জাকাত নামাজ রোজার মতই একটি ফরজ ইবাদত। জাকাত আদায় না করলে ধন-সম্পদ ময়লা হয়ে যায়। কুরআনে আছে জাকাত আদায় না করলে কিয়ামতের দিন ধন-সম্পদ গলায় বেড়ী হিসেবে পরিয়ে দেওয়া হবে। হাদীসে আছে বেড়ী হিসেবে পরানো সম্পদ সাপ হয়ে দংশন করবে এবং বলবে আমি তোমার সম্পদ। এ জন্য দুনিয়াতেই সময়মত জাকাত দিয়ে দিতে হবে।
জাকাত প্রদানের ক্ষেত্রে আগে সুষ্ঠুভাবে জাকাত বের করতে হবে। সুষ্ঠু জাকাত বের করার জন্য দুটি জিনিস বেশ সতর্কতার সাথে পালন করতে হয়। ১. জাকাত বের করার নির্দিষ্ট তারিখ। ২. সম্পদ হিসাব করে জাকাত বের করা।
জাকাত বের করার নির্দিষ্ট তারিখ: যেদিন সম্পদের বছরপূর্তি হয়, সেদিনই জাকাত ফরজ হয়। বছরপূর্তির একদিন পূর্বেও জাকাত ফরজ হয় না। একদিন পরেও না। এ জন্য জাকাত বের করার জন্য একটি নির্দিষ্ট তারিখ থাকতে হয়। জাকাত বের করার তারিখটি আরবী মাস অনুযায়ী হতে হয়। অতীতে প্রতি বছর কোন তারিখে জাকাত বের করা হয়েছে তার যদি নির্দিষ্ট তারিখ জানা না থাকে, তাহলে যে কোন একটি তারিখকে জাকাতের জন্য নির্দিষ্ট করতে হবে। এক্ষেত্রে শবে বরাতের দিনকে বেছে নেওয়া যায়। প্রতি বছর শবে বরাতের দিনে জাকাত বের করা হলো। আরবী মাসের এই দিনটিকে খুব সহজে মনে রাখা যায়। আবার এই দিনটি কবে আসবে, তাও আগে থেকে জানা যায়। জাকাতের ক্ষেত্রে দুটি জিনিস বেশ লক্ষ্যনীয়। একটি হলো জাকাত বের করা। অপরটি হচ্ছে জাকাত আদায় করা। জাকাত বের করার অর্থ কত টাকা জাকাত আসছে হিসাব করে তা বের করা। আর জাকাত আদায় করার অর্থ হচ্ছে গরীব-মিসকীনকে জাকাতের অর্থ দেওয়া। রমজানে জাকাত বের করাতে কোন অতিরিক্ত ফজিলত নেই। অতিরিক্ত ফজিলত জাকাত আদায় করাতে। অর্থাৎ জাকাত প্রদান করাতে। যদি আগে জাকাত বের করা থাকে তাহলে রমজানে জাকাত আদায়টা সহজ হয়ে যায়।
নির্দিষ্ট তারিখে জাকাত কেন বের করতে হয়, তার উদাহরণ দিচ্ছি। ধরুন শবে বরাতের দিনে আপনার জাকাত আদায়যোগ্য সম্পদ ১০ লক্ষ টাকা। তাহলে শতকরা ২.৫% হারে এর জাকাত হবে ২৫,০০০/-। কিন্তু শবে বরাতের পরের দিন বা আগের দিন আপনার মালিকানাধীন সম্পদের পরিমাণ ২০ লক্ষ টাকা। আগের দিন বা পরের দিন জাকাত আদায় করার কারণে আপনি অতিরিক্ত আরও ২৫,০০০/- জাকাত দিচ্ছেন। অথচ এই অতিরিক্ত ২৫,০০০/- আপনার জাকাত নয়। নির্দিষ্ট তারিখ ব্যবহার না করার কারণে আপনি অজান্তে এই অতিরিক্ত টাকা জাকাত মনে করে দিচ্ছেন। অনুরূপ উল্টাও হতে পারে। অর্থাৎ শবে বরাতে আপনার মালিকানাধীন জাকাতযোগ্য সম্পদ ছিলো ২০ লক্ষ টাকা। আপনি ঐ দিন জাকাত বের না করে পরের দিন বা আগের দিন জাকাত বের করলেন। সেদিন ছিলো ১০ লক্ষ টাকা। তাহলে ফলাফল দাড়াচ্ছে, আপনার উপর মূলত জাকাত ফরজ হয়েছে ৫০,০০০/-। কিন্তু নির্দিষ্ট তারিখ ব্যবহার না করার কারণে আপনি ২৫,০০০/- টাকা কম জাকাত দিচ্ছেন। অর্থাৎ অসতর্ক হওয়ার কারণে আপনি অজান্তে জাকাতের টাকা ভোগ করছেন। আপনি গরীব-মিসকীনের হক নষ্ট করে খেয়ে নিচ্ছেন। এ জন্য জাকাতের নির্দিষ্ট তারিখ হওয়া বাঞ্ছনীয়। কোন কারণে নির্দিষ্ট তারিখে জাকাত বের করতে না পারলে পরে যে কোনদিন জাকাত বের করা যাবে। তবে যেদিনই জাকাত বের করা হোক না কেন, জাকাত বের করার সময় ঐ নির্দিষ্ট তারিখের সম্পদের স্থিতি হিসেবেই জাকাত বের করতে হবে।
সম্পদ হিসাব করে জাকাত বের করা: অনুমান করে নয়, বরং সম্পদ হিসাব করেই জাকাত দেওয়ার নিয়ম। কারও সম্পদ আছে ১৫ লক্ষ টাকার মতো। কিন্তু সে অনুমান করল তার সম্পদ আছে ১০ লক্ষ টাকার। তাই সে ১০ লক্ষ টাকার জাকাত দিলো। দেখা গেলো সে ৫ লক্ষ টাকার জাকাত কম দিলো। অর্থাৎ এ জাকাত সে নিজে ভোগ করল। এ জন্য জাকাত হিসেব করে দিতে হয়। মোট হিসাবের চেয়েও কিছু বাড়তি সম্পদ ধরে নিয়ে জাকাত দেওয়াটা উত্তম।
জাকাত দিবেন যেভাবে: ১. প্রথমত জাকাতের জন্য আলাদা হিসাব রাখতে হবে। যতটুকু জাকাত প্রদান হবে তা সেখান থেকে মাইনাস করে রাখতে হবে। জাকাতের হিসাব রাখলে যখন ইচ্ছা, যতটুকু ইচ্ছা স্বাধীনভাবে প্রদান করা যায়। কতটুকু অনাদায়ী থাকলো তা জানা যায়। তাই সুবিধামত কোন খাতা বা ডায়েরীতে এই হিসাব লিখে রাখতে হবে। ২. গরীব আত্মীয় স্বজন জাকাত পাওয়ার প্রথম হকদার। তাদের দিলে দ্বিগুণ সওয়াবের কথা বলা হয়েছে। তাদের প্রয়োজনীয় খরচ, লেখাপড়া, চিকিৎসা ইত্যাদি বাবদ নগদ অর্থ বা দ্রব্য দেওয়া যায়। কাউকে জাকাত দেওয়ার সময় ‘এটা জাকাতের টাকা’ বলার কোন প্রয়োজন নেই। বরং এমনক্ষেত্রে জাকাতের টাকা না বলে দেওয়াটাই উত্তম। বলতে হবে, তোমাদের প্রয়োজনে এটা দিলাম, রাখো, সুবিধামত খরচ করো। এক্ষেত্রে বাজারের ‘জাকাতের শাড়ি-লুঙ্গি’ পরিহার করা উচিত। যে কাপড় নিজেরা পরি না সে কাপড় জাকাত হিসেবে কেন দিবো। দশজন নিম্নমানের কাপড় না দিয়ে পাঁচ জনকে ভাল মানের কাপড় দেওয়া উচিত। ৩. যারা মাদরাসায় লেখাপড়ে করে তাদেরও জাকাত দিলে দ্বিগুণ সওয়াবের কথা বলা হয়েছে।
আল্লাহ আমাদের সকল ইবাদত কবুল করুন।
জাকাত প্রদানের ক্ষেত্রে আগে সুষ্ঠুভাবে জাকাত বের করতে হবে। সুষ্ঠু জাকাত বের করার জন্য দুটি জিনিস বেশ সতর্কতার সাথে পালন করতে হয়। ১. জাকাত বের করার নির্দিষ্ট তারিখ। ২. সম্পদ হিসাব করে জাকাত বের করা।
জাকাত বের করার নির্দিষ্ট তারিখ: যেদিন সম্পদের বছরপূর্তি হয়, সেদিনই জাকাত ফরজ হয়। বছরপূর্তির একদিন পূর্বেও জাকাত ফরজ হয় না। একদিন পরেও না। এ জন্য জাকাত বের করার জন্য একটি নির্দিষ্ট তারিখ থাকতে হয়। জাকাত বের করার তারিখটি আরবী মাস অনুযায়ী হতে হয়। অতীতে প্রতি বছর কোন তারিখে জাকাত বের করা হয়েছে তার যদি নির্দিষ্ট তারিখ জানা না থাকে, তাহলে যে কোন একটি তারিখকে জাকাতের জন্য নির্দিষ্ট করতে হবে। এক্ষেত্রে শবে বরাতের দিনকে বেছে নেওয়া যায়। প্রতি বছর শবে বরাতের দিনে জাকাত বের করা হলো। আরবী মাসের এই দিনটিকে খুব সহজে মনে রাখা যায়। আবার এই দিনটি কবে আসবে, তাও আগে থেকে জানা যায়। জাকাতের ক্ষেত্রে দুটি জিনিস বেশ লক্ষ্যনীয়। একটি হলো জাকাত বের করা। অপরটি হচ্ছে জাকাত আদায় করা। জাকাত বের করার অর্থ কত টাকা জাকাত আসছে হিসাব করে তা বের করা। আর জাকাত আদায় করার অর্থ হচ্ছে গরীব-মিসকীনকে জাকাতের অর্থ দেওয়া। রমজানে জাকাত বের করাতে কোন অতিরিক্ত ফজিলত নেই। অতিরিক্ত ফজিলত জাকাত আদায় করাতে। অর্থাৎ জাকাত প্রদান করাতে। যদি আগে জাকাত বের করা থাকে তাহলে রমজানে জাকাত আদায়টা সহজ হয়ে যায়।
নির্দিষ্ট তারিখে জাকাত কেন বের করতে হয়, তার উদাহরণ দিচ্ছি। ধরুন শবে বরাতের দিনে আপনার জাকাত আদায়যোগ্য সম্পদ ১০ লক্ষ টাকা। তাহলে শতকরা ২.৫% হারে এর জাকাত হবে ২৫,০০০/-। কিন্তু শবে বরাতের পরের দিন বা আগের দিন আপনার মালিকানাধীন সম্পদের পরিমাণ ২০ লক্ষ টাকা। আগের দিন বা পরের দিন জাকাত আদায় করার কারণে আপনি অতিরিক্ত আরও ২৫,০০০/- জাকাত দিচ্ছেন। অথচ এই অতিরিক্ত ২৫,০০০/- আপনার জাকাত নয়। নির্দিষ্ট তারিখ ব্যবহার না করার কারণে আপনি অজান্তে এই অতিরিক্ত টাকা জাকাত মনে করে দিচ্ছেন। অনুরূপ উল্টাও হতে পারে। অর্থাৎ শবে বরাতে আপনার মালিকানাধীন জাকাতযোগ্য সম্পদ ছিলো ২০ লক্ষ টাকা। আপনি ঐ দিন জাকাত বের না করে পরের দিন বা আগের দিন জাকাত বের করলেন। সেদিন ছিলো ১০ লক্ষ টাকা। তাহলে ফলাফল দাড়াচ্ছে, আপনার উপর মূলত জাকাত ফরজ হয়েছে ৫০,০০০/-। কিন্তু নির্দিষ্ট তারিখ ব্যবহার না করার কারণে আপনি ২৫,০০০/- টাকা কম জাকাত দিচ্ছেন। অর্থাৎ অসতর্ক হওয়ার কারণে আপনি অজান্তে জাকাতের টাকা ভোগ করছেন। আপনি গরীব-মিসকীনের হক নষ্ট করে খেয়ে নিচ্ছেন। এ জন্য জাকাতের নির্দিষ্ট তারিখ হওয়া বাঞ্ছনীয়। কোন কারণে নির্দিষ্ট তারিখে জাকাত বের করতে না পারলে পরে যে কোনদিন জাকাত বের করা যাবে। তবে যেদিনই জাকাত বের করা হোক না কেন, জাকাত বের করার সময় ঐ নির্দিষ্ট তারিখের সম্পদের স্থিতি হিসেবেই জাকাত বের করতে হবে।
সম্পদ হিসাব করে জাকাত বের করা: অনুমান করে নয়, বরং সম্পদ হিসাব করেই জাকাত দেওয়ার নিয়ম। কারও সম্পদ আছে ১৫ লক্ষ টাকার মতো। কিন্তু সে অনুমান করল তার সম্পদ আছে ১০ লক্ষ টাকার। তাই সে ১০ লক্ষ টাকার জাকাত দিলো। দেখা গেলো সে ৫ লক্ষ টাকার জাকাত কম দিলো। অর্থাৎ এ জাকাত সে নিজে ভোগ করল। এ জন্য জাকাত হিসেব করে দিতে হয়। মোট হিসাবের চেয়েও কিছু বাড়তি সম্পদ ধরে নিয়ে জাকাত দেওয়াটা উত্তম।
জাকাত দিবেন যেভাবে: ১. প্রথমত জাকাতের জন্য আলাদা হিসাব রাখতে হবে। যতটুকু জাকাত প্রদান হবে তা সেখান থেকে মাইনাস করে রাখতে হবে। জাকাতের হিসাব রাখলে যখন ইচ্ছা, যতটুকু ইচ্ছা স্বাধীনভাবে প্রদান করা যায়। কতটুকু অনাদায়ী থাকলো তা জানা যায়। তাই সুবিধামত কোন খাতা বা ডায়েরীতে এই হিসাব লিখে রাখতে হবে। ২. গরীব আত্মীয় স্বজন জাকাত পাওয়ার প্রথম হকদার। তাদের দিলে দ্বিগুণ সওয়াবের কথা বলা হয়েছে। তাদের প্রয়োজনীয় খরচ, লেখাপড়া, চিকিৎসা ইত্যাদি বাবদ নগদ অর্থ বা দ্রব্য দেওয়া যায়। কাউকে জাকাত দেওয়ার সময় ‘এটা জাকাতের টাকা’ বলার কোন প্রয়োজন নেই। বরং এমনক্ষেত্রে জাকাতের টাকা না বলে দেওয়াটাই উত্তম। বলতে হবে, তোমাদের প্রয়োজনে এটা দিলাম, রাখো, সুবিধামত খরচ করো। এক্ষেত্রে বাজারের ‘জাকাতের শাড়ি-লুঙ্গি’ পরিহার করা উচিত। যে কাপড় নিজেরা পরি না সে কাপড় জাকাত হিসেবে কেন দিবো। দশজন নিম্নমানের কাপড় না দিয়ে পাঁচ জনকে ভাল মানের কাপড় দেওয়া উচিত। ৩. যারা মাদরাসায় লেখাপড়ে করে তাদেরও জাকাত দিলে দ্বিগুণ সওয়াবের কথা বলা হয়েছে।
আল্লাহ আমাদের সকল ইবাদত কবুল করুন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন