শুক্রবার, ১০ জুলাই, ২০১৫

আবদুল্লাহ বিন মুবারাক এর কিছু বানী

“হয়ত একটি ​ইমাম আবদুল্লাহ ইবনে মুবারাকের (রাহিমাহুল্লাহ) প্রতিবেশী ছিলো একজন ইহুদি। ইমাম নিজের সন্তানদেরকে খাওয়ানোর পূর্বেই সর্বদা সে ইহুদিকে খাওয়াতেন এবং প্রথমে তাকে কাপড় দেয়ার পর সন্তানদের কাপড়-চোপড় দিতেন।
এক সময় কিছু লোক ইহুদি লোকটিকে বলেছিলো, “আমাদের কাছে তোমার বাড়িটি বিক্রি করে দাও।” সে উত্তর দিয়েছিলো, “আমার বাড়ির দাম দু’হাজার দিনার, এক হাজার বাড়ির মূল্য এবং আরেক হাজার ইবনে মুবারাক প্রতিবেশী হবার কারণে।”
একথা শুনে আবদুল্লাহ ইবনে মুবারাক পরমানন্দে চিৎকার দিয়ে বলেন, “হে আল্লাহ! তাকে ইসলামের পথ দেখান।” তারপর সেই ব্যক্তি আল্লাহর ইচ্ছায় ইসলাম কবুল করেছিলো।

[লা তাহযান : ড আইয আল কারনি, পৃ ১৪৮]ক্ষুদ্র কাজ অনেক বিশাল হয়ে যায় কাজটির পেছনে করা নিয়্যাতের কারণে এবং হয়ত অনেক বড় একটা কাজ একদমই তুচ্ছ হয়ে যায় কাজটির পেছনে করা নিয়্যাতের কারণে।”
— আবদুল্লাহ ইবনে মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)
[জামি’ উলুম, পৃ ১৬]

আবদুল্লাহ ইবনে আল-মুবারাক বলেন:
“কাপড়ের উপরে কালি হলো আলেমদের জন্য সুগন্ধির ন্যায়।”
[আল-খাতিব আল-বাগদাদী, আল-জামি লি’আখলাক আল-রাওয়ি, অনুচ্ছেদ: ৫০৯]


​​”যদি কোন ব্যক্তি তার ভাইয়ের মাঝে এমন কিছু দেখে যা সে অপছন্দ করে, সে​ গোপনে ​ভাইটিকে নির্দেশনা দিবে এবং​ একান্তেই ​তাকে নিষেধ করবে। অন্যদিকে, তার কারণে সে পুরষ্কৃত হবে ভাইয়ের দোষ লুকিয়ে রাখার জন্য এবং মন্দ কাজ থেকে তাকে নিষেধ করার জন্য। কিন্তু এখনকার দিনে, যখন কোন ব্যক্তি তার ভাইকে এমন কিছু করতে দেখে যা সে অপছন্দ করে, সে তাকে রাগিয়ে দেয় এবং তার দোষ প্রকাশ করে দেয়।”
— ইমাম আবদুল্লাহ বিন মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)
[রাউদাতুল ‘উক্বালা, পৃ ১৯৭]


“আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জন করার চেয়ে উত্তম আর কিছু নেই। এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য জ্ঞানার্জন করলে তিনি যেমন ঘৃণা করেন তা অন্য কিছুতে করেন না।
— আবদুল্লাহ ইবনে মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)
[আদাব শারিয়্যাহ, ২/২১৭]


“আমি সিরিয়াতে একটি কলম ধার নিয়েছিলাম এবং কলমটি যার তাকে ফেরত দিতে ভুলে গিয়েছিলাম। যখন আমি মারভেতে (ইরানে অবস্থিত) এসে পড়েছিলাম, তখন খেয়াল করলাম কলমটি আমার সাথেই রয়ে গেছে। তাই আমি সিরিয়ায় ফিরে গিয়ে যার কলম তাকে ফেরত দিয়েছিলাম।”
— ইমাম আবদুল্লাহ বিন মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)
[খতিব তারীহ, ১০/১৬৭]


“ততক্ষণ পর্যন্ত যেকোন জ্ঞানের মাধ্যমে কেউ উন্নত হতে পারে না, যতক্ষণ পর্যন্ত সুন্দর আচরণের মাধ্যমে সে তার জ্ঞানকে সৌন্দর্যময় করে।”
— আব্দুল্লাহ ইবনে আল-মুবারাক

[আদাব শারি’ইয়্যাহ, ৪/২০৮]


“আলাহ নবী সুলাইমানকে (আলাইহিস সালাম) জ্ঞান এবং ক্ষমতা থেকে যেকোন একটি বেছে নিতে বলেছিলেন। তিনি ক্ষমতার চাইতে জ্ঞানকে প্রাধান্য দিয়ে তা বেছে নিয়েছিলেন। যেহেতু সুলাইমান (আ) জ্ঞান চেয়েছিলেন, আল্লাহ তাকে ক্ষমতাও দান করেছিলেন।”
— আব্দুল্লাহ ইবনে আল-মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)

[জামি’উল বায়ান আল-‘ইলম ওয়া ফাদলিহি, ভলিউম-১, পৃ -১১৪]


“আমাদের অন্তরগুলো যদি শুদ্ধ হতো, তাহলে আল্লাহর স্মরণে (যিকিরে) কখনো আমরা ক্লান্তিবোধ করতাম না।”
— আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)
[আয-যুহদ : আল-কানয, ১/২১৮]

“কোন ব্যক্তি যতক্ষণ জ্ঞানার্জনের পথে থাকে ততক্ষণ সে জ্ঞানী, যখনই সে নিজেকে আলেম বলে মনে করে তখনই সে জাহেল হয়ে যায়।”
— আব্দুল্লাহ বিন মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)
[আল-মুজালাসাহ, পৃ ৫৬]


নু’আইম ইবন হাম্মাদ বলেনঃ
আবদুল্লাহ ইবন মুবারাককে (রাহিমাহুল্লাহ) একবার প্রশ্ন করা হয়েছিলো, “হে আবু আবদ আর-রাহমান, আপনি প্রায়ই ঘরে একা একা কেন বসে থাকেন?”
তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, “আমি কি একা থাকি? আমি তো থাকি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তার সাহাবাদের সাথে।” (অর্থাৎ তিনি হাদিস অধ্যয়ন করতেন)
[ইবন ‘আসাকির, তারিখ দিমাশক, ৩২/৪৫৮]

আমি তিরিশ বছর ব্যয় করেছি আদব শিখতে এবং বিশ বছর ব্যয় করেছি জ্ঞানার্জনে।”
— আব্দুল্লাহ বিন মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ) [৭৩৬-৭৯৬]






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন