বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৫

মুক্তাদীর জন্য ইমামের পেছনে ফাতেহা পড়া কি ওয়াজিব?

মুক্তাদীগণ ক্বেরাত পড়বে কি, পড়বেনা; 'সিররী' (যে নামাযে আস্তে ক্বেরাত পড়া হয়) ও 'জাহরী' (যে নামাযে স্বশব্দে ক্বেরাত পড়া হয়) নামাযের বিধান কি এক, নাকি ভিন্ন—এসব ব্যাপারে মুজতাহিদীনে কেরামের মাঝে মতপার্থক্য বিরাজমান।
~
ইমামে আ'জম, ইমাম আবু ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মদ (রহ)-এর নিকট সর্বাবস্থায় (নামায 'সিররী' হোক বা 'জাহরী' , মুক্তাদী ইমামের ক্বেরাত শুনতে পাক বা নাই পাক) মুক্তাদীর সূরা ফাতিহা পড়া নাজায়েজ, বরং মাকরূহে তাহরিমী।
হেদায়া গ্রন্থকার ইমাম মুহাম্মদ (রহ)-এর যে উক্তি উল্লেখ করেছেন অর্থাৎ 'সিররী' নামাযে সূরা ফাতেহা পড়া উত্তম— সেটি আল্লামা ইমাম ইবনে হুমাম (রহ) এ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন যে, এটি ইমাম মুহাম্মদ (রহ)-এরই লেখিত 'কিতাবুল আছার' এবং 'মুয়াত্তা' এর বক্তব্যের পরিপন্থী। 'দুররে - মুখতার' কিতাবের ভাষ্য :
ﻭﺍﻟﻤﺆﺗﻢ ﻻ ﻳﻘﺮﺃ ﻣﻄﻠﻘﺎ ﻭ ﻻ ﺍﻟﻔﺎﺗﺤﺔ ﻓﻲ ﺍﻟﺴﺮﻳﺔ ﺍﺗﻔﺎﻗﺎ، ﻭ ﻣﺎ ﻧﺴﺐ ﻟﻤﺤﻤﺪ ﺿﻌﻴﻒ. ﻛﻤﺎ ﺑﺴﻄﻪ ﺍﻟﻜﻤﺎﻝ، ﻓﺎﻥ ﻗﺮﺃ ﻛﺮﻩ ﺗﺤﺮﻳﻤﺎ، ﻭ ﺗﺼﺢ ﻓﻲ ﺍﻻﺻﺢ. ﺍﻟﺪﺭ ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭ
অর্থাৎ মুক্তাদী একেবারেই ক্বেরাত পড়বেনা। 'সিররী' নামাযেও সর্বসম্মতিক্রমে ক্বেরাত পড়বেনা। আর ইমাম মুহাম্মদ (রহ)-এর দিকে যে উক্তির সম্বন্ধ করা হয় (অর্থাৎ 'সিররী' নামাযে সূরা ফাতেহা পড়া উত্তম) সেটি দ্বয়িফ, যা আল্লামা ইমাম ইবনে হুমাম (রহ) বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। সুতরাং মুক্তাদী যদি ক্বেরাত পড়ে তবে তা মাকরূহে তাহরিমী হবে। অবশ্য বিশুদ্ধ মতানুসারে এতে তার নামায হয়ে যাবে।"
ইমাম মুহাম্মদ (রহ)-এরই লেখিত 'কিতাবুল আছার' কিতাবে লেখা আছে,
ﻻ ﻧﺮﻱ ﺍﻟﻘﺮﺍﺀﺓ ﺧﻠﻒ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﻓﻲ ﺷﻴﺊ ﻣﻦ ﺍﻟﺼﻼﻭﺍﺕ ﻳﺠﻬﺮ ﻓﻴﻬﺎ ﺍﻭ ﻳﺴﺮ .
অর্থাৎ আস্তে কিংবা জোরে ক্বেরাতের নামাযান্তে আমরা মুক্তাদীর ক্বেরাত পড়ার কোনো সুযোগই দেখিনা।"
এবার পবিত্র কুরআনের আয়াতগুলোর আলোকে উপরিউক্ত মাসয়ালার চূড়ান্ত সমাধান নিন!
~
প্রথমত, ইমামের পেছনে মুক্তাদীর জন্য কোরআন শরীফ তিলাওয়াত করা নিষেধ হওয়ার প্রমাণাদির দিকে দৃষ্টি দেয়া হল। যেমন —
ﻭَ ﺍِﺫَﺍ ﻗُﺮِﻯﺀَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺍَﻥُ ﻓَﺎﺳْﺘَﻤِﻌُﻮْﺍ ﻟَﻪُ ﻭَ ﺍَﻧْﺼِﺘُﻮْﺍ ﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢْ ﺗُﺮْﺣَﻤُﻮْﻥ
অর্থাৎ আর যখন কোরআন শরীফ পড়া হয় তখন তা কান লাগিয়ে শোনো আর চুপ থাকো। যাতে তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করা হয়।"
জ্ঞাতব্য যে, ইসলামের প্রাথমিক যুগে নামাযের মধ্যে কথা বলাও বৈধ ছিল। আর মুক্বতাদীও কোরআন পড়তো। এরপর নিচের আয়াত নাযিল হলে কথা বার্তা বলার প্রচলন নিষিদ্ধ হয়ে যায়।
যেমন, ﻭَ ﻗُﻮْﻣُﻮْﺍ ﻟِﻠّﻪِ ﻗَﺎﻧِﺘِﻴْﻦَ অর্থ ‘ তোমরা দাঁড়িয়ে যাও আল্লাহ তা’য়ালার অনুগত হয়ে’।
ইমাম মুসলিম ‘বাবু তাহরীমিল কালাম ফিস সালাত’ এবং ইমাম বোখারী ‘বাবু মা-য়ুনহা মিনাল কালাম ফিস সালাত’ শীর্ষক অধ্যায় হযরত যায়েদ বিন আরকাম (রাদ্বি) হতে বর্ণনা করেন-
"আমরা নামাযের মধ্যে কথা- বার্তা বলতাম, এক ব্যক্তি তার পাশে দাঁড়ানো তার বন্ধুর সাথে কথা বলছিলো। এমন সময় ‘কূমূ লিল্লাহি ক্বানিতীন’ আয়াতটি নাযিল হল। এরপর আমাদেরকে চুপ থাকার নির্দেশ দেয়া হলো এবং কথা বলতে নিষেধ করা হলো। তারপর নামাযে কথা-বার্তা বলা নিষিদ্ধ হলো। কিন্তু মুক্তাদী কোরআন তিলাওয়াত করতো।"
যখন নিম্নোক্ত আয়াতখানা নাযিল হলো তখন মুক্তাদীর জন্য তিলাওয়াতও নিষিদ্ধ হয়ে গেলো। আয়াতটি এই যে,
ﻭَ ﺍِﺫَﺍ ﻗُﺮِﻯَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺍﻥُ ﻓَﺎﺳْﺘَﻤِﻌُﻮْﺍ ﻟَﻪُ ﻭَﺍَﻧْﺼِﺘُﻮْ …… ﺍﻟﺦ
অর্থাৎ যখন কুরআন পড়া হবে তখন মনোযোগ দিয়ে শোনো আর চুপ থাকো।"
‘তাফসীরে মাদারিক’ কিতাবে উক্ত আয়াতের তাফসীরে বলা হয়েছেঃ
ﻭَ ﺟَﻤْﻬُﻮْﺭُ ﺍﻟﺼَّﺤَﺎﺑَﺔِ ﻋَﻠﻰ ﺃَﻧَّﻪُ ﻓِﻰ ﺍﺳْﺘِﻤَﺎﻉِ ﺍﻟْﻤُﺆﺗَﻢِّ
“অধিকাংশ সাহাবায়ে কেরামের অভিমত হলো এ আয়াতটি মুক্তাদীর জন্য ইমামের ক্বিরাআত শোনার ব্যাপারেই”।
"তাফসীরে খাযিন" কিতাবে উক্ত আয়াতের তাফসীরে নিম্নোক্ত রেওয়ায়েত দেখা যেতে পারে। যেমন,
ﻭَ ﻋَﻦْ ﺍِﺑْﻦِ ﻣَﺴْﻌُﻮْﺩٍ ﺍِﻧَّﻪُ ﺳَﻤِﻊَ ﻧَﺎﺳًﺎ ﻳَّﻘْﺮَ ﺃُﻭْﻥَ ﻣَﻊَ ﺍﻟْﺎِﻣَﺎﻡِ ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺍِﻧْﺼَﺮَﻑَ ﻗَﺎﻝَ ﺍَﻣَﺎ ﺍَﻥْ ﻟَﻜُﻢْ ﺃَﻥْ ﺗَﻔْﻘَﻬُﻮْﺍ ﻭَ ﺍِﺫَﺍ ﻗُﺮِﺉَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺍﻥُ ……….. ﺍﻟﺦ
অর্থ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাদ্বি.) কিছু লোককে ইমামের সাথে সাথে কিরাআত পড়তে শুনলেন। নামায শেষ হলে তিনি বললেন এখনও কি তোমাদের উক্ত আয়াতের মমার্থ বুঝার সময় আসেনি?
‘তানভীরু মিকয়াস মিন তাফসীরি ইবনে আব্বাস’ কিতাবে উক্ত আয়াতের তাফসীরে লেখা আছে যে,
ﻭَ ﺍِﺫَﺍ ﻗُﺮِﺉَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺍﻥُ ﻓِﻰ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓِ ﺍﻟْﻤَﻜْﺘُﻮْﺑَﺔِ ﻓَﺎﺳْﺘَﻤِﻌُﻮْﺍ ﻟَﻪُ ﺍِﻟَﻰ ﻗِﺮَﺍﺀَﺗِﻪ ﻭَﺍَﻧْﺼِﺘُﻮْﺍ ﺑِﻘِﺮَﺍﺀَﺗِﻪ
অর্থ যখন ফরয নামাযে কোরআন তিলাওয়াত করা হয় তখন তা তোমরা কান লাগিয়ে শোনো। আর কোরআন পাঠ করার সময় চুপ থাকো।"
আমাদের উপরোক্ত অনুসন্ধানী আলোচনা থেকে জানা গেল, ইসলামের প্রাথমিক যুগে মুক্তাদীগণ ইমামের পেছনে কিরাআত পড়তো। কিন্তু উক্ত আয়াত নাযিলের পর ইমামের পেছনে কিরাআতের বিধান রহিত হয়ে গেল।"
~
দ্বিতীয়ত, এবার নিচের হাদীসগুলোর দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করুন!
১-
সহিহ মুসলিম শরীফ কিতাবে ‘বাবু সুজূদিত তিলাওয়াহ’ শীর্ষক অধ্যায় হযরত আতা ইবনে ইয়াসার থেকে বর্ণিত আছে যে,
ﻭَﺭَﻭَﻯ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ ﻓِﻲ ﺻَﺤِﻴﺤِﻪِ ﻋَﻦْ ﻋَﻄَﺎﺀِ ﺑْﻦِ ﻳَﺴَﺎﺭٍ ﺃَﻧَّﻪُ ﺳَﺄَﻝَ ﺯَﻳْﺪَ ﺑْﻦَ ﺛَﺎﺑِﺖٍ ﻋَﻦْ ﺍﻟْﻘِﺮَﺍﺀَﺓِ ﻣَﻊَ ﺍﻟْﺈِﻣَﺎﻡِ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻟَﺎ ﻗِﺮَﺍﺀَﺓَ ﻣَﻊَ ﺍﻟْﺈِﻣَﺎﻡِ ﻓِﻲ ﺷَﻲْﺀٍ
অর্থ হযরত যায়েদ বিন ছাবিত (রা)-এর নিকট ইমামের সাথে কিরাআতের হুকুম সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন। তিনি প্রত্যুত্তরে বললেন, ইমামের সাথে কিছুতেই কিরাআত পড়া জায়েয নেই।
২-
সহিহ মুসলিম শরীফ ‘বাবুত তাশাহহুদ’ এ হাদিস এসেছে যে,
ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَﻪُ ﺃَﺑُﻮْﺑَﻜَﺮٍ ﻓَﺤَﺪِﻳْﺚُ ﺃَﺑِﻰْ ﻫُﺮَﻳْﺮَ ﺓَ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻫُﻮْ ﺻَﺤِﻴْﺢٌ ﻳَﻌْﻨِﻰْ ﻭَ ﺍِﺫَﺍ ﻗُﺮِﺉَ ﻓَﺎﻧْﺼِﺘُﻮْﺍ
অর্থ "হযরত আবূ বকর (রা) তিনি সুলায়মানকে প্রশ্ন করলেন, হযরত আবূ হোরায়রা (রাদ্বি.)-এর বর্ণনাটি কেমন? তিনি বললেন, সহিহ। অর্থাৎ যখন ইমাম ক্বিরাআত পড়বে তখন তোমরা চুপ থাকবে—বর্ণনাটি সহিহ।"
৩- সহিহ মুসলিম শরীফে হযরত আবু মূসা আশ'আরী (রা) হতে আরো সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত আছে যে,
ﻓِﻲ ﺻَﺤِﻴﺢِ ﻣُﺴْﻠِﻢٍ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺍﻟْﺄَﺷْﻌَﺮِﻱِّ ﻗَﺎﻝَ : " ﺇﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺧَﻄَﺒَﻨَﺎ ﻓَﺒَﻴَّﻦَ ﻟَﻨَﺎ ﺳُﻨَّﺘَﻨَﺎ ﻭَﻋَﻠَّﻤَﻨَﺎ ﺻَﻠَﺎﺗَﻨَﺎ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺃَﻗِﻴﻤُﻮﺍ ﺻُﻔُﻮﻓَﻜُﻢْ ﺛُﻢَّ ﻟِﻴَﺆُﻣّﻜُﻢْ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻛَﺒَّﺮَ ﻓَﻜَﺒِّﺮُﻭﺍ ﻭَﺇِﺫَﺍ ﻗَﺮَﺃَ ﻓَﺄَﻧْﺼِﺘُﻮﺍ "
অর্থাৎ নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের উদ্দেশ্যে খুতবা দিলেন। অতপর আমাদের জন্য সুন্নাহ'র আলোচনা করলেন এবং সালাত শিক্ষা দিলেন। অতপর বললেন, তোমাদের কাতার সোজা করো ও তোমাদের একজনকে ইমাম বানাও। এরপর সে যখন তাকবীর বলবে, তখন তোমরাও তাকবীর বলবে। আর যখন সে কুরআন পড়বে তখন তোমরা চুপ থাকবে।”
৪-
তিরমিযী শরীফে হযরত জাবির (রাদ্বি.) হতে বর্ণিত আছে,
ﻣَﻦْ ﺻَﻠَّﻰ ﺭَﻛْﻌَﺔً ﻟَﻢْ ﻳَﻘْﺮَﺃ ﻓِﻴْﻬَﺎ ﺑِﺄُﻡِّ ﺍﻟْﻘُﺮْﺍﻥِ ﻓَﻠَﻢْ ﻳُﺼَﻞِّ ﺍِﻟَّﺎ ﺃَﻥْ ﻳَّﻜُﻮْﻥَ ﻭَﺭَﺍﺀِ ﺍﻟْﺎِﻣَﺎﻡِ ﻫﺬَﺍ ﺣَﺪِﻳْﺚً ﺣَﺴَﻦٌ ﺻَﺤِﻴْﺢٌ
অর্থাৎ যে ব্যক্তি ইমামের পেছনে ছাড়া (একাকী) নামায পড়লো কিন্তু তাতে সূরা ফাতেহা পড়লো না, পক্ষান্তরে সে নামাযই পড়লো না। হাদীসটি হাসান ও সহীহ।"
৫-
‘নাসাঈ শরীফ' কিতাবে হযরত আবূ হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত :
ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮْﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍِﻧَّﻤَﺎ ﺟُﻌِﻞَ ﺍﻟْﺎِﻣَﺎﻡُ ﻟِﻴُﺆْﺗَﻢَّ ﻟَﻪُ ﻓَﺎِﺫَﺍ ﻛَﺒَّﺮَ ﻓَﻜَﺒِّﺮُﻭْﺍ ﻭَﺍِﺫَﺍ ﻗَﺮَﺃ ﻓَﺎﻧْﺼِﺘُﻮْﺍ
অর্থ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই ইমাম বানানো হয়েছে তার অনুসরণের জন্যই। যখন তিনি তাকবীর বলবেন, তখন তোমরাও তাকবীর বলো। আর যখন তিনি কুরআন পড়বেন তখন তোমরা চুপ থাকো।”
উল্লেখ্য, আমরা ২নং হাদীসে মুসলিম শরীফের উদ্ধৃতি দিয়ে আগেই বলেছি যে, হযরত আবূ হোরায়রা (রাদ্বি.) থেকে বর্ণিত হাদীসটি সহীহ।
হাদিসের ভাষ্য : "হযরত আবূ বকর (রা) তিনি সুলায়মানকে প্রশ্ন করলেন, আবূ হোরায়রা (রাদ্বি.)-এর বর্ণনাটি কেমন? তিনি বললেন, সহীহ অর্থাৎ যখন ইমাম ক্বিরাআত পড়বে তখন তোমরা চুপ থাকবে" ।
৬-
বিখ্যাত হাদিসের কিতাব "তাহাবী শরীফ" -এ হযরত জাবির (রাদ্বি.) হতে বর্ণিত আছে যে,
ﺍَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻪُ ﺍِﻣَﺎﻡٌ ﻓَﻘِﺮَﺍﺀَﺓَ ﺍﻟْﺎِﻣَﺎﻡِ ﻟَﻪُ ﻗِﺮَﺍﺀَﺓً
অর্থাৎ নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যার ইমাম আছে, ইমামের তিলাওয়াতই তার তিলাওয়াত”।
৭-
ইমাম মুহাম্মদ (রহ.) মুয়াত্তা শরীফে ইমাম আবূ হানীফা থেকে, তিনি মূসা ইবনে আবি আয়িশা থেকে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনে শাদ্দাদ থেকে, তিনি জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাদ্বি.) থেকে বর্ণনা করেন:
ﺍَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻪَ ﺍِﻣَﺎﻡٌ ﻓَﻘِﺮَﺍﺀَﺓُ ﺍﻟْﺎِﻣَﺎﻡِ ﻟَﻪُ ﻗِﺮَﺃﺀَﺓ ﻗَﺎﻝَ ﻣُﺤَﻤَّﺪَﺑْﻦِ ﻣَﻨِﻴْﻊٍ ﻭَﺍِﺑْﻦُ ﺍﻟْﻬُﻤَﺎﻡِ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﺎِﺳْﻨَﺎﺩُ ﺻَﺤِﻴْﺢٌ ﻋَﻠﻰ ﺷَﺮْﻁِ ﺍﻟﺸّﻴْﺨَﻴْﻦِ
অর্থাৎ নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেছেন, যার ইমাম আছে তার ক্ষেত্রে ইমামের ক্বিরাআতই তার ক্বিরাআত। মুহাম্মদ ইবনে মানী এবং ইমাম ইবনুল হুমাম (আলাইহিমার রাহমাহ) উনারা বলেন, এ হাদীসের সনদ শায়খাঈন তথা ইমাম বুখারী এবং মুসলিমের শর্তাধীন মতে বিশুদ্ধ”।
যাইহোক, দলিল হিসেবে সহিহ, হাসান ইত্যাকার আরো অনেক হাদিস দেয়া যাবে। তবে যাদের অন্তরে সীমাহীন বক্রতা রয়েছে তাদের জন্য পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লিখে সমুদ্র করে পেললেও কোনো লাভ নেই।
আল্লাহ তা'য়ালা আমাদের সহিহ কথা বুঝেশুঝে আমল করার তাওফিক দিন। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন