শুক্রবার, ১০ জুলাই, ২০১৫

স্ত্রীর শরীরের মাংস খাওয়া

স্ত্রীর শরীরের মাংস খাওয়া নিয়ে অনলাইন মিডিয়ায় বেশ ধুন্ধুমার চলছে। গত দু-তিনদিন ধরে ন্যাশনাল ইন্টারন্যাশনাল অনেক সুশীল মিডিয়া খবর প্রকাশ করছে যে, সউদি আরবের প্রধান মুফতি শায়েখ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ সম্প্রতি ফতোয়া দিয়েছেন যে, ‘স্বামী ক্ষুধার তাড়নায় স্ত্রীর শরীরের যে কোনো অঙ্গের মাংস খেতে চাইলে ইসলামি শরিয়ত তাকে সেই অনুমতি দিয়েছে।এটা একজন মুসলিম নারীর জন্য সম্মানের এবং তার পতিভক্তিরই অমূল্য প্রকাশ।
মানুষের হারামিপনার একটা সীমা থাকা দরকার!
এবার আসুন ঘটনার ভেতরে প্রবেশ করি। আজ সউদি আরবের ‘আল আরাবিয়্যাহ’ নিউজপেপার তাদের অনলাইন এডিশনে এই সংবাদটিকে প্রধান মুফতির বরাত দিয়ে সম্পূর্ণই ভুয়া এবং বানোয়াট বলে নিউজ প্রকাশ করেছে। কাল রাতে সংবাদটি প্রথমে দেখে অন্য আর সবার মতো আমিও ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়েছিলাম। আজ কেফায়েত ভাই আল আরাবিয়্যার নিউজটি দেখালেন এবং কারা এই ভুয়া নিউজটি তৈরি করেছে তারও একটা স্ট্রাকচার দেখালেন।
নিউজটি প্রথমে প্রকাশ করে ইরানের শিয়াদের একটি ওয়েবসাইট আলআলামwww.en.alalam.ir/news/1693494 এবং লেবাননের উগ্রপন্থী সশস্ত্র শিয়াদল হিজবুল্লাহ নিয়ন্ত্রিত ওয়েবসাইট জমহুরিয়্যাহ www.jomhouria.com/art28944। এছাড়াও সংবাদটি প্রকাশ পায় ইহুদি নিয়ন্ত্রিত শোয়েবাত www.shoebat.com/…/the-mufti-of-saudi-arabia-passes-a-fatwa…/ ওয়েবসাইটে।
এসব ওয়েবসাইটে তারা যদিও দাবি করেছে, মিডলইস্টের কয়েকটি নিউজপেপারের সংবাদের ভিত্তিতে তারা এই তথ্য দিচ্ছে, কিন্তু তারা মিডলইস্টের কোনো ওয়েবসাইট বা নিউজপেপারের বরাত দেয়নি। সুতরাং সর্বোতভাবেই ধরে নেয়া যায় এটি একটি ভুয়া সংবাদ।
এবার ভুয়া সংবাদের নেপথ্যে যাওয়া যাক।
এসব ওয়েবসাইট এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে কেন ভুয়া সংবাদ ছড়াবে? কারণ খুবই সিম্পল। সম্প্রতি সউদি আরবের নেতৃত্বে উপসাগরীয় মুসলিমশক্তি ইয়েমেনের হুতি শিয়াদের উচ্ছেদে আক্রমণ শুরু করেছে। স্বভাবতই ইরানি শিয়া সম্প্রদায় তাদের ‘মুখ ফোলানো’ ভাইদের (হুতি শিয়ারা তাদের মুখের মধ্যে কী যেন একটা রাখে সবসময়; এতে তাদের মুখ সবসময় ফুলে থাকে) রক্ষা করার জন্য অস্ত্রশস্ত্র যেমন যোগান দিচ্ছে তেমনি তাদের জন্মজাত স্বভাব অনুযায়ী মিথ্যা সংবাদ ছড়িয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিভ্রান্তিও ছড়িয়ে দিচ্ছে। এই বিভ্রান্তিমূলক ভুয়া খবর তারই জ্বলন্ত প্রমাণ।
ভবিষ্যতে এমন আরও মুখরোচক গুজব রটবে বলেই ধারণা। আর কূপমণ্ডুক বিশ্বমিডিয়া এবং বাংলাদেশের পুরুষত্বহীন মিডিয়াও তা গোগ্রাসে পাঠকদের গেলাবে। ইতিহাসে ধর্ম নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে যতোগুলো রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়েছে, তার অধিকাংশের মূলহোতা ছিলো এই শিয়ারা। খেলাফতে রাশেদা থেকে আজ পর্যন্ত। ইতিহাসের গলি-ঘুঁপচিতে হাঁটলে এর সত্যতা পাওয়া যাবে হাজারও।
শিয়া আর ইহুদিদের মাঝে তফাৎ খুবই সামান্য। দুটোই যেমন সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে সত্য বানাতে উস্তাদ তেমনি ইসলামের বিরুদ্ধেও তাদের অবস্থান প্রায় একই সমান্তরালে। বর্তমানে বাইরে তারা একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে বড় বড় হুমকি ধমকি ডেলিভারি দিলেও তলে তলে তারা ইসলামের ক্ষতিসাধনে জানি দোস্ত। এই দু বিধর্মী শক্তি কখনোই ইসলামের মন্দ বৈ ভালো চায়নি। একদল সরাসরি অমুসলিম শত্রু, অন্যদল বেশধর্মী শত্রু।
সুতরাং আপনাকেই ঠিক করতে হবে কে আপনার জন্য বড় হুমকি- মোসাদ নাকি রেডিও তেহরান!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন