কেয়ামত কখন হবে এবং কিভাবে হবে???" <<<"ক্বিয়ামতেরনিদর্শন সমুহ">>>" নিশ্চয় আল্লাহর কাছেই কেয়ামতের জ্ঞান রয়েছে।"***সূরা লুক্বমানঃ আয়াত-৩৪।রাসুল(সাঃ) বলেছেনঃউমার রাদি আল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতঃ একদিনআমরা রাসূলুল্লাহ্সাল্লাল্লাহু'আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বসেছিলাম, এমন সময় হঠাৎএকব্যক্তি আমাদের সামনে উপস্থিত হয় যার কাপড় ছিল ধবধবে সাদা, চুলছিল ভীষণ কালো; তার মাঝে ভ্রমণের কোন লক্ষণ পরিলক্ষিত হচ্ছিল না।আমাদের মধ্যে কেউ তাকে চিনতে পারে নাই।সে নবী সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকটে গিয়ে বসে, নিজের হাঁটু তার হাঁটুর সঙ্গে মিলিয়ে নিজের হাত তার উরুতে রেখে বললেনঃ ".........আমাকে কেয়ামত সম্পর্কে বলুন"।তিনি (রাসূল)বললেনঃ "যাকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে সে জিজ্ঞাসাকারী অপেক্ষা বেশী কিছু জানে না"। ...............তারপর ঐব্যক্তি চলে যায়, আর আমি আরো কিছুক্ষণ বসে থাকি। তখন তিনি (রাসূল)আমাকে বললেনঃ "হে উমার,প্রশ্নকারী কে ছিলেন,তুমি কি জান?আমি বললামঃ "আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল অধিক ভাল জানেন"।তিনি বললেনঃ "তিনি হলেন জিব্রাইল।তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীনশিক্ষা দিতে তোমাদের কাছে এসেছিলেন।" ***সহীহ্মু সলিমঃ ৮।দেখুন, এই দুনিয়ার সবচেয়ে জ্ঞানী ব্যক্তিটি নিজেই জানতেন না কবে কেয়ামত হবে। এই জ্ঞান শুধুই আল্লাহর, কবে কেয়ামত হবে,কবে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে।কিয়ামত বলে কয়ে আসবেনা।একেবারে দিন, তারিখ, বার নির্দিষ্ট করে আসবেনা। মানুষ ঘুর্ণাক্ষরেও জানতে পারবেনা কোন দিন কেয়ামত হবে।আকস্মিক ভাবে এর আগমন ঘটবে।এসম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন:‘তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করে, কিয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে? বলে দিন-এরখবর তো আমার পালনকর্তার কাছেই রয়েছে।তিনিই তা অনাবৃতকরে দেখাবেন নির্ধারিত সময়ে। আসমান ওযমীনের জন্যসেটি অতি কঠিন বিষয়। যখনতা তোমাদের উপর আসবে, তখনঅজান্তেইএসে যাবে।***সূরা আ’রাফঃ আয়াত-১৮৭।'বরং তা আসবে তাদের ওপর অতর্কিতভাবে, অতপর তাদেরকে তা হতবুদ্ধি করে দিবে,তখন তারা তা রোধও করতে পারবে না এবং তাদেরকে অবকাশও দেয়া হবে না।’***সূরা আম্বিয়াঃ আয়াত-৪০।'যেদিন আপনার পালনকর্তার কোন বড় নিদর্শন আসবে, সেদিন এমনকোন ব্যক্তির বিশ্বাস স্থাপন তার জন্য ফলপ্রসূ হবে না।’***সূরা আনআমঃ আয়াত-১৫৮।এই আয়াতের ব্যাখ্যায় রাসূল্লাহসালল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-’যখন কিয়ামতের সর্ব শেষ নিদর্শনটি প্রকাশিত হবে,অর্থাৎ সূর্যপশ্চিম দিক থেকে উদিত হবে,তখন এনিদর্শনটি দেখা মাত্রই সারা বিশ্বের মানুষ ঈমানের কালেমা পাঠ করতে শুরু করবে এবং সব অবাধ্য লোকও বাধ্যহয়ে যাবে; কিন্তু তখন কার ঈমান ওতওবা গ্রহণযোগ্য হবে না।’ (বগভী)....................................................................কিয়ামতের দিনের ভয়াবহতা সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেনঃ...................................................................* সিংগায় ফুৎকার-‘যেদিন শিংগায় ফুঁকদেয়া হবে; সেদিনহবে কঠিন দিন, কাফেরদের জন্যএটা সহজ নয়।’***সূরা মুদ্দাস্সিরঃ আয়াতঃ ৮-১০।* সৃষ্টি জগতের ধ্বংসলীলা-পাহাড় পর্বত-‘যেদিন মানুষ হবে বিক্ষিপ্ত পতঙ্গের মতএবং পর্বতমালা হবে ধুনিতরঙ্গীন পশমের মত।’***সূরা কারিয়াহঃ আয়াতঃ ৪-৫।'এবং পর্বতমালা চালিতহয়ে মরীচিকা হয়ে যাবে।’***সূরা নাবাঃ আয়াত-২০।‘আর যখনপর্বতমালা উড়িয়ে দেয়া হবে।’***সূরা মুরসালাতঃ আয়াত-১০।* আসমান-জমীন-’যখন ভূমণ্ডল তারকম্পনে প্রকম্পিত হবে,যখন সে তার বোঝা বের করে দিবে এবং মানুষ বলবে,এর কি হল?***সূরা যিলযালঃ আয়াতঃ ১-৩।‘আর যেদিন এই ভূমন্ডলকে রূপান্তরিত করা হবে অন্যভূমণ্ডলে এবং পরিবর্তিত করা হবে আকাশ সমূহকে এবং লোকেরা পরাক্রমশালী এক আল্লাহর সামনে পেশ হবে।’***সূরা ইবরাহীমঃ আয়াত-৪৮।*চন্দ্র সূর্য তারকা-‘যখন সূর্য আলোহীন হয়ে যাবে আর নক্ষত্ররাজি খসে খসে পড়বে।’***সূরা তাকভীরঃ আয়াতঃ ১-২।‘যখন আকাশ বিদীর্ণ হবে, আর যখন নক্ষত্ররাজি ঝরে পড়বে।’***সূরা ইনফিতারঃ আয়াতঃ ১-২।‘অতপর যখন নক্ষত্রসমূহ নির্বাপিতহবে।’***সূরা মুরসালাতঃ আয়াত-৮।*নদ-নদী-‘যখন সমুদ্রকে উত্তাল করে তোলা হবে।’***সূরা তাকভীরঃ আয়াত-৬।*জীব-জন্তু-‘যখন দশ মাসের গর্ভবতী উষ্ট্রীসমূহ উপেক্ষিত হবে। যখন বন্যপশুরা একত্রিত হয়ে যাবে।’***সূরা তাকভীরঃ আয়াতঃ ৪-৫।...................................................সৃষ্টিজগত ধ্বংস শেষে আল্লাহ তায়ালার ঘোষণা-‘আজ রাজত্ব কার? এক প্রবল পরাক্রান্ত আল্লাহ তায়ালার।’***সূরা মু’মিনঃ আয়াত-১৬।....................................................হে আল্লাহ, আমাদের সবাইকে ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণের তৌফিক দানকরুন।~~~~~~~~~~~~~~"ক্বিয়ামতের নিদর্শন সমুহ"~~~~~~~~~~~~~~নবী করীম (সাঃ)বলেছেনঃ দশটি নিদর্শননা আসা পর্যন্তক্বিয়ামত সংঘটিত হবে না।আরসেগুলো হচ্ছেঃ-১. ধোঁয়া, যা পূর্ব হ’তে পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত এক নাগাড়ে চল্লিশ দিনবিস্তৃত থাকবে।২. দাজ্জাল বের হবে।৩. চতুষ্পদ জন্তু(দাববাতুল আরদ)বেরহবে।৪. পশ্চিমাকাশ হ’তে সূর্য উদিত হবে।৫. ঈসা ইবনু মারিয়াম আকাশহ’তে অবতরণ করবেন।৬. ইয়া‘জূজ মা‘জূজ বের হবে।৭. পূর্বাঞ্চলে ভূমিধস হবে।৮. পশ্চিমাঞ্চলে ভূমিধস হবে।৯. আরব উপদ্বীপে ভূমিধস হবে।১০. সবশেষে ইয়ামান হ’তে এমনএক আগুনবেরহবে যা মানুষকে তাড়িয়ে একটি সমবেতহওয়ার স্থানে নিয়ে যাবে।অপর একবর্ণনায় আছে, আদন (এডেন)-এর অভ্যন্তরহ’তে আগুন বের হবে।যা মানুষকে সমবেত হওয়ার স্থানের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবে।অপর এক বর্ণনায় দশম লক্ষণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, (১) এমন বাতাস প্রবাহিত হবে, যে বাতাস কাফেরদেরকে নিক্ষেপ করবে।(২) আর বিশেষ করে ক্বিয়ামত তখনই সংঘটিত হবে যখন যমীনে ‘আল্লাহ,আল্লাহ বলার কোন মানুষ থাকবে না’।(৩) যখন মানুষ আল্লাহ তা‘আলাকে স্মরণ করবে না, তাঁর দাসত্ব করবে না তখনই ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে।কারণ, আল্লাহর যিকির ও ইবাদত হচ্ছে দুনিয়ার স্থায়ীত্বের প্রমাণ।আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়ার মধ্য থেকে নেকআমল কারী ব্যক্তি ও সৎ,ঈমানদার ব্যক্তিদের উঠিয়ে নিবেনএবং খারাপ ওনিকৃষ্ট মানুষের উপর ক্বিয়ামত সংঘটিত করবেন।***মুসলিম, বঙ্গানুবাদ মিশকাতঃ ৬২৩০, ৫২৮২, ৬২৮৩।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন