“সামাজিকভাবে হিন্দুত্ববাদ শিক্ষা নিয়েছে পূর্বতন দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইসরাইল থেকে। জাতের ভিত্তিতে এক একটি মহল্লা ভাগ হয়ে যাবে। এবারের দাঙ্গার (২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গা) আহমদাবাদে কোনো মিশ্র এলাকা আর রইলো না। হিন্দু আহমদাবাদ (অচিরেই যার নাম বদলানো হবে ও একটি নতুন শহর হিসেবে ঘোষিত হবে, যে শহরে বিপুল টাকা ঢালা হবে, ও গরিব মানুষের বাসস্থানগুলোকে ভেঙে দিয়ে সুন্দর হর্ম্যশ্রেণী গড়ে উঠবে অনেকটা নতুন দিল্লীর কায়দায়) আর মুসলমান আহমদাবাদ, যে শহরটিকে ধীরে ধীরে বাসের অযোগ্য করে তোলা হবে পুরোনো দিল্লীর মতো। এভাবে প্রথমে ঘেটোকরণ এবং তারপর ধীরে ধীরে মুসলমানদের বাসের অযোগ্য একটি অবস্থানে ঠেলে দিয়ে তাদেরকে বিতাড়নের প্রচেষ্টা নেয়া হবে।” (সূত্র: ভারতীয় সাংবাদিক সৌমিত্র বসুর প্রবন্ধের অংশবিশেষ, ভারতীয় ইতিহাসবিদ গোলাম আহমদ মোর্তজা রচিত ‘ইতিহাসের এক বিস্ময়কর অধ্যায়’ গ্রন্থের ৬০ পৃষ্ঠা থেকে উদ্ধৃত)
অর্থাৎ ভারতের মুসলমানদের একঘরে করেছে সেদেশের হিন্দু সমাজ ও রাষ্ট্রযন্ত্র। ভারতের মুসলিম এলাকাগুলোর উন্নয়নে সেদেশের সরকার কর্তৃক কোনো অর্থ খরচ করা হয় না। ভারতের মুসলিম এলাকাগুলোতে ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-অবকাঠামো তো দূরের কথা, পয়ঃনিষ্কাশন কিংবা রাস্তাঘাটের মতো ন্যূনতম নাগরিক সুবিধাগুলোও দেয়া হয় না। যার ফলে ভারতের মুসলিম এলাকাগুলো বসবাসের অযোগ্য স্থানে পরিণত হয় এবং সেসব স্থানে বসবাসকারী মুসলমানরা স্বাভাবিকভাবেই ভারতের জাতীয় জীবনের মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে শিক্ষা-চাকরি থেকে বঞ্চিত থাকে।
ভারতবর্ষের মুসলমানদের পিছিয়ে রাখার স্বার্থে তাদেরকে ‘একঘরে’ করার নীতি হিন্দুদের বহু পুরাতন। আজ থেকে নয়, সেই ব্রিটিশ আমলে যখন মুসলমানরা তাদের ক্ষমতা হারিয়েছিল, তখন থেকেই ভারতবর্ষের মুসলমানদের ‘একঘরে’ করার, চাকরি-শিক্ষা-বাসস্থানসহ সমস্ত নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রাখার নীতি হিন্দুরা গ্রহণ করেছিল, যেন মুসলমানরা আর কখনোই ভারতবর্ষের শাসনক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে না পারে। নাউযুবিল্লাহ!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন