ডা. জাকির নায়েক মূলত সাউথ আফ্রিকার ডা. আহমেদ দীদাতের উত্তরসূরী। আর আহমেদ দীদাত একজন সত্যিকার ইসলামের দায়ী। তার সংস্পর্শ পেয়ে ডা. জাকির নায়েক যখন ডাক্তারী পেশা ছেড়ে দ্বীন ইসলামের প্রচার প্রসারের কাজে আত্মনিয়োগ করেন, তখন বিধর্মীদের ইসলামের প্রতি উত্থাপিত প্রশ্নের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিয়ে বিশ্ব মুসলিমের হৃদয়ে জায়গা করে নিলেন। ডা. সাহেব এসব জবাব দিতে বিভিন্ন ধর্ম গ্রন্থের রেফারেন্স দিয়ে ইসলামের সৌন্দর্যকে উপস্থাপন করার সাথে সাথে অন্যান্য ধর্মের দূর্বলতাকেও তুলে ধরেন। তার এ যোগ্যতাকে অবশ্যই ধন্যবাদ জানাতে হয়। তার মধ্যে বিশেষভাবে যে গুণটি লক্ষ্যণীয় ছিল তা হচ্ছে, সে কালে তাকে যখন কোনো ইলমী গবেষণালব্ধ বিষয়ে বিশেষ করে মতানৈক্যজনিত বিষয়ে প্রশ্ন করা হতো, তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতেন- “এটা আমার বিষয় নয়, আমাকে আমার বিষয়ে প্রশ্ন করুন”। এটাই ছিল শাইখ আহমেদ দীদাতের শিক্ষা ও অনুসরণ। ডা. সাহেব যেহেতু ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া-লেখা করেছেন সে কারণে তিনি ইংরেজি ভাষায় যথেষ্ট পারদর্শী। মিডিয়াতে তার এ যোগ্যতা ও মেধা দিয়ে আকর্ষণীয় ভাষায় ইসলামের পক্ষে এহেন লেকচারই মূলত তার দেশে-বিদেশে সুনাম ছড়িয়ে পড়ার মূূল কারণ। সত্য বলতে কি, ডা. সাহেবের এ খেদমতটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় ছিল। এ ব্যাপারে আমার দ্বিমত নেই। কিন্তু ডা. সাহেব ৮-১০ বৎসর পর তার উস্তাদের এ নীতি ধরে রাখতে পারলেন না। তিনি বিভিন্ন মতবিরোধযুক্ত মাসআলায় জড়িয়ে পড়লেন শুধু তা নয়; বরং শ্রোতাদেরকে তার নিজস্ব মতের উপর চলতে আহ্বান করতে থাকেন। ইসলামের বিজ্ঞ মনীষীদের মতামতকে সহীহ হাদীস বিরোধী আখ্যা দিয়ে ছুড়ে ফেলে দিলেন। শিয়া মতবাদ ও লা-মাযহাবীদের দর্শন দ্বারা তার গবেষণা ও চিন্তাধারা প্রভাবিত হলো। ফলে তিনি মাযহাব ও মাযহাবের ইমামগণের ব্যাপারেও কটুক্তি শুরু করে দিলেন। তার গবেষণার ফলাফল হয়তো শিয়াদের সাথে বা অন্য কোন ভ্রান্ত দলের মতাদর্শের সাথে একাকার হয়ে পড়লো। বিশেষভাবে কথিত আহলে হাদীসদের বিতর্কিত মাসআলাগুলোই ডা. জাকির নায়েকের নিজস্ব মতামত হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। তখনই পূর্ব থেকে যেসব আলেম-উলামা ডা. সাহেবের ব্যাপারে চুপষে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন, তাদের নিকট ডা. সাহেবের আসল চেহারা উন্মোচিত হতে লাগলো। চতুর্দিক থেকে ডা. সাহেবের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা হলো। আরব বিশ্বে তার বিরুদ্ধে বই লেখা হলো। বাংলাদেশেও অনেক পুস্তিকা প্রকাশ পেল। ডা. সাহেব এখন স্পষ্টভাবে লা-মাযহাবীদের উকালতী করছেন। মাযহাবের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করেছেন।
আরো বিস্তারিত জানতে হযরতুল আল্লাম মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ দা: বা: এর লিখিত “ডা. জাকের নায়েক ও আমার মূল্যায়ন” বইটি সংগ্রহ করুন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন