সদ্য দাওরায়ে হাদীস কিংবা ইফতা সমাপনকারী তরুণদের প্রতি সবিনয় নিবেদন
কওমী মাদরাসায় শিক্ষকতার ন্যায় মহান, সম্মানজনক, আনন্দদায়ক ও তৃপ্তিকর আর কিছুই হতে পারে না৷
ছাত্র জীবনে;চুল বড় করা কিংবা রঙ্গিন কাপড় পরাকে বিশেষ কিছু মনে হতো৷ উস্তাযগণ চুল কাটতে বললে যন্ত্রণায় ভুগতাম৷ বর্তমান অবস্থা;ব্যস্ততা কিংবা অলসতায় চুল সামান্য বড় হলেই বিব্রত বোধ করি, যতো দ্রুত সম্ভব ছেটে ফেলি৷ রঙ্গিন অথবা ডিজাইন করা কাপড় অন্যরা স্বাচ্ছন্দে কিভাবে পরে, ভেবে আশ্চর্যই হই৷
মাদরাসায় শিক্ষকতার ব্যাপারে পূর্বের মনোভাব;১৯৯৯ সালে দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী থেকে দাওরায়ে হাদীস সম্পন্নের তিন বছরের মাথায় ২০০২ সালে ঢাকা আলিয়া থেকে কামিল শেষ করি৷দাওরায়ে হাদীসের পর ইফতা পড়ার ইচ্ছা থাকলেও যে কোনো কারণে পড়া হয়নি (শর্ত দেয়া হয়, ইফতার সমান্তরালে অনার্স কিংবা ফাজিলের ছাত্রত্ব রাখা যাবে না৷ উপরোক্ত মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তাদের নীতিতে হয়তো ঠিকই করেছেন৷ কিন্তু ভাবলে এখনো আমার কষ্ট হয়)৷ঐ সময় আব্বা মাদরাসায় শিক্ষকতার কথা বললেও খুব রূঢ় ভাষায় নিষেধ করে বলতাম, মানুষের দয়ার দানে(আরো খারাপ শব্দে বলতাম) মাদরাসা পরিচালিত হয়৷ তেমন কাজ আমি করবো না৷
এমএ শেষ করার পর মুহতারাম মুফতী ওয়াককাস সাহেব জানতে চেয়েছিলেন, আলিয়া মাদরাসা কিংবা স্কুল-কলেজে শিক্ষকতা করবো কি না?মুহতারামকে সবিনয়ে বলেছিলাম, সরকারী গোলাম হতে চাই না৷ততোদিনে পরিচিত কিংবা যাদের সাথে উঠবস করি, ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহকর্মী তারাও আমার অনুপস্থিতিতে টিপ্পনী কাটলো, “কাঁধে ব্যাগ ঝুলানো ব্যতীত ওয়ালী উল্লাহর আর কোনো যোগ্যতাই নেই৷ নইলে কবে ও মাদরাসায় জয়েন করতো!" (বিরুপ সমালোচকদের নিকট আমি কৃতজ্ঞ৷ কারণ নিতান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও অনেকটা তাদের কথার তীর তেকে বাচতেই শিক্ষকতার জন্য রাজি হই)অতঃপর পল্টনে কেবল চোঙ্গা ফুঁকানো ছেড়ে মাওলানা গোলাম মহিউদ্দীন ইকরাম ভাই প্রতিষ্ঠিত জামিয়া আরাবিয়্যা দারুল উলূম নতুনবাগ রামপুরায় শিক্ষকতার নতুন জীবন শুরু করলাম৷ তিনি রাজনৈতিক গুরুর পাশাপাশি আমার প্রাতিষ্ঠানিক অভিভাবকের দায়িত্বও পালন করছেন চরম কঠোরতা এবং পরম কোমলতার সংমিশ্রণে৷ আর হ্যাঁ, পল্টনে যখন তখন ঘুরে বেড়ানো ছাড়লেও কাঁধের ব্যাগ কিন্তু পরিহার করিনি এখনো৷মাদরাসা শিক্ষকতা শুরুর পর বুঝলাম আমি এ সম্পর্কে কতোটা ভুলের মাঝে ছিলাম৷ এরচেয়ে মহান, সম্মানজনক, আনন্দদায়ক কিংবা পরিতৃপ্তিকর আর কিছু হতেই পারে না৷বর্তমানে মাদরাসার জন্য পরিচিতজন, বন্ধুদের নিকট এয়ানত চাইতে মোটেও কুণ্ঠাবোধ হয় না আমার৷মাসের পর মাস নির্ধারিত সম্মানী বকেয়া থাকে৷ পরিবার-পরিজন কষ্ট করে৷ কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ হতাশায় ভুগি না আমরা৷আমি অনুভবের চেষ্টা করি যে আমার মাঝে কতো ঘাটতি আছে৷ নিয়মিত সেই ঘাটতি পূরণ এবং শিক্ষার্থীদের সাথে দয়ার্দ্র আচরণে নিজেকে ভালো মানুষরুপে গড়ার চেষ্টা করছি৷আমার বর্তমান ভাবনা হচ্ছে, হয়তো আমি রাজনীতির মোহ ছাড়তে পারবো, কিন্তু মাদরাসার শিক্ষকতা ছাড়ার কথা কল্পনাতেও আসে না৷আলহামদুলিল্লাহ, একমাত্র ছেলে আম্মারের জন্মের পর তাকে খালেস কওমী ব্যতীত অন্য কোথাও পড়ানোর কথা কল্পনাও করি না আমি৷
এমএ শেষ করার পর মুহতারাম মুফতী ওয়াককাস সাহেব জানতে চেয়েছিলেন, আলিয়া মাদরাসা কিংবা স্কুল-কলেজে শিক্ষকতা করবো কি না?মুহতারামকে সবিনয়ে বলেছিলাম, সরকারী গোলাম হতে চাই না৷ততোদিনে পরিচিত কিংবা যাদের সাথে উঠবস করি, ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহকর্মী তারাও আমার অনুপস্থিতিতে টিপ্পনী কাটলো, “কাঁধে ব্যাগ ঝুলানো ব্যতীত ওয়ালী উল্লাহর আর কোনো যোগ্যতাই নেই৷ নইলে কবে ও মাদরাসায় জয়েন করতো!" (বিরুপ সমালোচকদের নিকট আমি কৃতজ্ঞ৷ কারণ নিতান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও অনেকটা তাদের কথার তীর তেকে বাচতেই শিক্ষকতার জন্য রাজি হই)অতঃপর পল্টনে কেবল চোঙ্গা ফুঁকানো ছেড়ে মাওলানা গোলাম মহিউদ্দীন ইকরাম ভাই প্রতিষ্ঠিত জামিয়া আরাবিয়্যা দারুল উলূম নতুনবাগ রামপুরায় শিক্ষকতার নতুন জীবন শুরু করলাম৷ তিনি রাজনৈতিক গুরুর পাশাপাশি আমার প্রাতিষ্ঠানিক অভিভাবকের দায়িত্বও পালন করছেন চরম কঠোরতা এবং পরম কোমলতার সংমিশ্রণে৷ আর হ্যাঁ, পল্টনে যখন তখন ঘুরে বেড়ানো ছাড়লেও কাঁধের ব্যাগ কিন্তু পরিহার করিনি এখনো৷মাদরাসা শিক্ষকতা শুরুর পর বুঝলাম আমি এ সম্পর্কে কতোটা ভুলের মাঝে ছিলাম৷ এরচেয়ে মহান, সম্মানজনক, আনন্দদায়ক কিংবা পরিতৃপ্তিকর আর কিছু হতেই পারে না৷বর্তমানে মাদরাসার জন্য পরিচিতজন, বন্ধুদের নিকট এয়ানত চাইতে মোটেও কুণ্ঠাবোধ হয় না আমার৷মাসের পর মাস নির্ধারিত সম্মানী বকেয়া থাকে৷ পরিবার-পরিজন কষ্ট করে৷ কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ হতাশায় ভুগি না আমরা৷আমি অনুভবের চেষ্টা করি যে আমার মাঝে কতো ঘাটতি আছে৷ নিয়মিত সেই ঘাটতি পূরণ এবং শিক্ষার্থীদের সাথে দয়ার্দ্র আচরণে নিজেকে ভালো মানুষরুপে গড়ার চেষ্টা করছি৷আমার বর্তমান ভাবনা হচ্ছে, হয়তো আমি রাজনীতির মোহ ছাড়তে পারবো, কিন্তু মাদরাসার শিক্ষকতা ছাড়ার কথা কল্পনাতেও আসে না৷আলহামদুলিল্লাহ, একমাত্র ছেলে আম্মারের জন্মের পর তাকে খালেস কওমী ব্যতীত অন্য কোথাও পড়ানোর কথা কল্পনাও করি না আমি৷
আম্মারকে জিজ্ঞেস করলে সেও একবাক্যে বলে, “ ইনশাআল্লাহ আমি হাফেজ, মাওলানা মুফতী হবো৷"
আমি তাকে দিয়ে আমার মতো আলিয়া কিংবা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট নেয়ার প্রয়োজনও মনে করছি না৷ (কল্যাণকামীদের দোয়া এবং মহান রবের কৃপা থাকলে সে অবশ্যই বাবার হাফেজে কুরআন এবং মুফতী না হবার যন্ত্রণা লাঘব করতে পারবে ইনশাআল্লাহ)
আমি তাকে দিয়ে আমার মতো আলিয়া কিংবা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট নেয়ার প্রয়োজনও মনে করছি না৷ (কল্যাণকামীদের দোয়া এবং মহান রবের কৃপা থাকলে সে অবশ্যই বাবার হাফেজে কুরআন এবং মুফতী না হবার যন্ত্রণা লাঘব করতে পারবে ইনশাআল্লাহ)
আমার ছোটবেলার ডায়েরিতে আছে, ‘লেখক কিংবা সাংবাদিক হতে চাই৷' প্রচলিত অর্থে কোনোটিই হওয়া সম্ভব হয়নি৷ কিন্তু সাংগঠনিক সূত্রে বিগত ১০ বছর যাবত গণমাধ্যম কর্মীদেক সাথেই কাজ করছি৷
বিগত আড়াই বছর যাবত কেন্দ্রীয় জমিয়ত এবং মহানগর হেফাজতের প্রচারের দায়িত্ব পালনের সুবাদে অনেক সাংবাদিক তো আমাকে তাদের সহকর্মিই মনে করেন৷
বিগত আড়াই বছর যাবত কেন্দ্রীয় জমিয়ত এবং মহানগর হেফাজতের প্রচারের দায়িত্ব পালনের সুবাদে অনেক সাংবাদিক তো আমাকে তাদের সহকর্মিই মনে করেন৷
কালের পরিক্রমায় অনেককিছু বদলালেও দুটি অভ্যাসের পরিবর্তন হয়নি৷
প্রথমটি একান্ত ঘনিষ্ঠরাই জানে৷
দ্বিতীয়টি হচ্ছে, বন্ধুদের সাহচর্যে সময় কাটানো৷ শত ব্যস্ততার মাঝে এখনো সময় করে বন্ধুরা মিলিত হই এবং মোবাইল ডিসকানেক্ট করে দিই৷
সে কারণে স্ত্রীদের অনুযোগও শুনতে হয়, “তারা মিলিত হলে আমাদেরকেও ভুলে যায় কেনো?"
তাদের কণ্ঠে অভিমান, অভিযোগ, সংশয় নাকি আমাদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বে ইর্ষাকাতরতা থাকে জানি না৷
প্রথমটি একান্ত ঘনিষ্ঠরাই জানে৷
দ্বিতীয়টি হচ্ছে, বন্ধুদের সাহচর্যে সময় কাটানো৷ শত ব্যস্ততার মাঝে এখনো সময় করে বন্ধুরা মিলিত হই এবং মোবাইল ডিসকানেক্ট করে দিই৷
সে কারণে স্ত্রীদের অনুযোগও শুনতে হয়, “তারা মিলিত হলে আমাদেরকেও ভুলে যায় কেনো?"
তাদের কণ্ঠে অভিমান, অভিযোগ, সংশয় নাকি আমাদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বে ইর্ষাকাতরতা থাকে জানি না৷
জীবনদর্শনটা যতো সহজ রাখবেন, ততো ভালোও থাকবেন৷
নিজে ভালো থাকুন, অপরকে ভালো থাকতে দিন৷
কারো বিরক্তির কারণ হবেন না৷ কারো সাথে দূরত্ব হলে নিজে থেকেই মেটানোর উদ্যোগ নিন৷ (কেবল শিক্ষকতা নয় বরং সামাজিক এবং সংঘবদ্ধ যেকোনো কাজেই এই বিষয়গুলো সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ)
নিজে ভালো থাকুন, অপরকে ভালো থাকতে দিন৷
কারো বিরক্তির কারণ হবেন না৷ কারো সাথে দূরত্ব হলে নিজে থেকেই মেটানোর উদ্যোগ নিন৷ (কেবল শিক্ষকতা নয় বরং সামাজিক এবং সংঘবদ্ধ যেকোনো কাজেই এই বিষয়গুলো সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ)
উস্তায, গুরুজন কিংবা অভিভাবকগণ যদি আপনাকে ইলমে দ্বীনের খেদমতে মাদরাসায় শিক্ষকতার কথা বলেন৷ তবে স্বস্ফূর্তভাবে খুশি মনে কাজে লেগেই দেখুন না, কতো সম্মান এবং তৃপ্তি এই পেশায় রয়েছে৷
মাদরাসার দুয়ার, বারান্দা এবং দরসগাহ উভয়জগতে সম্ভাব্য সফলতার যাবতীয় পসরা সাজিয়ে আপনার জন্য অধীরে অপেক্ষা করছে৷
আর মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তো বলেছেনই;
عسي ان تكرهواشیئا و هو خير لكم، و عسي ان تحبوا شیئا و هو شر لكم، و الله يعلم و انتم لا تعلمون.
“কিন্তু তোমরা যা অপছন্দ করো, সম্ভবত তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর৷ আর যা ভালোবাস সম্ভবত তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর৷ আল্লাহ জানেন, আর তোমরা জানো না৷" সূরা বাকারা; ২১৬
মাদরাসার দুয়ার, বারান্দা এবং দরসগাহ উভয়জগতে সম্ভাব্য সফলতার যাবতীয় পসরা সাজিয়ে আপনার জন্য অধীরে অপেক্ষা করছে৷
আর মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তো বলেছেনই;
عسي ان تكرهواشیئا و هو خير لكم، و عسي ان تحبوا شیئا و هو شر لكم، و الله يعلم و انتم لا تعلمون.
“কিন্তু তোমরা যা অপছন্দ করো, সম্ভবত তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর৷ আর যা ভালোবাস সম্ভবত তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর৷ আল্লাহ জানেন, আর তোমরা জানো না৷" সূরা বাকারা; ২১৬
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন