ভারতের উত্তর প্রদেশের রাজধানী লাখনৌ তখন ভীষন ব্যস্ত নগরী। লাখনৌ শহরের কেন্দ্রে নদওয়াতুল উলুম মাদ্রাসা। এ মাদ্রাসাকেই কেন্দ্র করে ব্যাস্ত থাকতে হয় রাজ্যের পুলিশ কর্মকর্তাদের। লাখনৌর পুলিশ ও সরকারী অফিসাররা হরদম খোঁজখবর রাখছেন। মাদ্রাসায় কে আসছে, কে যাচ্ছে এসব নিয়ে তাদের প্রতিদিন মিটিং করতে হয়। তাদের প্রকোটল দিতে হয়।
আজ এলেন খাদ্যমন্ত্রী তো কাল এলেন লোকসভার ভাইস চেয়ারপার্সন। হেলিকপ্টার নিয়ে আসছেন কেন্দ্রীয় মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশের ১২টা বেজে যায় যখন খবর আসে স্বয়ং ইন্দীরা গান্ধী আসছে নাদওয়া মাদ্রাসায়। এ মাদ্রাসায় ঘুরে গেছেন রাজীব গান্ধীও। তাদের নিরাপত্তা নিয়ে ঘুম নেই রাজ্য পুলিশের।
কার সাথে তাদের এতো প্রয়োজন? কিসের জন্য তাদের এতো আয়োজন?
তিনি একজন সাধারন মানুষ। আম জনতার কাছে তিনি একজন শায়খ। আরব সহ সারা বিশ্বের মুসলমানদের নিকট তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধুমকেতুর মত উদিত হয়ে তিনি জ্ঞান ও মেধা দিয়ে সবাইকে মোহিত করে রেখেছেন। তার সামান্য অসুখের খবর শোনে ছুটে আসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী। তার সাক্ষাতের জন্য ছুটে আসেন আরবের বড় বড় কবি সাহিত্যিক আর পন্ডিতেরা।
মাত্র ৩০ বছর বয়সে তিনি একটি বই লিখেন। পৃথিবীর সর্বাধিক বিক্রিত গ্রন্থের তালিকায় সে সময় তার বইটি স্থান করে নেয়। বইটিতে তিনি মুসলিম বিশ্বের পালাবদলের অনেক লুকিয়ে থাকা সত্যের আবরন খুলে দেন।
পশ্চিমা বুদ্ধিজীবীরা এ বইটি নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলো। বৃটেনের হাউস অব কমন্সে দাঁড়িয়ে ভাষন দিচ্ছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তার হাতেও এ বই। ইসলামের এমন বিশ্লেষণ পড়ে তিনি শংকিত ও হতবাকও। বইটি এক হাতে উচিয়ে ভাষন দিচ্ছেন 'যুক্তরাজ্য লেখকদের স্বাধীনতায় পূর্ণবিশ্বাসী। আমাদের বৃটেনে কোন বই নিষিদ্ধ করার আইনগত সুবিধা নেই। যদি তা থাকতো আমি এ বইটি নিষিদ্ধ করার সুপারিশ এ মহান হাউসে তুলে ধরতাম।'
ইলম ও ইখলাসের মহিমায় এ যুগেও যে স্বর্ণালী অতীত ও গৌরব ফিরিয়ে আনা যায়, তিনি তার সবচেয়ে সাম্প্রতিক সত্য উদাহরণ। যাকে ঘিরে ভারত ও বিশ্বময় এত সমাদর তার নাম 'সাইয়্যেদ আবুল হাসান আলী নদভী'।
হযরত নদভীর জীবন থেকে এ সামান্য কয়েকটি ঝলক তুলে ধরে তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগ্রহ সবার মনে তৈরি হোক, এটাই ছিল উদ্দেশ্য।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন