বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

বাবরি মসজিদ এবং মুসলিম হত্যা

হিন্দুস্থানের চুড়ান্ত লড়াই's photo.

                                                         -----------------------------------
এর চেয়ে দুঃখ জনক আর কি হতে পারে যে ১৯৯২ সালের দিকে প্রাগৌতাহাসিক একটা উপন্যাসের কথারউপর ভিত্তি করে একটা দেশের বিপুল জনগোষ্ঠী একটা প্রাচীন মসজিদ কে ভেঙ্গে ফেলল।
তারপর হাজার হাজার মানুষ কে হত্যা করল আর শত শতমানবীকে ধর্ষন করল। উগ্রবাদী হিন্দু দল বিজেপি কর্তৃক যখন ১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয় তখন এই দেশের আলেম সমাজরাস্তায় নেমে সংখ্যালঘু হিন্দুদের রক্ষা করতে উদ্যোগী ভুমিকা পালন করে।
ফলশ্রুতিতে বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার পরও বাংলাদেশে একটা হিন্দু ছেলেও কোন মুসলমান কর্তৃক নিহত হয় নি আর কোন হিন্দু নারীও কোন মুসলমান ছেলে কর্তৃক ধর্ষিত হওয়া তো দূরের কথা।
কিন্তু ঠিক সেই সময়ে ভারতের ব্রাক্ষন পুরাহিতরা সাধারন হিন্দুদের কে ভারতের মুসলিম নিধনে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছিল।
পরিসংখ্যান বলে যে ভারত স্বাধীন হবার পর কাশ্মিরের মুসলিম নারী সহ পুরা ভারতে প্রায় ৩ লাখ মুসলিম নারী ভারতের হিন্দু ধর্ষিত হয়েছে, তথাকথিত হিন্দু মুসলিম দাঙ্গার ফলে প্রায় ৫ লাখ মুসলমান যুবক হিন্দু কর্তৃক নিহত হয়েছে।
যদিও মিডিয়ায় এগুলিকে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা বলে অভিহিত করা হয় কিন্তু আসলে এইসব দাঙ্গায় কখনোই কোন মুসলমান কর্তৃক কোন হিন্দু মারা গেছে তা শুনা যায় নি,আর কোন হিন্দু মেয়ে মুসলিম কর্তৃক ধর্ষন হওয়া তো দূরের কথা।
তাইলে আপনারাই বলেন এগুলিকে কি আপনি দাঙ্গা বলবেন নাকি খুব ঠান্ডা মাথায় রাষ্ট্র যন্ত্রের সাহায্যে একটা সংখ্যা গরিষ্ঠ জাতি একটা সংখ্যালঘু জাতিকে আসতে আসতে নিঃশেষ করে দিচ্ছে সেটা বলবেন।
ভারতের হিন্দুরা ১০ টা রাম মন্দির করুক এতে আমাদের কোন আপত্তি নাই। কিন্তু উনারা আমাদের বাবরী মসজিদ ভেঙ্গে কেন তাদের রাম মন্দির বানাবে ?
এই বিশাল ভারতে কি জমির এতই অভাব পরল যে আমাদের মুসলমানদের মসজিদ ভেঙ্গে ভারতের হিন্দুরা তাদের রাম মন্দির বানাবে ?
হিন্দুরা যদি সত্যিই মানুষের বাচ্চা হত তাইলে তারা ঠিকই বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার পর মুসলিম বিশ্বের কাছে ক্ষমা চেয়ে আমাদের বাবরি মসজিদ আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিত। কিন্তু আজ পর্যন্ত এখনো আমরা আমাদের বাবরী মসজিদ ফিরে পাই নি।
বাবরী মসজিদের মেহরাবে হিন্দুরা তাদের রামের মূর্তি স্থাপন করে সেই খানে রাম লক্ষনের পূজা করে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনী যতগুলি হিন্দুদের মন্দির ভেঙ্গে ছিল দেশ স্বাধীন হবার হিন্দুরা তাদের প্রত্যেকটা মন্দির কেই ফেরত পেয়েছিল।
আমরা মুসলমানরা হিন্দুদের একটা মন্দিরের জমিও দখল করি নাই।ভারতের এই মুসলিম নিধন আজ থেকে নয়। ব্রিটিশরা ভারত ত্যাগ করার পর পরই যখনই হিন্দুরা ভারতের শাসন ক্ষমতা পেয়েছে তখন থেকেই এই মুসলিম নিধন শুরু করেছে।
সবচেয়ে কষ্ট লাগে যখন দেখি ভারতের ব্রাক্ষন পুরাহিতরাই এই মুসলিম নিধনে সাধারন হিন্দুদের কে উৎসাহদেয়।
বাংলাদেশের কোন মসজিদের ইমাম কে আপনারা কখনই কি দেখেছেন যেহিন্দুদের হত্যা করতে আমাদের মুসলমানদের কে উৎসাহ দিতে ?
কিন্তু ভারতের মন্দিরের পুরাহিতরা সব সময় সাধারন হিন্দুদের কে মুসলিম নিধনে উৎসাহ দেয়।
বাংলাদেশে যে ইসলামী দল গুলি কাজ করে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ঐক্যজোট, চরমোনাইর পীরের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস,খেলাফত আন্দোলন, হিযবুত তাহরীর এই সকল ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দরা কখনই তাদের কোন বক্তৃতা বা লেখনির মাধ্যমে কখনই হিন্দুদের প্রতিকোন বিদ্বেষ ছড়ায়নি।
আর ভারতের হিন্দু ধর্মবাদী দল বিজেপি শিবসেনা বজরঙ্গী দলগুলির রুটিন মাফিক কাজ হল মুসলিম নিধনে সাধারন হিন্দুদের কে উৎসাহ দিয়ে যাওয়া। ভারতের বিজেপি, শিবসেনা, বজরঙ্গী এইসব দল গুলি সব উচ্চ বর্ণের ব্রাক্ষণ দ্বারা পরিচালিত বিজেপি, শিবসেনা, বজরঙ্গী কর্তৃকই সবসময় সাধারন হিন্দুদের কে এই মুসলিম নিধনে উৎসাহ দেয়া হয়।
এই তো কিছুদিন আগেই ভারতের উত্তর প্রদেশের মুজাফফরনগর, লিসার, লঙ্ক, বাহাওয়াদি, হাসনাপুর, মুহম্মদপুর, ভগোপাতসহ এবং শামিলী ও পাতিপাতজেলায় তথাকথিত হিন্দু মুসলিম দাঙ্গার নামে গণহারে মুসলিম মেয়েদের কে ধর্ষন করা হয়েছে এবং মুসলিম পুরুষদের কে কচুকাটার মতহত্যা করা হয়েছে আর উত্তর প্রদেশের মূখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব সবকিছু দেখেও না দেখার ভান করেছেন।
২০০২ সালে গুজরাটে গুজরাটের মূখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং মোদীর প্রত্যক্ষ ইন্ধনে গুজরাটের হিন্দুরা আমাদের মুসলিম মেয়েদের কে ধর্ষন করে তারপর আগুনে পুড়িয়ে ফেলে।
ভারতের এই উগ্রবাদী হিন্দু দল বিজেপী কর্তৃক মুসলিম নিধন এতই ভয়ংকর হয়েছিল যে পশ্চিমা বিশ্বের মিডিয়া গুলিতেও তা ব্যাপক প্রচার করা হয়। ভারতে অবস্থিত আমেরিকান দূতাবাস এখনো গুজরাটের মূখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং মোদী কে তাদেরকালো তালিকা ভুক্ত করে রেখেছে।
গোটা ভারত যখন এই উত্তর প্রদেশের মুজাফফর নগরের দাঙ্গা নিয়ে অস্থির ঠিক সেইসময় জানা গেলযে ভারতের হায়দারবাদে সাদীয়া মুবীন নামে পলিটেকনিক কলেজের তৃতীয়বর্ষের এক মুসলিম ছাত্রী সত্য প্রকাশ নামক এক কুলাঙ্গার হিন্দু কর্তৃক অপহৃত হয়ে একটানা ১৭ মাস ধর্ষিত হয়।
ইনশা আল্লাহ কিসাস হত্যার বদলে হত্যা।
লাইক এবং শেয়ার, কপি করে আপনার বন্দুদের মাঝে ছরিয়ে দিন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন