ইমাম আবদুল্লাহ ইবনে মুবারাকের (রাহিমাহুল্লাহ) প্রতিবেশী ছিলো একজন ইহুদি। ইমাম নিজের সন্তানদেরকে খাওয়ানোর পূর্বেই সর্বদা সে ইহুদিকে খাওয়াতেন এবং প্রথমে তাকে কাপড় দেয়ার পর সন্তানদের কাপড়-চোপড় দিতেন।
এক সময় কিছু লোক ইহুদি লোকটিকে বলেছিলো, “আমাদের কাছে তোমার বাড়িটি বিক্রি করে দাও।” সে উত্তর দিয়েছিলো, “আমার বাড়ির দাম দু’হাজার দিনার, এক হাজার বাড়ির মূল্য এবং আরেক হাজার ইবনে মুবারাক প্রতিবেশী হবার কারণে।”
একথা শুনে আবদুল্লাহ ইবনে মুবারাক পরমানন্দে চিৎকার দিয়ে বলেন, “হে আল্লাহ! তাকে ইসলামের পথ দেখান।” তারপর সেই ব্যক্তি আল্লাহর ইচ্ছায় ইসলাম কবুল করেছিলো।
[লা তাহযান : ড আইয আল কারনি, পৃ ১৪৮]
“হয়ত একটি ক্ষুদ্র কাজ অনেক বিশাল হয়ে যায় কাজটির পেছনে করা নিয়্যাতের কারণে এবং হয়ত অনেক বড় একটা কাজ একদমই তুচ্ছ হয়ে যায় কাজটির পেছনে করা নিয়্যাতের কারণে।”
— আবদুল্লাহ ইবনে মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)
[জামি’ উলুম, পৃ ১৬]
আবদুল্লাহ ইবনে আল-মুবারাক বলেন:
“কাপড়ের উপরে কালি হলো আলেমদের জন্য সুগন্ধির ন্যায়।”
[আল-খাতিব আল-বাগদাদী, আল-জামি লি’আখলাক আল-রাওয়ি, অনুচ্ছেদ: ৫০৯]
“আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জন করার চেয়ে উত্তম আর কিছু নেই। এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য জ্ঞানার্জন করলে তিনি যেমন ঘৃণা করেন তা অন্য কিছুতে করেন না।
— আবদুল্লাহ ইবনে মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)
[আদাব শারিয়্যাহ, ২/২১৭]
“যখন আমি বিয়ে এবং সন্তানলাভের মাহাত্ম্য সম্পর্কে শিখেছিলাম, আমি গোটা কুরআন পাঠ করে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার কাছে দু’আ করেছিলাম যেন তিনি আমাকে দশটি সন্তান দান করেন। তিনি আমার দু’আ কবুল করেছিলেন এবং আমাকে পাঁচটি ছেলে এবং পাঁচটি কন্যা সন্তান দিয়েছিলেন।”
— ইবনে আল-জাওযি (রাহিমাহুল্লাহ)
[সিয়ার আল-আলাম আন-নুবালা, ২১/৩৭৫]
“আমি এমন কোন কিছু দেখিনি বা এমন কোন কিছুর কথা শুনিনি যা নির্জনতার সমান শান্তি, সম্মান ও মর্যাদা এনে দিতে পারে। নির্জনতা বান্দাকে পাপ কাজ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে, তার সম্মান রক্ষা করে এবং সময় বাঁচায়। নির্জনতা আপনাকে হিংসুকদের থেকে দূরে রাখবে এবং যারা আপনার বিপদে খুশি হয় তাদের থেকেও আপনাকে দূরে রাখবে। এটা আখিরাতের স্মরণকে বাড়িয়ে দেয় এবং বান্দাকে আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের কথা ভাবায়। নির্জনবাসের সময় বান্দার চিন্তাগুলো যা কল্যাণকর এবং যাতে হিকমাহ বা প্রজ্ঞা আছে তাতে ঘুরে বেড়াতে পারে।”
— ইমাম ইবনে আল-জাওযি (রাহিমাহুল্লাহ)
[লা তাহযান : ড আইয আল কারনি, পৃ ১৫৭]
“পাপ করার পরে যদি আপনার অন্তরের মাঝে আঁধার খুঁজে পান, তাহলে বুঝে নিবেন আপনার অন্তরে আলো রয়েছে। সেই আলোর কারণেই আপনি আঁধারকে অনুভব করেছেন।”
— ইমাম আবুল ফারাজ ইবনে আল জাওযি
[রাওদাতুল মুহিবীন, ২/১১২]
আমি সিরিয়াতে একটি কলম ধার নিয়েছিলাম এবং কলমটি যার তাকে ফেরত দিতে ভুলে গিয়েছিলাম। যখন আমি মারভেতে (ইরানে অবস্থিত) এসে পড়েছিলাম, তখন খেয়াল করলাম কলমটি আমার সাথেই রয়ে গেছে। তাই আমি সিরিয়ায় ফিরে গিয়ে যার কলম তাকে ফেরত দিয়েছিলাম।”
— ইমাম আবদুল্লাহ বিন মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)
[খতিব তারীহ, ১০/১৬৭]৸
“ততক্ষণ পর্যন্ত যেকোন জ্ঞানের মাধ্যমে কেউ উন্নত হতে পারে না, যতক্ষণ পর্যন্ত সুন্দর আচরণের মাধ্যমে সে তার জ্ঞানকে সৌন্দর্যময় করে।”
— আব্দুল্লাহ ইবনে আল-মুবারাক
— আব্দুল্লাহ ইবনে আল-মুবারাক
[আদাব শারি’ইয়্যাহ, ৪/২০৮]
“আলাহ নবী সুলাইমানকে (আলাইহিস সালাম) জ্ঞান এবং ক্ষমতা থেকে যেকোন একটি বেছে নিতে বলেছিলেন। তিনি ক্ষমতার চাইতে জ্ঞানকে প্রাধান্য দিয়ে তা বেছে নিয়েছিলেন। যেহেতু সুলাইমান (আ) জ্ঞান চেয়েছিলেন, আল্লাহ তাকে ক্ষমতাও দান করেছিলেন।”
— আব্দুল্লাহ ইবনে আল-মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)
— আব্দুল্লাহ ইবনে আল-মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)
[জামি’উল বায়ান আল-‘ইলম ওয়া ফাদলিহি, ভলিউম-১, পৃ -১১৪]
“আমাদের অন্তরগুলো যদি শুদ্ধ হতো, তাহলে আল্লাহর স্মরণে (যিকিরে) কখনো আমরা ক্লান্তিবোধ করতাম না।”
— আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)
[আয-যুহদ : আল-কানয, ১/২১৮
“কোন ব্যক্তি যতক্ষণ জ্ঞানার্জনের পথে থাকে ততক্ষণ সে জ্ঞানী, যখনই সে নিজেকে আলেম বলে মনে করে তখনই সে জাহেল হয়ে যায়।”
— আব্দুল্লাহ বিন মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)
[আল-মুজালাসাহ, পৃ ৫৬]
নু’আইম ইবন হাম্মাদ বলেনঃ
আবদুল্লাহ ইবন মুবারাককে (রাহিমাহুল্লাহ) একবার প্রশ্ন করা হয়েছিলো, “হে আবু আবদ আর-রাহমান, আপনি প্রায়ই ঘরে একা একা কেন বসে থাকেন?”
তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, “আমি কি একা থাকি? আমি তো থাকি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তার সাহাবাদের সাথে।” (অর্থাৎ তিনি হাদিস অধ্যয়ন করতেন)
[ইবন ‘আসাকির, তারিখ দিমাশক, ৩২/৪৫৮]
“আমি তিরিশ বছর ব্যয় করেছি আদব শিখতে এবং বিশ বছর ব্যয় করেছি জ্ঞানার্জনে।”
— আব্দুল্লাহ বিন মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ) [৭৩৬-৭৯৬]
— আব্দুল্লাহ বিন মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ) [৭৩৬-৭৯৬]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন