শুক্রবার, ১০ জুলাই, ২০১৫

ইবনুল কাইয়িমের উদ্ধৃতি (ইসলামি কলাম)

ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম বলেন:
আপনার নিজ অন্তরকে খুঁজে পেতে চেষ্টা করুন তিনটি স্থানে–
১) যখন কুর’আন তিলাওয়াত শুনবেন,
২) যেসব মজলিশে (আল্লাহর) যিকির হয়,
৩) এবং যখন (একাকী) গোপনে থাকবেন।
এই জায়গাগুলোতে যদি আপনি তা খুঁজে না পান, তাহলে আল্লাহর কাছে দু’আ করুন যেন তিনি আপনাকে একটি অন্তর দান করেন, কেননা আপনার আসলে সেটি নেই।
[ফাওয়াইদুল-ফাওয়াইদ, পৃ ৪৭৯]

“আল্লাহর কাছে আপনি প্রার্থনা করা বন্ধ করে দিলে তিনি রাগান্বিত হন।
অথচ আদম সন্তানের কাছে কিছু প্রার্থনা করলে সে রেগে যায়।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)
[মাদারিজ আল-সালিকিন, ২/৯৮]


“যে রাতের বেলায় কোন ব্যক্তি সলাতে দাঁড়িয়ে নিজের উপরে মুগ্ধ হয়ে ঘুম থেকে জাগে তার চেয়ে যে রাতে কোন ব্যক্তি অনুশোচনায় বারবার ঘুম থেকে জেগে ওঠে তা উত্তম।”
— ইমাম ইবনে আল-কাইয়্যিম [মৃত্যু, ৭৫১ হিজরি, ১৩৫০ ঈসায়ী]
[মাদারিজ আল-সালেকিন, ১/১৮৩]


“আল্লাহকে ভয় করা এবং উত্তম চরিত্রের মাঝে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন, কেননা আল্লাহভীতি আল্লাহ ও বান্দার মাঝে সম্পর্কে উন্নয়ন ঘটায় এবং উত্তম চরিত্র একজন ব্যক্তির সাথে অন্যান্যদের সম্পর্ককে উন্নত করে। তাই একজন ব্যক্তির আল্লাহর প্রতি ভয় তার প্রতি আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়াকে সম্ভাবনাময় করে এবং সুন্দর আচরণ একজন ব্যক্তির প্রতি অন্যদের ভালোবাসা প্রাপ্তিকে সম্ভাবনাময় করে তোলে।
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)
[আল-ফাওয়াইদ, পৃ ৮৫]


“সকল গতি, স্থিতি, মুখনিঃসৃত বাণী এবং কাজ সংঘটিত হয় আল্লাহর অনুমতি এবং ইচ্ছার ফলেই। আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কেউ নড়াচড়াও করতে পারে না, আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত কেউ কোন কাজ করতে পারে না।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)
[আল-ফাওয়াইদ, পৃ ৯২]


“যারা আল্লাহর উপরে বিশ্বাস রাখে তাদের জন্য কষ্টকর সকল কাজগুলোই সহজ হয় যায় যখন তারা জানেন যে আল্লাহ তাদেরকে শুনছেন।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম আয-জাওযিয়্যাহ
[আল-ফাওয়াঈদ, পৃ ১১৯]

“যে ভালো কাজের ফলে অন্তরে অহংকার সৃষ্টি হয় তার চাইতে যে পাপের জন্য কোন ব্যক্তি আল্লাহর কাছে তার আত্মাকে সমর্পিত করে সেটি আল্লাহর কাছে বেশি পছন্দের।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)
[আল-ফাওয়াইদ, পৃষ্ঠা-৯১]


“আপনি যখন কোন সৃষ্টিকে ভয় করবেন তখন তার থেকে দূরে পালাতে চেষ্টা করবেন। আপনি যখন আল্লাহকে ভয় করবেন তখন তাকে ভালোবাসবেন এবং তার সাথে ঘনিষ্ট হওয়ার চেষ্টা করবেন।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)
[আল-ফাওয়াঈদ, পৃ ৫৫]


“সময় নষ্ট করা মৃত্যুর চেয়েও নিকৃষ্টতর। যখন কেউ মারা যায় পৃথিবীর অধিবাসী ও দুনিয়ার সাথে তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়; কিন্তু যখন কেউ সময় নষ্ট করে তখন আল্লাহর সাথে তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)
[আল ফাওয়াইদ, পৃষ্ঠা ৫৫]

“যে ব্যক্তি জ্ঞানবিহীন আমল করে সে তো ঐ ব্যক্তির মত যে কোন পথপ্রদর্শক (গাইড) ছাড়াই ভ্রমণ করে। আর এটা জানা কথা যে এমন লোক সম্ভবত রক্ষা পাবে না বরং ধ্বংস হবে।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ
[মিফতাহ দার আস-সা’আদাহ, ১/৮২-৮৩]

“আমাদের চোখ এবং অন্তরের মাঝে একটা সম্পর্ক রয়েছে যার ফলে একটির কারণে অন্যটি প্রভাবিত হয়। এদের একটি যদি ভালো থাকে তাহলে অন্যটিও ভালো থাকে, আবার একটি যদি ভ্রষ্ট হয় তাহলে অপরটিও ভ্রষ্ট হয়ে যায়। যদি অন্তর ভ্রষ্ট হয়, চোখের দৃষ্টিও ভ্রষ্ট হয়ে যাবে, আবার যদি চোখের দৃষ্টি ভ্রষ্ট হয় তাহলে অন্তরও ভ্রষ্ট হয়ে যাবে। একইভাবে, যদি এদের একটি প্রশান্ত থাকে, অপরটিও প্রশান্ত থাকবে।
— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)
[আল জাওয়াব আল কাফি — ইবনুল কাইয়্যিম, পৃ ১২৫]


“আমাদের পুর্ব প্রজন্মের একজন মানুষ বলেছিলেন, খারাপ কাজের একটি শাস্তি হলো আরো খারাপ কাজ হওয়া এবং ভালো কাজের একটি পুরষ্কার হলো আরো ভালো কাজ হওয়া।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ
[আল-জাওয়াব আল-কাফি, পৃ ৩৬]


“নিজের জন্য কেনাকাটা করুন (ভালো কাজ করার মাধ্যমে) যতদিন আপনার জন্য বাজার রয়েছে এবং আপনার কেনাকাটার সামর্থ্য আছে।”
— ইমাম ইবনুল কায়্যিম


“একজন প্রকৃত আন্তরিক উপদেশদাতার উপদেশ আপনি গ্রহণ না করলেও তিনি কখনো আপনার প্রতি শত্রুতা পোষণ করবেন না।”
— ইমাম ইবনুল কায়্যিম
[আর-রুহ, পৃ ২৩৩]


“সমগ্র দ্বীন হলো উত্তম চরিত্রের। সুতরাং যে তার চরিত্রে আপনার চেয়ে উত্তম হতে পেরেছে, সে দ্বীনদারীতেও আপনার চেয়ে উত্তম হয়েছে।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম আয-জাওযিয়াহ


“আপনি যদি কুরআন থেকে উপকৃত হতে চান তাহলে তিলাওয়াতের সময় সম্পূর্ণ অন্তর দিন (কী বলা হচ্ছে বুঝতে চেষ্টা করুন), শোনার ব্যাপারে মনোযোগী হোন এবং কল্পনা করুন আল্লাহ আপনার সাথে সরাসরি কথা বলছেন।”
— ইমাম ইবনুল কায়্যিম


“জেনে রাখুন আপনি যাকে দান করছেন তার দানটি যতটুকু প্রয়োজন তার চাইতে অকল্পনীয় রকমের বেশি প্রয়োজনীয় বিষয় হলো আপনার এই দানটি আল্লাহর কাছে কবুল হওয়া।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন