আমি এমন মানুষ দেখেছি, যাদের জন্যে এই দুনিয়া তাদের পায়ের নিচের ধুলো থেকেও তুচ্ছ। আমি এমন মানুষ দেখেছি যারা দিনশেষে শুধুমাত্র তাদের নিজের অংশের খাবারটুকু জোগাড় করতে পারতেন, তবুও তারা বলতেন, “আমি এর সবটুকু দিয়ে নিজের উদরপূর্তি করব না। আমি অবশ্যই এর কিছু অংশ আল্লাহর ওয়াস্তে দান করব।” এরপর তারা তাদের খাবারের কিছু অংশ দান করে দিতেন যদিও গ্রহণকারীর চেয়ে ওই খাবারটুকু তাদেরই বেশি প্রয়োজন ছিল।
— হাসান আল-বাসরি (রাহিমাহুল্লাহ)
[‘হিলইয়া আল-আউলিয়া’তে আবু নু’আইম-এর ‘আলক্বামা ইবন মারসাদ থেকে বর্ণিত]
“হায় আদম সন্তান! তোমরা কি আল্লাহর সাথে যুদ্ধ করতে সক্ষম? যে আল্লাহকে অমান্য করে সে তো তাঁর সাথেই যুদ্ধ ঘোষণা করল! আল্লাহর শপথ! বদরের ৭০ জন যোদ্ধার সাথে আমার দেখা হয়েছে। তাদের বেশিরভাগেরই পোষাক ছিল পশমের।”
তোমরা যদি তাদের দেখতে তাহলে তাদের উন্মাদ বলতে, আর তারা যদি তোমাদের মধ্যে উত্তমদের দেখতেন তাহলে বলতেন, “আখিরাতে তাদের জন্যে কিছু নেই।” তারা যদি তোমাদের মধ্যে অধমদের দেখতেন তাহলে তারা বলতেন, “তারা শেষ বিচারের দিন’-এ বিশ্বাস করে না।”
— হাসান আল-বাসরি (রাহিমাহুল্লাহ)
[‘হিলইয়া আল-আউলিয়া’তে আবু নু’আইম-এর ‘আলক্বামা ইবন মারসাদ থেকে বর্ণিত]
আমরা হাসি-ঠাট্টা করি, কিন্তু কে জানে– হয়তো আল্লাহ আমাদের কিছু কাজকর্ম দেখে বলছেন: “আমি তোমাদের কাছ থেকে কোনো আমলই গ্রহণ করব না।”
— হাসান আল-বাসরি (রাহিমাহুল্লাহ)
[‘হিলইয়া আল-আউলিয়া’তে আবু নু’আইম-এর ‘আলক্বামা ইবন মারসাদ থেকে বর্ণিত]
ইমাম আল-হাসান আল-বাসরী বলেছিলেন:
“পৃথিবীর জীবনটা তিনটি দিনের–
গতকালের দিনটিতে যা করা হয়েছে সেগুলো নিয়ে সেটি চলে গেছে;
আগামীকালের দিনটিতে হয়ত আপনি না-ও পৌছতে পারেন;
কিন্তু আজকের দিনটি আপনার জন্য সুতরাং যা করার আজই করে নিন।”
গতকালের দিনটিতে যা করা হয়েছে সেগুলো নিয়ে সেটি চলে গেছে;
আগামীকালের দিনটিতে হয়ত আপনি না-ও পৌছতে পারেন;
কিন্তু আজকের দিনটি আপনার জন্য সুতরাং যা করার আজই করে নিন।”
[আল-বায়হাক্বী, আল-যুহদ আল-কাবীর, পৃ ১৯৭]
“আমি সেসব মানুষদের (সালাফদের) দেখেছিলাম তারা তাদের দিরহাম ও দিনারের (অর্থাৎ, তাদের টাকার) চেয়ে সময়ের প্রতি অনেক বেশি যত্নবান ছিলেন।”
— আল-হাসান আল-বাসরী (রহিমাহুল্লাহ)
[আয-যুহদ, আবদুল্লাহ বিন আল-মুবারাক, পৃ ৫১]
এক ব্যক্তি ইমাম আল-হাসান আল-বাসরীর কাছে এসে বললো: “আমি আপনার সাথে ধর্ম নিয়ে বিতর্ক করতে চাই।”
তিনি উত্তর দিলেন: “আমি আমার ধর্ম সম্পর্কে জানি। আপনি যদি আপনার ধর্মকে হারিয়ে ফেলে থাকেন তাহলে বাইরে যান এবং খুঁজতে শুরু করুন।”
[আশ-শারি’আহ, আল-আজুররি, পৃ ৫৭]
এক ব্যক্তি ইমাম আল-হাসান আল-বাসরীর (রাহিমাহুল্লাহ) কাছে এসে বললো, “হে আবু সা’ঈদ, আমি আপনার কাছে আমার অন্তরের কাঠিন্যের ব্যাপারে অভিযোগ করছি।”
তিনি উত্তর দিলেন, “যিকিরের (আল্লাহর স্মরণ) মাধ্যমে অন্তরকে নরম করো। অন্তরে আল্লাহর স্মরণ যত কম হয়, ততই তা কঠিন হয়ে যায়, কিন্তু কোন ব্যক্তি যখন আল্লাহকে স্মরণ করে তার হৃদয়ের কাঠিন্য বদলে নরম হয় যেমন করে আগুনে নরম হয়ে গলে যায় তামা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলাকে স্মরণের (যিকির) মতন আর কোন কিছুই হৃদয়ের কাঠিন্য দূর করে তাকে নরম করতে পারে না। অন্তরের জন্য নিরাময় ও ঔষধ হলো আল্লাহর যিকির। ভুলে যাওয়া একটি রোগ এবং এই রোগের উপশম আল্লাহকে স্মরণ করা।”
[ঈমানী দুর্বলতা : শাইখ মুহাম্মাদ সালিহ আল-মুনাজ্জিদ, পৃষ্ঠা ৯৩]
নিকৃষ্ট তো সেই মৃতব্যক্তির পরিবারের মানুষগুলো, যারা মৃত মানুষটির জন্য কান্নাকাটি করে অথচ তার রেখে যাওয়া ঋণ পরিশোধ করে না।”
— আল-হাসান আল-বাসরি
[জায ফিহি কালাম ‘আলা হাদিস : ইয়াত্তাবিউ আল-মাইয়্যিতা সালাসান, পৃ ২৪]
কম বয়সে কোন কিছু শেখার প্রভাব অনেকটা পাথরের উপরে খোদাই করে লেখার মতন।”
— ইমাম আল-হাসান আল-বাসরি (রাহিমাহুল্লাহ)
[বাহজাত আল-মাজালিস, ১/১০৯]
”হে আদমের সন্তানেরা! পৃথিবীর মাটির উপরে যতক্ষণ ইচ্ছা করে হেঁটে নাও কেননা খুব শীঘ্রই সেটা তোমার কবরে পরিণত হয়ে যাবে। মায়ের গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসার পর থেকে তো তোমার জীবনের আয়ু কমে যাওয়াকে তুমি ঠেকিয়ে রাখতে পারনি।”— ইমাম আল-হাসান আল-বাসরি (রাহিমাহুল্লাহ)[আল-হিলইয়াহ, ২/১৫৫]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন