ইসলামী অর্থনীতিতে জাকাত অত্যন্ত কার্যকরী ভুমিকা পালন করে। এটা ধনীদের পক্ষ থেকে গরীবদের প্রতি কোন অনুগ্রহ নয়। যাকাতের কয়েকটি প্রকার রয়েছে, তার অন্যতম হল সদকাতুল ফিতর। ঈদুল ফিতরের দিনে কোন ব্যক্তি নিসাব পরিমান সম্পদের মালিক হলে তাকে এই সদকাতুল ফিতর আদায় করতে হয়। এটা একটি ওয়াজিব ইবাদত। উল্লেখ্য যে, যাকতের নিসাবের ক্ষেত্রে ঘরের আসবাবপত্র ইত্যাদি গণ্য হয় না। বরং এগুলি ব্যতীত নিসাবের মালিক হওয়া এবং তা পূর্ণ বর্ষ স্থায়ী হওয়া জরুরী। পক্ষান্তরে সদকাতুল ফিতরের ক্ষেত্রে পরিবারের অত্যাবশ্যকীয় আসবাব ব্যতীত অন্যান্য আসবাব, সৌখিন দ্রব্য সামগ্রী ইত্যাদি মূল্য হিসেবে গণ্য করতে হয়।
সদকাতুল ফিতর সংক্রান্ত হাদীসগুলি অনুসন্ধান করে আমরা দেখতে পাই যে, সেখানে যব, খেজুর, কিসমিস, গম, পনিরের কথা বলা হয়েছে। আলোচ্য বস্তুগুলির মধ্যে গম ব্যতীত অন্যগুলি দ্বারা আদায় করলে পূর্ণ এক ‘সা’ আদায় করতে হয়। শুধুমাত্র গমের ক্ষেত্রে অর্ধ ‘সা’। ৮০ তোলা সের হিসেবে ইসলামী আইন শাস্ত্রে এইগুলোর হিসেব লিপিবদ্ধ আছে। সে হিসেবে পূর্ণ এক ‘সা’ এর পরিমান হল ৩ সের ৯ ছটাক। বর্তমান কিলোগ্রামের হিসেব বের করলে তার পরিমান দাঁড়ায় এক ‘সা’ সমান ৩.৩২৪ কেজি এবং অর্ধ ‘সা’ সমান ১.৬৬২ কেজি। যদি আমাদের দেশে সহজ লভ্য উন্নতমানের খেজুর হিসেবে ফিতরা আদায় করি তাহলে তার পরিমাণ হবে বর্তমান বাজার মূল্য ১৩০০ টাকা কেজি হিসেবে ১৩০০৩.৩২৪= ৪৩২১.২০ অর্থাৎ ৪৩২২ টাকা প্রতিজন। মধ্যমমানের খেজুর হিসেবে বর্তমান বাজার মূল্য ৬০০ টাকা কেজি হিসেবে ৬০০৩.৩২৪= ১৯৯৪.৪০ অর্থাৎ- ১৯৯৫ টাকা প্রতিজন। নিম্ন মানের খেজুর হিসেবে বর্তমান বাজার মূল্য ১২০ টাকা কেজি হিসেবে ১২০৩.৩২৪= ৩৯৮.৮৮ অর্থাৎ- ৩৯৯ টাকা প্রতিজন।
পনির বর্তমান বাজার মূল্য ৬০০ টাকা কেজি হিসেবে ৬০০৩.৩২৪= ১৯৯৪.৪০ অর্থাৎ ১৯৯৫ টাকা প্রতিজন। কিসমিস বর্তমান বাজার মূল্য ৪০০ টাকা কেজি হিসেবে ৪০০৩.৩২৪= ১৩২৯.৬০ অর্থাৎ- ১৩৩০ টাকা প্রতিজন। গমের আটা বর্তমান বাজার মূল্য উন্নত ৩৫ টাকা কেজি হিসেবে ৩৫১.৬৬২= ৫৮.১৭ অর্থাৎ- ৫৯ টাকা প্রতিজন। গমের আটা বর্তমান বাজার মূল্য মধ্যম ৩০ টাকা কেজি হিসেবে ৩০১.৬৬২= ৪৯.৮৬ অর্থাৎ- ৫০ টাকা প্রতিজন। গমের আটা বর্তমান বাজার মূল্য নিম্ন ২৪ টাকা কেজি হিসেবে ২৪১.৬৬২= ৩৯.৮৮ অর্থাৎ- ৪০ টাকা প্রতিজন।
মূলত গম দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায়ের ব্যাপক প্রচলন শুরু হয় হযরত আমীর মুআবিয়া (রা:)-এর শাসনামল থেকে। সে যুগে গম ছিল অত্যন্ত মূল্যবান এবং উৎকৃষ্ট মানের খাদ্য। আমাদের দেশে সাধারণত একচেটিয়া গমের হিসেব প্রকাশ ও প্রচার করা হয়। সে হিসেবে এ বছর রাজশাহীতে জনপ্রতি ৫০ টাকা এবং ঢাকায় জনপ্রতি ৬০ টাকা সদকাতুল ফিতর নির্ধারণ করা হয়েছে। এ অনুপাতে আদায় করলে সদকাতুল ফিতর আদায় হবে। তবে সমাজের প্রত্যেকেই যদি স্বীয় সামর্থানুযায়ী সদকাতুল ফিতর আদায় করেন তাহলে অধিক পরিমাণে আদায় করার মাধ্যমে হকদার গরীবরা লাভবান হবেন। এছাড়া হাদীসে বর্ণিত প্রতিটি ব¯ু— দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায় করে সে সুন্নাতের আমল জারী রাখা হবে। কেননা আজ পর্যন্ত কেউ এ কথা বলেননি গম ব্যতীত হাদীসে বর্ণিত অন্যান্য বস্তুকে মাপকাঠি বানিয়ে সদকাতুল ফিতর নির্ধারণ মানসুখ বা রহিত হয়ে গেছে। যেহেতু তা রহিত হয়নি, তাই যারা সামর্থ্যবান তাদের উচিত উচ্চপরিমাণে সদকাতুল ফিতর আদায় করা। এটা ইনসাফের কথা। এই ঈদে যিনি ঈদের বাজার করেছেন লক্ষাধিক টাকার তিনিও দিবেন ৫০ টাকা হারে সদকাতুল ফিতর আর যে মাত্র কয়েক হাজার টাকার বাজার করেছেন তিনিও দেবেন ৫০ টাকা হারে সদকাতুল ফিতর- এটা ইনসাফ হলো না। বিষয়টি নিয়ে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের ভাবতে হবে।
ইসলামের ইতিহাসে এমন নযির পাওয়া বড়ই দুষ্কর এবং দুরূহ ব্যাপার যে, সর্বশ্রেণীর মুসলমান একযোগে সর্বনিম্ন মূল্যের ব¯ু— দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায় করছেন। এ পন্থায় কিছু বৈপরিত্য পরিলক্ষিত হয়। একজন কোটিপতি যার পোষ্য মোট তিনজন তিনি সদকাতুল ফিতর আদায় করছেন ৫০৩=১৫০ টাকা পক্ষান্তরে একজন সামান্য আয়ের মানুষ যার পোষ্য আটজন তিনি সদকাতুল ফিতর আদায় করছেন ৫০৮=৪০০ টাকা। এটা কোনক্রমেই বিবেক গ্রাহ্য হতে পারে না। এ ক্ষেত্রে যদি কোটিপতি ব্যক্তি উন্নত মানের খেজুর হিসেবে আদায় করতেন তাহলে তাকে জনপ্রতি সদকাতুল ফিতর আদায় করতে হতো ৪৩২২ টাকা, তিনজনের জন্য ৪৩২২৩= ১২৯৬৬ টাকা।
আল্লাহ আমাদের যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী আমল করার তাওফীক দান করুন।
সদকাতুল ফিতর সংক্রান্ত হাদীসগুলি অনুসন্ধান করে আমরা দেখতে পাই যে, সেখানে যব, খেজুর, কিসমিস, গম, পনিরের কথা বলা হয়েছে। আলোচ্য বস্তুগুলির মধ্যে গম ব্যতীত অন্যগুলি দ্বারা আদায় করলে পূর্ণ এক ‘সা’ আদায় করতে হয়। শুধুমাত্র গমের ক্ষেত্রে অর্ধ ‘সা’। ৮০ তোলা সের হিসেবে ইসলামী আইন শাস্ত্রে এইগুলোর হিসেব লিপিবদ্ধ আছে। সে হিসেবে পূর্ণ এক ‘সা’ এর পরিমান হল ৩ সের ৯ ছটাক। বর্তমান কিলোগ্রামের হিসেব বের করলে তার পরিমান দাঁড়ায় এক ‘সা’ সমান ৩.৩২৪ কেজি এবং অর্ধ ‘সা’ সমান ১.৬৬২ কেজি। যদি আমাদের দেশে সহজ লভ্য উন্নতমানের খেজুর হিসেবে ফিতরা আদায় করি তাহলে তার পরিমাণ হবে বর্তমান বাজার মূল্য ১৩০০ টাকা কেজি হিসেবে ১৩০০৩.৩২৪= ৪৩২১.২০ অর্থাৎ ৪৩২২ টাকা প্রতিজন। মধ্যমমানের খেজুর হিসেবে বর্তমান বাজার মূল্য ৬০০ টাকা কেজি হিসেবে ৬০০৩.৩২৪= ১৯৯৪.৪০ অর্থাৎ- ১৯৯৫ টাকা প্রতিজন। নিম্ন মানের খেজুর হিসেবে বর্তমান বাজার মূল্য ১২০ টাকা কেজি হিসেবে ১২০৩.৩২৪= ৩৯৮.৮৮ অর্থাৎ- ৩৯৯ টাকা প্রতিজন।
পনির বর্তমান বাজার মূল্য ৬০০ টাকা কেজি হিসেবে ৬০০৩.৩২৪= ১৯৯৪.৪০ অর্থাৎ ১৯৯৫ টাকা প্রতিজন। কিসমিস বর্তমান বাজার মূল্য ৪০০ টাকা কেজি হিসেবে ৪০০৩.৩২৪= ১৩২৯.৬০ অর্থাৎ- ১৩৩০ টাকা প্রতিজন। গমের আটা বর্তমান বাজার মূল্য উন্নত ৩৫ টাকা কেজি হিসেবে ৩৫১.৬৬২= ৫৮.১৭ অর্থাৎ- ৫৯ টাকা প্রতিজন। গমের আটা বর্তমান বাজার মূল্য মধ্যম ৩০ টাকা কেজি হিসেবে ৩০১.৬৬২= ৪৯.৮৬ অর্থাৎ- ৫০ টাকা প্রতিজন। গমের আটা বর্তমান বাজার মূল্য নিম্ন ২৪ টাকা কেজি হিসেবে ২৪১.৬৬২= ৩৯.৮৮ অর্থাৎ- ৪০ টাকা প্রতিজন।
মূলত গম দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায়ের ব্যাপক প্রচলন শুরু হয় হযরত আমীর মুআবিয়া (রা:)-এর শাসনামল থেকে। সে যুগে গম ছিল অত্যন্ত মূল্যবান এবং উৎকৃষ্ট মানের খাদ্য। আমাদের দেশে সাধারণত একচেটিয়া গমের হিসেব প্রকাশ ও প্রচার করা হয়। সে হিসেবে এ বছর রাজশাহীতে জনপ্রতি ৫০ টাকা এবং ঢাকায় জনপ্রতি ৬০ টাকা সদকাতুল ফিতর নির্ধারণ করা হয়েছে। এ অনুপাতে আদায় করলে সদকাতুল ফিতর আদায় হবে। তবে সমাজের প্রত্যেকেই যদি স্বীয় সামর্থানুযায়ী সদকাতুল ফিতর আদায় করেন তাহলে অধিক পরিমাণে আদায় করার মাধ্যমে হকদার গরীবরা লাভবান হবেন। এছাড়া হাদীসে বর্ণিত প্রতিটি ব¯ু— দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায় করে সে সুন্নাতের আমল জারী রাখা হবে। কেননা আজ পর্যন্ত কেউ এ কথা বলেননি গম ব্যতীত হাদীসে বর্ণিত অন্যান্য বস্তুকে মাপকাঠি বানিয়ে সদকাতুল ফিতর নির্ধারণ মানসুখ বা রহিত হয়ে গেছে। যেহেতু তা রহিত হয়নি, তাই যারা সামর্থ্যবান তাদের উচিত উচ্চপরিমাণে সদকাতুল ফিতর আদায় করা। এটা ইনসাফের কথা। এই ঈদে যিনি ঈদের বাজার করেছেন লক্ষাধিক টাকার তিনিও দিবেন ৫০ টাকা হারে সদকাতুল ফিতর আর যে মাত্র কয়েক হাজার টাকার বাজার করেছেন তিনিও দেবেন ৫০ টাকা হারে সদকাতুল ফিতর- এটা ইনসাফ হলো না। বিষয়টি নিয়ে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের ভাবতে হবে।
ইসলামের ইতিহাসে এমন নযির পাওয়া বড়ই দুষ্কর এবং দুরূহ ব্যাপার যে, সর্বশ্রেণীর মুসলমান একযোগে সর্বনিম্ন মূল্যের ব¯ু— দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায় করছেন। এ পন্থায় কিছু বৈপরিত্য পরিলক্ষিত হয়। একজন কোটিপতি যার পোষ্য মোট তিনজন তিনি সদকাতুল ফিতর আদায় করছেন ৫০৩=১৫০ টাকা পক্ষান্তরে একজন সামান্য আয়ের মানুষ যার পোষ্য আটজন তিনি সদকাতুল ফিতর আদায় করছেন ৫০৮=৪০০ টাকা। এটা কোনক্রমেই বিবেক গ্রাহ্য হতে পারে না। এ ক্ষেত্রে যদি কোটিপতি ব্যক্তি উন্নত মানের খেজুর হিসেবে আদায় করতেন তাহলে তাকে জনপ্রতি সদকাতুল ফিতর আদায় করতে হতো ৪৩২২ টাকা, তিনজনের জন্য ৪৩২২৩= ১২৯৬৬ টাকা।
আল্লাহ আমাদের যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী আমল করার তাওফীক দান করুন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন