দ্বীন ইসলামের বিরোধিতা করার পেছনে নাস্তিক ও হিন্দুদের একটি যুক্তি দিতে দেখা যায়। তাদের দাবি হলো, মুসলমানরা নাকি কথায় কথায় অন্য ধর্মকে হেয় করে। তাই আসুন পাঠকেরা, কিছু তুলনামূলক বিশ্লেষণে আসি।
---২০১২ সালে আমেরিকায় একটি ইসলামবিদ্বেষী বই বের হয়েছিল ‘আমেরিকান স্নাইপার’ নামে। বইটি বের হওয়ার আগে আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এইবইটির ছাড়পত্র দিয়েছিল। এই বইটি ২০১৫ সালেও বেস্টসেলারের স্থান দখল করে রেখেছে বলে উইকিপিডিয়ায় রয়েছে। এই বইটির কাহিনী নিয়ে একই নামে বের হওয়া ‘আমেরিকান স্নাইপার’ সিনেমাটি সম্পর্কেও অনেকেই জানে, যে সিনেমাতে মুসলমানদের চরমভাবে বিকৃত করে দেখানো হয়েছে।
----ফ্রান্সে শার্লি হেবদোর অফিসে যেদিন হামলা হয়েছিল, সেদিনই ফ্রান্সের এক নম্বর ঔপন্যাসিক মিশেল হুয়েলবেকের লেখা ইসলাবিরোধী উপন্যাস ‘সুমিশন’ বাজারে ছাড়া হয়েছিল। (http://goo.gl/0JckHl)
----আমাদের পাশ্ববর্তী কলকাতাতেও হিন্দু ও কমিউনিস্ট লেখক সাহিত্যিকদের চরম ইসলামবিরোধী বইপত্র রয়েছে। যেমন চট্টগ্রাম থেকে কলকাতায় মাইগ্রেট করা কঙ্কর সিংহের লেখা ‘ইসলাম ও নারী’, নকশাল নেতা আজিজুল হকের ‘মনু মুহম্মদ হিটলার’ এগুলো চরম ইসলামবিরোধী বই।
----সম্প্রতি ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতায় নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের হিড়িক পড়ে গিয়েছে, হচ্ছে এ সম্পর্কিত বিভিন্ন ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনী। নেদারল্যান্ডের চরম ইসলামবিদ্বেষী রাজনৈতিক নেতা গির্ট উইল্ডার্স সম্প্রতি সেদেশের টেলিভিশনে প্রচার করেছে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার ব্যঙ্গচিত্র। নাউযুবিল্লাহ!
এখন প্রশ্ন হলো-
১) কোন মুসলমান দেশ কি দেখানো যাবে, যে দেশের নামকরা লেখকেরা কোন নির্দিষ্ট অমুসলমান গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে টার্গেট করে বই লেখে? কিংবা এ ধরণের কোন বই কি কোন মুসলমান দেশে বেস্টসেলার হয়?
২) কোন মুসলমান দেশে কি কোন অমুসলমান গোষ্ঠীর দেবতা ও উপাস্যর ব্যঙ্গচিত্রের প্রদর্শনী হয়? কোন মুসলমান দেশের রাজনীতিবিদ কি এধরণের কোন প্রদর্শনী করার ইচ্ছা পোষণ করেছে?
৩) ইসলামবিরোধী বই লেখার জন্য কিংবা ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের জন্য জার্মানি কিংবা ফ্রান্সের রাষ্ট্রপ্রধানরা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে পুরষ্কার দিয়ে সম্মান জানায়। নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কনকারী ড্যানিশ কার্টুনিস্ট কুর্ট ওয়েস্টারগার্ডকে জার্মান রাষ্ট্রপ্রধান অ্যাঙ্গেলা মার্কেল পুরষ্কৃত করেছিল। (http://goo.gl/0vNNaK)
এমন কোন মুসলমান দেশ দেখানো যাবে, যে দেশের রাষ্ট্রপ্রধান কোন বিধর্মীকে আঘাত করে লেখা বই অথবা ব্যঙ্গচিত্রের জন্য কাউকে পুরষ্কৃত করে?
এসবের ধারেকাছেও কোন মুসলমান দেশে কেউ কখনো দেখাতে পারবে না। মুসলমানরা বিধর্মীদের বিরোধিতা করতে উপযাচক হয়ে আগবাড়িয়ে কিছু করাতো দূরের কথা, এমনকি নিজের অস্তিত্ব বিধর্মীদের দ্বারা বিপন্ন হলেও তারা হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকে। মুসলমানদের যদি বিধর্মীদের বিরুদ্ধে কিছু করার মুরোদ থাকতোই, তাহলে বিধর্মীরা আজ নিজেদের পিঠের চামড়া বাঁচাতেই ২৪ ঘণ্টা ব্যস্ত থাকতো। মুসলমানদের বিরুদ্ধে বই লেখা কিংবা ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করার ফুরসৎ তারা আর পেতো না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন