃষ্টির ওজরের ভিত্তিতে তা তরক করার অনুমতি রয়েছে। এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, এরূপ কঠোর বাণী একমাত্র ওয়াজিব তরক করার ক্ষেত্রেই হতে পারে।
আতা ইবনে আবী রাবাহ বলেন, শহরে ও গ্রামে কোন মানুষের জন্য আযান শুনে সালাত ত্যাগ করার অনুমতি নেই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন