শুক্রবার, ৩ জুলাই, ২০১৫

আব্দুল কাদির খান নামক এক মুসলিম

১৯৩১ সালের ১৩ই জুলাইয়ের কাশ্মীরের একটি ঘটনা যাকে কাশ্মীরের অধিবাসীরা মু’তা যুদ্ধের সাথে তুলনা করে। হিন্দু রাজার অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিল আব্দুল কাদির খান নামক এক মুসলিম। সে জুমার খুতবা দিয়েছিল রাজার বিরুদ্ধে। বক্তব্য দেয়া অবস্থায় তাকে জেলে ভরা হল। তার সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে অনেক মুসলিমই জেলে গিয়েছিল। একদিন জোহরের সময় জেলের ভেতর মিটিং শেষ করে তার এক সাথী যখন আযান দিচ্ছিল, তৎক্ষণাৎ তাকে গুলি করে হত্যা করা হল। সাথে সাথেই অন্য আরেকজন দাড়িয়ে আযানের বাকি অংশ পড়ছিল এবং তাকেও খুন করা হল। এভাবে যেই দাড়াচ্ছিল আযান দেয়ার জন্য তাকে শহীদ করা হচ্ছিল এবং একটানা ২২ জনকে খুন করা হয়েছিল কিন্তু তারা আযান শেষ করেই ছেড়েছিল। এতো ভয়াবহ অত্যাচার আর হত্যার পরও কাশ্মীর এখনো মাথা উঁচু করে ভারতের সামনে দাঁড়িয়ে আছে সুবহানাল্লাহ।
আব্বাসি খেলাফতের পতনের পর থেকে চেচনিয়ান মুসলিমরা রাশিয়ার "যার রাজতন্রের" দ্বারা ভয়ঙ্কর অত্যাচারের মুখোমুখি হয়ে আসছিল। কিন্তু শেইখ মানসুর, মাওলায় মোহাম্মাদ এবং ইমাম শামেল এর মতো বিখ্যাত মুজাহিদিন দের কাছে তারা পরাস্থ হয়েছিল। কমিউনিস্ট রাশিয়ার আবির্ভাবের পর এই জুলুমের মাত্রা আর বেড়ে গেল। কিন্তু পুরো ককেশাস অঞ্চলের সবচেয়ে প্রবল প্রতিরোধ জ্বিহাদ হিসেবে আবির্ভূত হল চেচেনদেরটা। লেনিন স্বীকার করেছিল প্রথম বিশ্ব যুদ্ধে রাশিয়ার ভরাডুবির পেছনের মূল কারন ছিল শত বছরের ওপর চলে আসা চেচনিয়ার জ্বিহাদ যার কারনে রাশিয়া অবসাদে ভুগছিল। স্টালিন ২য় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে সাইবেরিয়া এবং কাজাকিস্তানে সমগ্র চেচেন দের নির্বাসনে পাঠিয়েছিল এবং তার অর্ধেক (প্রায় ১ মিলিয়নের ওপর) চেচেন মুসলিম সেখানেই প্রান হারায়। এতো অত্যচারের পরও দিনের পর দিন চেচেনদের ঈমান আর শক্ত হচ্ছিল। তারা পৃথিবীর মাটি থেকে হারিয়ে যায় নি। তাই লিও টলস্টয় তার “হাজ মুরাদ” নামক একটি নাটকে চেচেনদের সাহসিকতার ভূয়সী প্রশংসা করেছিল।
মুসলিম বিশ্বের যে কয়টি ভূমি কুফফার দখল করে রেখেছে তার ভেতর ফিলিস্তিনের নাম বেশী চলে আসে আল-আকসার কারনে হয়তো। কিন্তু পাশাপাশি কাশ্মীর এবং চেচনিয়ার মুসলিমদের সংগ্রামের ইতিহাস যদি পড়ি, তাহলে বুঝবো মুসলিমদের এই প্রতিরোধের ইতিহাস শুধু ওপরের কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা না। সাম্রাজ্যবাদী কুফফার উম্মাতে মুহাম্মাদির এই ত্যাগকে ভাল মতই উপলব্ধি করতে পারে এবং বোঝে এর পেছনে রয়েছে “দৃঢ়মূল কনসেপ্ট”। সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে মানব জাতির ইতিহাসে একমাত্র অপ্রতিরোধ্য ও অপরাজিত শক্তি হল এই উম্মাহ। প্রচুর সভ্যতা এবং জাতিকে তারা বিনাশ করতে পেরেছে একমাত্র ইসলামের ক্ষেত্রে এখনো তারা হতাশ।
একটি কারনে ওপরের ঘটনাগুলো বললাম। আমাদের অনেকেই মনে করেন এসব শুধু আবেগের গল্প। এসবকে শুধু ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে দেখাটা বিশাল ভুল। আবেগ কখনই দীর্ঘস্থায়ী হয় না যদি না তার পেছনে থাকে ইস্পাত সমান কনসেপ্ট। কনসেপ্ট মানুষকে চালায়, আবেগ না।
তৈরী হও বাংলার যুবক আমরা আসছি,today or tomorrow.
[তথ্যসূত্রঃ "POLITICAL ISSUES (Muslim Occupied Lands) by Hizb ut Tahrir, Lebanon" বই]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন