শুক্রবার, ১০ জুলাই, ২০১৫

ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রঃ) এর উদ্ধৃতি (ইসলামি কলাম)

ইমাম আহমাদ তার হাদিসের ছাত্রদেরকে তাদের কালির-দোয়াত হাতে আসতে দেখে বলেন,
“এগুলো হলো ইসলামের লণ্ঠন।”
[আল-খাতিব আল-বাগদাদী, আল-জামি লি’আখলাক আল-রাওয়ি, অনুচ্ছেদ: ৫১২]


​​ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল বলেন:
আশ-শাফিঈ একদিন আমাকে তার মজলিশে দেখতে পেলেন, আমার জামায় কালির দাগ ছিলো যা আমি তার কাছ থেকে লুকাতে চাইছিলাম।
তিনি বললেন, “যুবক, তুমি কী লুকাতে চাইছো? জামায় কালির দাগ তো একটি মহৎ ব্যাপার: সাধারণ দৃষ্টিতে এটি কালো, কিন্তু অন্তর্দৃষ্টিতে তা হলো সাদা (জ্ঞানের আলোময়)”
[আল-খাতিব আল-বাগদাদী, আল-জামি লি’আখলাক আল-রাওয়ি, অনুচ্ছেদ: ৫০৮]



ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বলকে একবার বলা হয়েছিলো, “আপনি ইসলামের জন্য যে ভালো কাজগুলো করেছেন তার উত্তম প্রতিদান আল্লাহ আপনাকে দান করুন।”
তিনি বললেন, “বরং আল্লাহ ইসলামের মাধ্যমে আমার কল্যাণ করেছেন। আমি আবার কে? আমি আবার কী?”
[ইমাম আয-যাহাবী, সিয়ার আ’লাম আন নুবালা, ১১/২২৫]


ইবরাহিম আল-হারবি বলেন, “আমি আহমাদকে (আহমাদ ইবনে হাম্বল) বলতে শুনেছি:
“আপনি যদি আকাঙ্ক্ষা করেন আপনি যা ভালোবাসেন তার উপরে যেন আল্লাহ আপনাকে অধিষ্ঠিত রাখেন, তাহলে আল্লাহ যা ভালোবাসেন আপনি তার উপরে অধিষ্ঠিত থাকুন। আর ভালো তো রয়েছে সেই ব্যক্তির মাঝেই যিনি নিজের মাঝে কোন ভালো দেখতে পান না।”
[আল-আদাবুশ-শারি’আহ (২/৩১), ইবনে মুফলিহ]


”জ্ঞানের ভিত্তি হলো মহান আল্লাহর প্রতি ভয় (তাকওয়া)।”
— ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ)


কোন মানুষ যদি নিজের সম্পর্কে জ্ঞান রাখে, তাহলে অন্যদের প্রশংসা তার কোন উপকারে আসবে না।”
— ইমাম আহমাদ ইবনে হানবল (রাহিমাহুল্লাহ)
[আনিস আল-ফুদালা, ১১/২১১]


ইমাম আহমাদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন:
“কোন ব্যক্তি যদি আপনাকে অন্য কারো পক্ষ থেকে সালাম পৌঁছে দেয়, তাহলে উত্তরে বলা উচিত :
‘আলাইকা ওয়া ‘আলাইহি সালাম।”
[আদাব শারিয়্যাহ, ১/৪৭৫]


“খাবার এবং পানির চাইতেও মানুষের জন্য জ্ঞান বেশি দরকার, কেননা খাবার এবং পানি তাদের দিনে একবার বা দুইবার প্রয়োজন হয়, কিন্তু জ্ঞান প্রয়োজন তাদের প্রতিটি নিঃশ্বাসেই।”
— ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ)
[মিফতাহ দার আল-সা’আদাহ, ১/৬৫-৬৬]


“সমস্ত কিছুতেই একটি রাহমাত থাকে। অন্তরের উপর রাহমাত হলো সর্বশক্তিমান, সকল ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহর উপরে খুশী থাকা।”
— ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ)
[মানাকিব আল ইমাম আহমাদ — ইবনে আল জাওযি, পৃ ২৭


আমার সেরা দিনটি হলো যেদিন জেগে উঠে খাবারের তাকগুলোকে শূণ্য পাই,
সেই দিনটির জন্য আল্লাহর উপর আমার নির্ভরতা (তাওয়াক্কুল) পরিপূর্ণ থাকে।”
— ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ)
[মৃত্যু, ২৪১ হিজরী, বাগদাদ]


ইমাম আহমাদ (রাহিমাহুল্লাহ) তার স্ত্রী উম্মু সালিহ পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবার পর তার প্রশংসা করে বলেছিলেন, “ওয়াল্লাহি, আমরা ৩০ বছর একইসাথে ছিলাম কিন্তু একটি বারের জন্যও আমাদের মাঝে কোন তর্ক হয়নি।”
তাকে প্রশ্ন করা হলো, “এটা কীভাবে সম্ভব? মানে আমরা বলতে চাচ্ছি, আপনাদের দু’জনের এই শক্তিশালী বন্ধন ও পারস্পরিক সুসম্পর্কের গোপন রহস্য কী ছিলো?”
তিনি খুব সুন্দর করে উত্তরটি দিলেন, “যখন আমার স্ত্রী আমার উপরে অসন্তুষ্ট হতো এবং আমার সাথে তর্ক করতে চাইত, আমি নিশ্চুপ থাকতাম। আবার যখন আমি তার উপরে অসন্তুষ্ট হতাম এবং তর্ক করতে যেতাম, সে নিশ্চুপ থাকত।”
[আল-খাতিব আল বাগদাদী, তারিখ বাগদাদ, ১৬/৬২৬]



একদিন ইমাম আহমাদকে তার ছেলে প্রশ্ন করলেন, “বাবা, আমরা কবে শান্তি পাবো?”
তিনি (রাহিমাহুল্লাহ) উত্তর দিলেন, “জান্নাতে আমাদের প্রথম পদচিহ্নটি রাখার মূহুর্তটি থেকেই।”



একদিন ইমাম আহমাদের ছেলে আব্দুল্লাহ তাঁকে বললেন, “আব্বা, আমাকে উপদেশ দিন।”
তিনি উত্তর দিলেন, “বাবা, সবসময় ভালো নিয়্যাত রাখবে। তুমি যতক্ষণ ভালো কাজের নিয়্যাত রাখবে, ততক্ষণ ভালো অবস্থায় থাকবে।”
[আল আদাব আশ-শারিয়্য্যাহ; ১/১০২]


আপনি যদি চান যে আপনি যা ভালবাসেন তা থেকে যেন আল্লাহ আপনাকে কখনো বঞ্চিত না করেন,
তাহলে সবসময় সেগুলোর উপর কায়েম থাকুন যেগুলো আল্লাহ ভালবাসেন।”
—- ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ).



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন