কোন কোন সম্প্রদায় ধারণা করে যে, শুধু আহার, নিদ্রা এবং যৌনক্ষুধা চরিতার্থ করার জন্যই মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে; সুতরাং তারা তদনুরূপ কাজ করেই জীবন শেষ করে। আবার অসভ্য জাতির মানুষ ধারনা করে, অন্য সম্প্রদায়ের লোকদেরকে পরাস্ত করে তাদের উপর প্রভুত্ব স্থাপন করাই মানব জীবনের লক্ষ্য। কিন্তু সুক্ষ্মভাবে বিচার করলে বুঝা যাবে যে, এ উভয় প্রকারের ধারণাই ভুল। পানাহার, স্ত্রীসহবাস প্রভৃতি কার্য লোভ এবং কাম প্রবৃত্তির উত্তেজনার দ্বারাই সম্পন্ন হয়ে থাকে।এ প্রবৃত্তি ইতর-প্রাণীর ও আছে। সকলেরই জানা আছে যে, উটের পানাহার শক্তি এবং চড়ুই পাখীর সহবাস শক্তি মানুষ অপেক্ষা অনেক বেশী। পানাহার এবং কামভাবই যদি মানব জীবনের চরম লক্ষ্য হয়, তবে উষ্ট্র এবং চড়ুই পাখী অপেক্ষা তাকে শ্রেষ্ঠ কেমন করে বলা যেতে পারে? পক্ষান্তরে অপরকে যুদ্ধে পরাজিত করা ক্রোধের কার্য। হিংস্র জন্তুর মধ্যে ক্রোধ পূর্ণমাত্রায় প্রদান করা হয়েছে। অতএব, মানব জীবনের লক্ষ্য অপরের উপর জয়লাভ করা হলে হিংস্র প্রাণীসমূহের উপর মানুষ মানব শ্রেষ্টত্বের কোনই কারন নেই। বস্তুতঃ মানব জাতির শ্রেষ্টত্ব ঐ কারনে নয়; বরং তার বুদ্ধির দরুন। মহান আল্লাহ তা'আলা কেবল মানুষকেই অনুগ্রহপূর্বক এ অমূল্য জ্ঞান সম্পদ দান করেছেন, অন্যান্য প্রাণীকে দান করেন নি। বুদ্ধির বলেই মানুষ সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহকে চিনতে পারে এবং তাঁর বিচিত্র সৃষ্টি নৈপুণ্য উপলব্ধি করতে পারে। বুদ্ধির সাহায্যে মানুষ নিজকে কাম, ক্রোধ, লোভ প্রভৃতি রিপুর হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। এটাই ফেরেশতার স্বভাব। এমন কি, এ সম্পদের প্রভাবেই মানুষ, পশু, পক্ষী প্রভৃতি প্রাণীর উপর প্রভুত্ব করতে পারে এবং এরই প্রভাবে ভূ-পৃষ্টের সমস্ত কিছু মানুষের অধীন। এ মর্মে মহান আল্লাহ বলেছেনঃ অর্থাৎ "আসমানসমূহ এবং জমিনের মধ্যস্থিত সমস্ত কিছুই আল্লাহ তা'আলা তোমাদের অধীন করেছেন।" (পারাঃ২৪, সূরা-জাছিয়াঃ রুকু ২) সূত্রঃ কিমিয়ায়ে সা'আদাত (সৌভাগ্যের পরশমণি) ইমাম গাজ্জালী রহঃ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন