বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৫

সিনেমার জন্য অর্থ ব্যয় করা অপব্যয় এবং হারামঃ

মানুষ অর্থ উপার্জনের জন্য দিনরাত হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে। দিনমজুর মাত্র ক'টি টাকার জন্য সারাদিন কাঠফাটা রোদ আর মুষলধারে বৃষ্টিতে মাঠে ময়দানেে খেটে যায়। শ্রমিকররা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অক্লান্তভাবে মেশিনের চাকা ঘুরিয়ে যায়। এভাবে সকল শ্রেণীর পেশাদার ব্যক্তিকেই শুধু বেঁচে থাকার জন্য তা করতে হয়। অথচ ঘুনাক্ষরেও আমরা চিন্তা করে দেখি না যে এতো কষ্টসাধ্য উপার্জনেের পয়সা দিয়ে সিনেমা দেখে দেখে কত বড় গুনাহের কাজে তা ব্যয় করছি। শরীয়তের হুকুম হলো হালাল পথে উপার্জনের সাথে সাথে তা হালাল পথেই ব্যয় করতে হবে।
তাছাড়া পুঁজিপতিরা অতি কৌশলে শ্রমিকদেরকে দেয়া টাকা এর মাধ্যমে আবার নিজের পকেটে ফিরিয়ে নিচ্ছে। কারণ বেশিরভাগ সিনেমাভক্ত তারাই হয় যারা খেটে খায়। যাদেরকে চতুর্থ শ্রেণীর নাগরিক বলা হয়। দিনের উপার্জিত টাকা দিয়ে ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য সঞ্চয় না করে বিনোদনের নামে সিনেমাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে তা খরচ করে ঘরে ফিরে যাচ্ছে সকালের মত নিঃস্ব হয়েই। অন্যদিকে পুঁজিপতিরা মেহনতি মানুষদেরকে আকর্ষণ করার মতো এমন অনেক ফাঁদ পেতে রেখেছে যেখানে মানুষ মন্ত্রমুগ্ধের মতো টাকা জমা দিয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন। এভাবেই ধনীরা সরীসৃপের রক্ত চোষার ন্যায় শোষন করে নিচ্ছে নিরিহ মানুষকে। আর নিরিহরা আত্মভোলা মাতালের মত তালে তালে নেচে যাচ্ছে। আর বিনোদনের নামে নিজের জীবন এবং সমাজকে ঠেলে দিচ্ছে অবক্ষয়ের রসাতলে।
ইসলামী আইনশাস্ত্রে পারদর্শী ফকীহগনের মতে সিনেমার জন্য যে অর্থ ব্যয় করা হয় তা অপব্যয়ের শামিল এবং হারাম।
সারকথা হলো, সিনেমা দেখার ক্ষতিকর দিকগুলো বর্ণনা করে শেষ করার মত নয়। মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই এর কুপ্রভাব বিরাজমান। সিনেমার পরিচয় এভাবেও দেয়া যায় যে, এটা হলো সকল প্রকার অপরাধ ও ক্রাইম শিক্ষার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এখান থেকে সমাজে সব ধরনের অপরাধের প্রোডাকশন দেয়া হয়। ফলে একটা করে অপরাধ জন্মানোর সাথে সাথে একটা কররে ভাল কাজ তথা দ্বীনি অামল বিলুপ্ত হতে থাকে। সমাজটাকে আমরা একটা দেহের সাথে তুলনা করতে পারি। দেহের একটা অঙ্গ যেমন একই সাথে সুস্থ ও অসুস্থ থাকতে পারে নাা অর্থাৎ অসুস্থতা আসলেই সুস্থতা চলে যায় তেমনি সমাজের বিভিন্ন অঙ্গনেও যখন অন্যায়-অপরাধ জন্ম নেয় তখন সে অঙ্গনে ন্যায়-অন্যায়ও একত্রে অবস্থান করে নাা। সুতরাং অন্যায় যত জন্ম নেবে ন্যায়ের ততো অপমৃত্যু ঘটবে। আর যেহেতু অন্যায়েের একটা বিিরাট ফ্যাক্টরি হলো সিনেমা সেহেতু সমাজদেহ থেকে এ দূরারোগ্য ব্যাধির অপসারণ করতে হলে প্রথমে সিনেমা নামের কারখানা থেকে অপরাধ উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় অপসংস্কৃতিরর এ বাঁধভাঙ্গা জোয়ার আমাদেরকে কোথায় ভাসিয়ে নিয়ে যাবে তা বলা মুশকিল।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন