সে আদম সন্তানেরই একজন। মুমিনদের পরীক্ষার জন্য আল্লাহ্ পাক তাকে অলৌকিক কিছু বৈশিষ্ট্য দেবেন। তার দৈহিক ও চরিত্রগত গুণাবলি বর্ণনা করে নবী করীম (সা:) স্বীয় উম্মতকে তার থেকে বেঁচে থাকার আদেশ করেছেন।
●দাজ্জাল সম্পর্কে আমাদের বলতে হবে, কারন?জ্ঞানই উত্তরণের একমত পথ। ফেতনাগ্রাস করে ফেলবে- এই ভয়ে হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান (রা:) সবসময় নবীজীর কাছে অনিষ্টকর ফেতনার ব্যাপারে জিজ্ঞাস করতেন।দাজ্জালের ফেতনাটি নিঃসন্দেহে পৃথিবীর ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ফেতনা। সকল নবী রাসূল স্ব স্ব উম্মতকে তার ব্যাপারে সতর্ক করতেন। শেষ নবী মুহাম্মদ মুস্তফা (সা:) তার ব্যাপারে বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে উম্মতকে বারংবার সতর্ক করে গেছেন।সুতরাং দাজ্জালের বৈশিষ্ট্য, ফেতনা ও বাঁচার উপায় জানা থাকলেই আল্লাহ্ পাক আপনাকে আমাকে সকলকে তার অনিষ্টতা থেকে রক্ষা করবেন ইনশাআল্লাহ্।
●“মাছীহুদ দাজ্জাল” নামকরণ:
আরবী মাছী (مسيح) শব্দের অর্থ হল – বিকৃত করে দেয়া হয়েছে, মোছে দেয়া হয়েছে এমন। তার বাম চক্ষুটি বিকৃত ও মোছিত হবে। কানা, সবকিছু একচোখে দেখবে।অনেকে বলেছেন যে, সঠিক শব্দটি আসলে “মিছছীহ” বা “মিছছীখ”।আরবীতেمسحশব্দটির আরেকটি অর্থ হচ্ছে- ঘুরেফিরা করা, ভ্রমণকরা। এ হিসেবে অনেকেই বলেছেন যে,দাজ্জাল যেহেতু সারাবিশ্ব ভ্রমণ করবে, তাই তাকে মাছীহ (অতি ভ্রমণকারী) বলা হয়ে থাকে।কেউ কেউ বলেছেন যে, তার চেহারার এক পার্শ্ব ভ্রু ও চক্ষু-বিহীন হবে।অপরদিকে দাজ্জাল এসেছে আরবী শব্দ দাজাল থেকে (دجل) থেকে। যারঅর্থ- সত্য ঢেকে দেয়া, ছদ্ম আবরণে লুকিয়ে রাখা, প্রতারিত করা, মিথ্যা বলা ইত্যাদি। দাজ্জাল শব্দের প্রসিদ্ধ অর্থ হচ্ছে মহা-মিথ্যুক।
●দাজ্জাল কিসের দাবী করবে?মহা-দুর্ভিক্ষের কালে দাজ্জাল খাদ্যদ্রব্য নিয়ে এসে বলবে, “আমি হচ্ছি সমগ্র জগতের পালনকর্তা। হে লোকসকল! তোমরা আমার প্রতি ঈমান আন! আমি তোমাদেরখাদ্য দেব, পানীয় দেব, সম্পদ দেব, যা চাও সব দেব। নবী করীম (সা:)বলেছেন, “স্মরণ রেখো! দাজ্জাল কিন্তু একচোখে কানা হবে। আর তোমাদের প্রকৃত পালনকর্তা কানা নন!! [বুখারী]
●ইবনে সাইয়াদ সম্পর্কে দুটি কথা:নবী যুগে মদিনায় এক ইহুদী পুত্র ছিল। নাম ছিল ইবনে সাইয়াদ। তার অলৌকিক কর্মকাণ্ডের খবর শুনে নবীজী তাকে দাজ্জাল সন্দেহ করেছিলেন।আব্দুল্লাহ বিন উমর (রা:) থেকে বর্ণিত, একদা উমর (রা:)-কে সাথে নিয়ে নবীজী ইবনে সাইয়াদের খবরনেয়ার জন্য গমন করলেন। গিয়ে দেখেন- সে ছোট্ট বালকদের সাথে বনী মুগালার দুর্গের কাছে খেলাধুলা করছে। সে সময় ইবনে সাইয়াদের বয়স ১৫ ছুঁই ছুঁই। অজান্তেই পেছনে গিয়ে নবীজী তারপিঠে মৃদু আঘাত করলেন।
● ইবনে সাইয়াদকে নবীজী বললেন: তুমি কি মান যে, আমি হলাম আল্লাহ্র রাসূল?
● ইবনে সাইয়াদ নবীজীর দিকে তাকিয়ে বলল- আমি আপনাকে মূর্খদের নবী মনে করি।
● অতঃপর সে পাল্টা নবীজীকে বলতে লাগল- আপনি কি মানেন যে, আমি আল্লাহ্র রাসূল?
● নবীজী প্রত্যাখ্যানের সুরে বললেন- আমি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলগনের প্রতি ঈমান আনলাম। বললেন- স্বপ্নে তুই কি দেখিস?
● সে বলল- কখনো সত্যবাদী আবার কখনো মিথ্যাবাদী দেখি।
● নবীজী বললেন- তোর বিষয়টি তো গড়বড় মনে হচ্ছে!! আচ্ছা অন্তরেতোর জন্য একটি কথা লুকিয়েছি, বলতো সেটা কি?!!
● ইবনে সাইয়াদ বলল- (دخ) ধোয়া!
● নবীজী বললেন- দূরে সর! নির্ধারিত সময়ের আগে তুই কিছুইকরতে পারবি না!!
● উত্তপ্ত পরিস্থিতি দেখে উমর (রা:) বললেন- হে আল্লাহ্র রাসূল! অনুমতি দিন এক্ষুনি তার মস্তক নামিয়ে দেই!
● নবীজী বললেন- সেই যদি প্রকৃত দাজ্জাল হয়, তবে তোমার নয়; ঈসা বিন মারিয়ামের হতে সে নিহত হবে। আর যদি দাজ্জাল না হয়, তবে অনর্থক হত্যা করেই বা কি লাভ…!![মুসলিম]
সালেম বিন আব্দুল্লাহ্ বলেন- আমি আব্দুল্লাহ্ বিন উমর (রা:)-কেবলতে শুনেছি- অতঃপর নবী করীম (সা:) উবাই বিন কাবকে সাথে নিয়ে ইবনে সাইয়াদের খেজুর বাগানে গেলেন। বাগানে ঢুকার পর নবীজী খেজুর কাণ্ডের পেছনে লুকিয়ে লুকিয়ে সামনে এগুতে লাগলেন, ইবনে সাইয়াদ টের পাওয়ার আগেই যেন একা বসে বসে সে যা বলছে- শুনতে পান। নবীজী তাকে দেখলেন, সে চাদরের বিছানায় গা এলিয়ে কি যেন ফিসফিস করছে। হঠাৎ তার মাএসে নবীজীকে দেখে বলতে লাগল- ওহেসাফী (ইবনে সাইয়াদের ডাকনাম)! মুহাম্মদ এসে পড়েছে! ইবনে সাইয়াদ সজাগ হয়ে ফিসফিস বন্ধ করে দেয়। তখন নবীজী বলতে লাগলেন- হতভাগী না আসলে আজই প্রকাশ হয়ে যেত (যে, সে দাজ্জাল না অন্য কিছু!)…[মুসলিম]আবু সাঈদ (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- মদিনার কোন এক পথে নবীজী, আবূ বকর এবং উমরের সাথে ইবনে সাইয়াদের সাক্ষাত হল।
● নবী করীম (সা:) তাকে লক্ষ করে বললেন- তুমি কি মান যে, আমি হলাম আল্লাহ্র রাসূল?
● সে বলল- আপনি কি মানেন যে, আমিও হলাম আল্লাহ্র রাসূল?
● নবীজী বললেন- আমি ঈমান আনলাম- আল্লাহ্র প্রতি, ফেরেশ্তাদের প্রতি, আসমানী গ্রন্থাদির প্রতি। আচ্ছা- তুই কিছু দেখিস নাকি?
● সে বলল- পানিতে সিংহাসন দেখি।
● নবীজী বললেন- তুই আসলে সমুদ্রেইবলিসের সিংহাসন দেখিস! আর কিছু দেখিস না?
● আমি অনেক সত্যবাদীর মাঝে একজন মিথ্যুক দেখি অথবা অনেক মিথ্যুকের মাঝে একজন সত্যবাদী দেখি।
● নবীজী বললেন- ধুর…!! গড়বড় মনেহচ্ছে। ওকে ছেড়ে দাও!!…[মুসলিম]
আবু সাঈদ (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- একদা আমরা হজ্ব বা উমরা পালনে মক্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। সাথে ইবনে সাইয়াদও ছিল। পথিমধ্যে আমরা একস্থানে বিশ্রামের জন্য অবতরণ করলাম। সাথীরা বিভিন্ন প্রয়োজনে দূরে চলে গেল। আমি এবং ইবনে সাইয়াদ শুধু রয়ে গেলাম। সে যেহেতু সন্দেহজনক তাইমনে মনে ভীষণ ভয় পাচ্ছিলাম। কিছুক্ষণ পর সে তার মালপত্র আমার মালপত্রের সাথে এনে রাখল। আমি বললাম- প্রচণ্ড গরম পড়েছে, তাই একসাথে রাখার চেয়ে আলাদা রাখাই ভাল, ঐ বৃক্ষের নিচে যদি রাখতে…!! ইবনে সাইয়াদ মালপত্র নিয়ে দুরের বৃক্ষের নিচে চলে গেল। কিছুক্ষণ পর বকরীর দুধের ব্যবস্থা হলে একটি পাত্রে দুধ ভর্তি করে সে আমার জন্য নিয়ে এলো। বলল- পান কর হে আবু-সাঈদ! বললাম- এমনিতেই প্রচণ্ড গরম, তারউপর দুধ পান করলে পেটের অবস্থা বারোটা বেজে যাবে (কোন মতেই আমি তার হাতের দুধ পান করতে চাচ্ছিলাম না), তখন ইবনে সাইয়াদবলতে লাগল- হে আবু সাঈদ! আমার ইচ্ছা হয়- লম্বা একটা দড়ি গাছের সাথে ঝুলিয়ে নিজেকে ফাঁসদিয়ে দিই। মানুষের এই আচরণ আমার আর ভাল্লাগে না!! সে আবু সাঈদ! তোমারাই (আনসার সম্প্রদায়) নবী করীম (সা:) এর হাদিস সম্পর্কে বেশি অবগত। বিশেষ করে তুমি তো নবী করীম (সা:) থেকে অনেক হাদিস জান! বল তো- নবীজী কি বলে যান নি যে, তার (দাজ্জালের) কোন সন্তান হবে না!!? অথচ মদিনায় আমি সন্তান রেখে এসেছি! নবীজী কি বলেননি- সে (দাজ্জাল) মক্কা-মদিনায় প্রবেশ করতে পারবে না!? অথচ আমি মদিনা থেকে মক্কায় হজ্বের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছি!! আবু সাঈদ বলেন- ইবনে সাইয়াদের এ ব্যথাভরা কথাগুলো শুনে আমি তাকেক্ষমাই করে দিতে চেয়েছিলাম- এমন সময় সে বলতে লাগল- আল্লাহ্র কসম! অবশ্যই আমি দাজ্জালের জন্মস্থান এবং অবস্থান-স্থল জানি!! বললাম- কপাল পুড়ুক তোর!!…[মুসলিম]
উলামায়ে কেরাম থেকে বর্ণিত বিসুদ্ধতম মত হচ্ছে যে:সে প্রকৃত দাজ্জাল নয়। তবে অন্যতম মিথ্যুক। গণক (জ্বীন বা মানুষ) শয়তানেরা তার কাছে সংবাদ সরবরাহ করত। ধারনা করা হয় যে, শেষ জীবনে সে তওবা করে সংশোধিত হয়েছিল। (আল্লাহ্ই ভাল জানেন)নবী করীম (সা:) সবচে বেশি যে ফেতনাটি নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন, তা হচ্ছে দাজ্জালের ফেতনা। আর তাই প্রত্যেক নামাযের শেষে দাজ্জালের মহা-ফেতনা থেকে বাঁচার জন্য সাহাবিদেরকে দোয়া শিখিয়েছেন।যে সকল হাদিসে দাজ্জাল আবির্ভাবকে কেয়ামতের বৃহত্তম নিদর্শনরূপে চিহ্নিত করা হয়েছে:হুযাইফা বিন উছাইদ গিফারী (রা:) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা:) বলেন- দশটি (বৃহৎ) নিদর্শন প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত কেয়ামত সংঘটিত হবে না: ধূম্র, দাজ্জাল, অদ্ভুত প্রাণী, পশ্চিম দিগন্তে প্রভাতের সূর্যোদয়য়…[মুসলিম]দাজ্জালের ফেতনা পৃথিবীর ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ও সুপরিসর ফেতনা:ইমরান বিন হুছাইন (রা:) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা:) বলেন- আদম (আ:) সৃজন থেকে নিয়ে কেয়ামত অবধি দাজ্জালের ফেতনা অপেক্ষা বৃহৎ ও সুপরিসর ফেতনা দ্বিতীয়টি হবে না…[মুসলিম]
দাজ্জাল ও তার গুপ্তচরের কাহিনী:আমের বিন শুরাহিল থেকে বর্ণিত, তিনি ফাতেমা বিনতে কায়েস (রা:)-কে বললেন- সরাসরি নবী করীম (সা:) থেকে শুনেছেন, এমন একটি হাদিস আমাকে শুনান! ফাতেমা (রা:) বললেন- আমার কাছে সেরকম হাদিসই আছে! বর্ণনাকারী বললেন- তাহলে শুনান! বলতে লাগলেন- “একদা মুয়াজ্জিনের নামায দাঁড়িয়েছে- ঘোষণা শুনে মসজিদেগেলাম। পুরুষদের পেছনে মহিলাদের কাতারে দাড়িয়ে নবীজীর ইমামতিতে আমরা নামায আদায় করলাম। নামায শেষে মৃদু হাঁসি নিয়ে নবীজী মিম্বরে বসলেন।● বললেন, সবাই নিজ নিজ স্থানে বসে থাক! কিছুক্ষণ পর বললেন- বুঝতে পেরেছ? কি জন্য তোমাদের বসতে বলেছি!!● সবাই বলল- আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলই বেশি জানেন!!● বললেন- আল্লাহ্র শপথ! কোন উৎসাহ বা ভীতিপ্রদর্শনের জন্য তোমাদের বসতে বলিনি। তামিম দারীএকজন খৃষ্টান ছিল। এখানে এসে ইসলাম গ্রহণ করেছে। মাছীহ দাজ্জাল সম্পর্কে তোমাদের কাছে যা বলতাম, সেও আমাকে সে রকম কিছু শুনিয়েছে। বলেছে- একদা লাখম ও জুযাম গোত্রদ্বয়ের কিছু ব্যক্তিকে নিয়ে সে সমুদ্র ভ্রমণে বের হয়। অতঃপর সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়ে তারাদিকভ্রান্ত হয়ে পড়ে। এক মাস পর্যন্ত ঢেও তাদের নিয়ে খেলা করতে থাকে। অবশেষে একদিন সূর্য প্রস্থানের সময় তাদের জাহাজটি এক অচিন দ্বীপে গিয়ে ভিড়ে। জাহাজ থেকে অবতরণ মাত্রই এক অদ্ভুত প্রাণীর সাথে তাদের সাক্ষাত ঘটে। চুল দিয়ে সারা গা ঢাকা থাকায় সামন-পেছন বুঝা যাচ্ছিল না।● তারা বলল- কপাল পুড়ুক তোর! কে তুই?● প্রাণীটি বলল- আমি হলাম গুপ্তচর!● গুপ্তচর মানে?● এত কিছু জেনে তোমাদের লাভ নেই! ঐ জনশূন্য প্রান্তরে এক ব্যক্তিঅধির আগ্রহে তোমাদের অপেক্ষা করছে। যাও! তাঁর সাথে গিয়ে সাক্ষাত কর!● তামীম বলল- অতঃপর শয়তান মনে করে আমার তার থেকে কেটে পড়লাম। জনশূন্য প্রান্তরে (দুর্গ সদৃশ) গিয়ে দেখি এক মহা মানব। দু-হাত ঘাড় পর্যন্ত এবং দু-হাটু থেকে পায়ের গিঁঠ পর্যন্ত লোহার শিকলে বাঁধা। এমন সুবিশাল মানব এবং শক্তি বাধনযুক্ত বরকতই ব্যক্তি ইতিপূর্বে কোনদিন আমরা দেখিনি।● বললাম- ধ্বংস হোক তোর! কে তুই!● মহা মানব বলল- এসেই যখন পড়েছ! তবে অচিরেই জানতে পারবে।● আগে বল- তোমরা কারা?● আমরা আরব্য জাতি। নৌ ভ্রমণে বেরিয়ে ছিলাম। ঝড়ের কবলে পড়েদীর্ঘ এক মাস দিকভ্রান্ত থাকার পর অবশেষে জাহাজ এই দ্বীপে এসে ভিড়েছে। জাহাজের নিকটেই আমরা বসেছিলাম। হঠাৎ এক অদ্ভুত প্রাণীর দেখা মিলল। সে নিজের পরিচয় গোপন রেখে তার কাছে আসতে বলল। তুই নাকি আমাদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিস!● মহা মানব বলল- বাইছান এলাকার খেজুর বাগানের কি অবস্থা?● মানে?● অর্থাৎ বৃক্ষ গুলি থেকে কি এখনো খেজুর হয়?● বললাম- হাঁ…!● অচিরেই খেজুর বন্ধ হয়ে যাবে!● মহা মানব বলল- বুহাইরা তাবারিয়ার কি অবস্থা?● মানে?● সেই লেকে কি এখনো পানি আছে?● হাঁ…! ওখানে প্রচুর পানি!● অচিরেই সেই পানি চলে যাবে।● মহা মানব বলল- যুগার ঝর্ণার কি অবস্থা?● মানে?● ঝর্ণায় কি আদৌ পানি অবশিষ্ট আছে? নাকি শুকিয়ে গেছে! স্থানীয় লোকেরা কি চাষাবাদের জন্য ঝর্ণার পানি ব্যবহার করতে পারে?● হাঁ…! ঐ ঝর্ণা থেকে প্রচুর পানি প্রবাহিত হয়। স্থানীয়রা চাষাবাদে সে পানি ব্যবহার করে থাকে।● মহা মানব বলল- আরবের শেষ নবী সম্পর্কে আমাকে বল! সে কি কি করেছে!!বললাম- তিনি মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনায় চলে গেছেন।● আরব জাতি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি?● হাঁ…! করেছে।● ফলাফল কি?● আশপাশের আরবদের উপর তিনি বিজয়ী হয়েছেন সবাই তার অনুসরণে এগিয়ে আসছে।বাস্তবেই এমনটা হয়ে গেছে!● হাঁ…!● তাঁকে অনুসরণের মাঝেই আরবের কল্যাণ নিহিত।● মহা মানব বলল- আমি এখন নিজের পরিচয় দিচ্ছি। শুন! আমি হলাম মাছীহ দাজ্জাল! অচিরেই আমাকে বাঁধন মুক্ত করা হবে। আমি বের হয়ে চল্লিশ দিনে সারাবিশ্ব ভ্রমণ করব। তবে মক্কা এবং তাইবায় আমাকে ঢুকতে দেয়া হবে না। যখনই এলাকা দ্বয়ে ঢুকতে চাইব, তরবারি হাতে ফেরেস্তা আমাকে ধাওয়া করবে। সেদিন মক্কা-মদিনার সড়কে ফেরেস্তারা প্রহরী থাকবে।দীর্ঘ হাদিসটি বর্ণনার পর লাঠি দিয়ে মাটিতে আঘাত করে নবীজী বলতে লাগলেন- এটাই হচ্ছে তাইবা নগরী, এটাই হচ্ছে তাইবা নগরী, এটাই হচ্ছে তাইবা নগরী (অর্থাৎ মদিনার অপর নাম তাইবা)! আমি কি তোমাদের কাছে স্পষ্ট রূপে বর্ণনা করতে পেরেছি?!! সকলেই এজবাক্যে বলল- হাঁ…! অতঃপর নবীজী বললেন- দাজ্জাল সম্পর্কে আমি তোমাদের কাছে যা বর্ণনা করতাম, অনেকাংশেই তা শামের সাগরে আছে অথবা ইয়েমেনের সাগরেআছে; না…! বরং সে পূর্ব দিকে আছে… পূর্ব দিকে আছে… পূর্ব দিকে আছে…!!! (পূর্ব দিকে হাতে ইশারা করেছিলেন), বর্ণনাকারী ফাতেমা (রা:) বলেন- নবীজীর এই হাদিসটি আমি উত্তমরূপে স্মরণ রেখেছি!!…[মুসলিম]নাফে বিন উতবা বিন আবি ওয়াক্কাস (রা:) থেকে বর্ণিত, নবীকরীম (সা:) বলেন- অচিরেই তোমরা আরব উপদ্বীপে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ্ তোমাদেরকে বিজয়ী করবেন। অতঃপর পারস্যের (বর্তমানইরান) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ্ তোমাদেরকে বিজয়ী করবেন। অতঃপর রোমানদের (তুরস্ক তথা বাইযাইন্টাইন বাহিনীর) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ্ তোমাদেরকে বিজয়ী করবেন। পরিশেষে দাজ্জালের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, সেখানেও আল্লাহ্ তোমাদেরকে বিজয়ী করবেন…[মুসলিম]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন