বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই, ২০১৫

যাকাত মেলা কি শরিয়তসম্মত ?

(তৃতীয় বারের মতো আগামী শুক্রবার থেকে ঢাকায় শুরু হচ্ছে যাকাত মেলা। ১২ জুন সকালে গুলশান শ্যুটিং ক্লাবে দুই দিনব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করবেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
মেলায় যাকাতের গুরুত্ব-তাৎপর্য, বিধি-বিধান, যাকাতের হিসাব নিরূপণ, যাকাতের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন ও মানব সম্পদ উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্ট, মুসলিম এইড বাংলাদেশ, ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশ এবং এক্সিম ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড উদ্যোগে মেলায় চারটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও মেলায় থাকবে উন্মুক্ত আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব।
যাকাত মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮ পর্যন্ত চলবে।
মেলায় যাকাত কনসালটেশন ডেস্ক ছাড়াও যাকাত গ্রহীতাদের জন্য পণ্যসামগ্রী, পোশাক, উপহার সামগ্রী ও বইয়ের স্টল।
আজ বুধবার সকালে ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়নে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে যাকাত ফেয়ার সর্ম্পকে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন মেলার সাংগঠনিক কমিটির সদস্য সচিব ও সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্টের জেনারেল ম্যানেজার খন্দকার জাকারিয়া আহমেদ।এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, এক্সিম ব্যাংকের এসভিপি একিউএম ছফিউল্লাহ, মুসলিম এইডের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান ইকবাল আহমেদ এবং ইসলামিক রিলিফের শফিউল আযম।)
এবার দেখা যাক যাকাত মেলা করা কতটা সঠিক হচ্ছে । আসলে এভাবে যাকাত মেলা করা হারাম ও কুফরি।
১) ইসলামে যাকাত ফরয ,ইসলামে মেলা হারাম (আইয়ামে জাহেলিয়াতে কাফিরেরা ওকাজ মেলা করত)
২) যাকাত ব্যক্তিগতভাবে ফরয, আর যাকাত দেবার জন্য পূর্বে ৮ টি খাত থাকলেও বর্তমানে তিনটি প্রধান খাত। ক) গরীব আত্মীয় স্বজন খ)গরীব প্রতিবেশী গ) তলিবে ইলম। এখানে সকল যাকাত দাতা জানেন উনার কোন আত্মীয় গরীব,কোন প্রতিবেশী গরীব, এবং কোন তলিবে ইলম কোথায় পড়ছেন। , কিন্তু মেলায় যাকাত গ্রহিতা এলে তা চিহ্নিত করার উপায় নেই। ফলে ভুল জায়গায় যাকাত আদায় করলে যাকাত আদায় হবে না।
৩) যাকাত পালন ফরয। কোন ফরয ইবাদত পালন করতে গিয়ে হারাম কবিরা গুনাহ করা যাবে না , কিন্তু এই মেলায় বেপর্দা মহিলা-পুরুষের সমাগম হবে যা হারাম ও কুফরি।
৪) যাকাত যতগুলো খাতে দেয়া যায় সকলকেই পরহেযগার মুত্তাকি হতে হবে। এখন কারো আত্মীয়, প্রতিবেশী হলেই কেবল জানা যায় কে পরহেযগার বা মুত্তাকি, আর মেলায় এসে কেউ যাকাত চাইলে সে হবে সওয়ালকারী। পরহেযগার, মুত্তাকিরা কেউ মেলায় যাবেন না।
৫) মহান আল্লাহ পাক কিন্তু বলেননি “ তোমরা ধনীরা গরীবদের যাকাত দিতে দাও”। বরং আল্লাহ পাক ইরশাদ মুবারক করেছেন, “ মানুষ যেন উনাদের যাকাত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লম উনার কাছে পৌছায়” অথচ আমরা সবাই জানি তিনি যাকাত খেতেন না। এর অর্থ পরবর্তীতে যাকাত এমন জনের কাছেই পৌছাতে হবে যিনি নায়েবে নবী হবেন, পহেযগার ,মুত্তাকি হবেন। কারণ তিনি বন্টনের মধ্যে ন্যায় বিচার করবেন, কিন্তু সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্ট, মুসলিম এইড বাংলাদেশ, ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশ এবং এক্সিম ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড এদের সকলের কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ। সব ফাসিক ফুজ্জার।
৬) যার কাছে যাকাত পৌছানো হয় উনার দায়িত্ব যাকাত প্রদানকারীর জন্য দোয়া করা,মেলায় চলবে হারাম ছবি তোলা, হাত তালি, হারাম বেপর্দা । ফলে কে কার জন্য দোয়া করবে?
৭) বাথরুমে কুর‍আন তিলওয়াত জায়িয নেই। যাকাতের আলোচনা কমপক্ষে কোন সেমিনার কক্ষে হতে পারতো, যেখানে সকল খেলাধুলা ইসলামে হারাম সেখানে শুটিং ক্লাবে যাকাতের আলোচনা, সত্যিই অবাক করার বিষয়।
৮) যদি কুরবানীর পশু গুলিকেও সম্মান করতে হয় তবে যাকাত ব্যবস্থাকে কতটা সমানের চোখে দেখতে হবে তা বলাই বাহুল্য। , যারা যাকাত ব্যবস্থা নিয়ে মেলার আয়োজন করেছে সম্মানিত শরীয়ত অনুযায়ী তারা মুসলমান আছে কেনা সে বিচারের ভার পাঠকের।
যারা যাকাতের মত ফরয বিষয়কে তুচ্ছ্য তাচ্ছিল্য করে তাদের কি করা উচিত ?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন