মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে বর্নিত আছে

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে বর্নিত আছে যে, রসূল (সাঃ) এরশাদ করিয়াছেন, যখন তোমাদিগকে আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় বাহির হওয়ার জন্য বলা হয় তখন বাহির হইয়া যাইও। ( ইবনে মাজাহ)
হযরত অানাস (রাঃ) ব‌লেন, রসূল (সাঃ) এরশাদ ক‌রিয়া‌ছেন, অাল্লাহ তায়ালার রাস্তায় এক সকাল অথবা এক বিকাল দু‌নিয়া ও দু‌নিয়ার ভেতর যাহা র‌হিয়া‌ছে তাহা অ‌পেক্ষা উত্তম। (বোখারী)
********************************************
বর্তমান মুসলমান তো আল্লাহ তায়ালার রাস্তাই চিনে না , চিনলেও মানে না , মানলেও মানে নিজের মতো করে, ইচ্ছে মতো। অথচ সাহাবা কেরামদের জমানায় এমন সাহাবী পাওয়া যায় যিনি নামাজ, রোজা আদায় করেনি কিন্তু এমন একজন সাহাবী পাওয়া যাবে না যিনি আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় বের হয় নাই।
সমস্ত সাহাবা কেরাম আল্লাহর রাস্তায় বের হয়েছেন। দুনিয়ার কোন চাহিদা তাদেরকে ঠেকাতে পারেনি হোক সেটা নতুন বউ, হোক সেটা বিয়ের প্রস্তুতি, হোক সেটা ব্যবসা, হোক সেটা জমিন, হোক সেটা ঘর বাড়ি বিবি বাচ্চা। কোন কিছুই বাধা হয়ে দাড়াতে পারেনি , সবাই সব রকম সুবিধা অসুবিধার হালতে আল্লাহর তায়ালার রাস্তায় বের হয়েছেন।
এমন একজন সাহাবী কেউ দেখাতে পারবে না (চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি ) যিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহন করার পর পুরো জীবন আমাদের মতো ঘর বাড়ি, ব্যাবসা, জমিন নিয়ে পড়েছিল। বরং রসূল (সাঃ) এর কাছে সাহাবা কেরাম এই কথা পেশ করার ইচ্ছা শুধু করেছেন, বলেনি, শুধু ইচ্ছা করেছেন বলবেন যে, আমরা অনেক সময় দিয়েছি অনেক মেহনত করেছি এখন একটু ছুটি দিলে আমরা আমাদের ঘরবাড়ি, জমিন, ব্যবসা গুলো একটু দেখভাল করিতাম। আল্লাহ তায়ালা অন্তরজামী , এপ্রসঙ্গে আয়াত নাযিল করে দিলেন আর এই কথা বলে দিলেন, তোমরা নিজেদের হাতে নিজেদেরকে ধ্বংশ করিও না।
ঐ জমানায় আল্লাহর তায়ালার রাস্তায় বের না হওয়াকে নিজের হাতে নিজেকে ধ্বংশ করা মনে করতেন। মুনাফেক সহকারে আল্লাহর রাস্তায় বের হয়েছেন। কারন আল্লাহর তায়ালার রাস্তায় বের না হওয়াটা মুনাফিক পরিচয় সাব্যস্থ হতো।
একে অপরকে বলতেন চলো আল্লাহর তায়ালার রাস্তায় বের হই। এই কথা শুনে অপরজন বলতো তুমি আমাকে মুনাফিক মনে করো নাকি? মানে মুসলমানকে এই কথা বলার কি আছে।
আজ সেই ইসলামের অনুসারীরা পুরাই ছুটি নিয়া নিছে এবং আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় বের হওয়াকে অপছন্দ ও বেকার মনে করতেছে।
এ প্রসঙ্গে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালাই কোরআনে পাকের বিভিন্ন জায়গায় এই কথা উল্লেখ করেছেন যার সারমর্ম কথা , তোমাদের কি হইলো? যখন তোমাদেরকে আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় বের হইতে বলা হয়, তোমরা জমিনের মাটি চেপে ধরে রাখো?
সর্বঅবস্থায় সাহাবায়ে কেরাম, আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় বের হয়েছেন, হোক উত্তপ্ত গরম কাল, হোক প্রচন্ড শীত, না থাকুক খানাপিনা, না থাকুক টাকা পয়সা বের হবেই হবেই এটাই ছিল ঈমানদারের পরিচয়।
যার ফলে তাদের প্রতি আল্লাহ তায়ালা রাজী ও খুশি হয়েছেন এবং করেছেন সাহায্য ও মদদ, করেছেন বিজয়ী, দিয়েছেন শাষণক্ষমতা পুরা দুনিয়ার।
আসুন আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় বের হই।
আপনি হয়তো আমাকে বলবেন, আপনি কি তাবলীগে যেতে বলছেন ?
আমি বলবো, না । আমি আপনাকে আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় যেতে বলছি।
আর দাওয়াত ও তাবলীগ, ঐ আল্লাহ তায়ালার রাস্তার দিকে দাওয়াত দিচ্ছে আপনাকে।
যেই রাস্তায় ‍উম্মতের শান শওকত মর্যাদা দুনিয়া ও আখেরাতের।
যেই রাস্তায় চলা বন্ধ করে দেওয়ার মধ্যে উম্মতের ধ্বংশ ও বরবাদী।
যেই রাস্তায় বের হওয়ার জন্য মা ছেলেকে তৈয়ার করে , বাবা তার ছেলের সাথে প্রতিযোগীতা করে , লটারী করে কে যাবে আল্লাহর তায়ালার রাস্তায়। ছোট ছোট বাচ্চা উকি মেরে দেখায় আমি বড় হয়েছি, আমি আল্লাহর রাস্তায় যেতে চাই।
আর ঐ রাস্তার পথ শুরু করেন মসজিদে কোবা, মসজিদে নবভী থেকে। যেখানে বয়ান করতেন স্বয়ং রসূল (সাঃ)। বয়ানের শেষে তাশকীল করতেন কে কে তৈয়ার আল্লাহর রাস্তায় যেতে?
সাহাবায়ে কেরাম তৈয়ার হয়ে যেতেন সাথে সাথে , কোন ওজর আজর আপত্তি ছিল না সেই জমানায়। যেই জমানার ইসলাম এর কথা, আমরা মুসলমানরা এখন বলছি।
কিন্তু বড়ই আফসুসের কথা এই যে, সেই জমানার "আল্লাহর তায়ালার রাস্তা" আজ মুসলমান মোটেও অবগত নয়। যারা অবগত তারা আজ বিচ্ছিন্ন, লুকোচুরি, গুপ্তচরের মতো মাস্ক প‌ড়ে চলছে। প্রকাশ্যে মুসলিম সেই বাক্য ‍উচ্চারণ করতে পারছে না, কারণ মুসলিমই সেই রাস্তার বিরোধীতা কিংবা বাজে উক্তির সাথে কিংবা অবহেলার দৃষ্টিতে দেখছে।
আল্লাহর সাহায্যের বদলে ধ্বংশের নমুনা দেখা যাচ্ছে (বাকী আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন)।
কারন উম্মত যতক্ষন পর্যন্ত সম্মিলিতি ভাবে আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় বের হওয়াকে ,জরুরী মনে না করবে ,ততক্ষন পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালার সাহায্য না আসাটাই স্বাভাবিক।
এজন্য একদিকে প্রয়োজন প্রত্যেক মুসলমানকে প্রকৃত মুসলমান হওয়ার জন্য ও আত্মশুদ্ধির জন্য মেহনত করা, দ্বীনের তালিমের ব্যবস্থাপনা করা, দ্বীন প্রচার প্রসারে মেহনত করা আবার আল্লাহর রাস্তায় বের করা।
কারণ দিনে দিনে মুসলমান দ্বীন থেকে দূরে চলে যাচ্ছে, ছেড়ে দিচ্ছে দ্বীনি তালিম, ভুলে যাচ্ছে "আল্লাহ তায়ালার রাস্তায়"বের হওয়া।
আপিনই বলুন, কোনটা ছেড়ে কোনটা ধরবেন?
আমি বলবো আপনি আল্লাহর তায়ালার রাস্তায় চলেন, বাকী কাজ আল্লাহ তায়ালাই করে দিবেন। যেমন পূর্বে করে দিয়েছিলেন।
আর এটারই তাবলীগ করছি। চলুন আল্লাহর তায়ালার রাস্তায় বের হই এই কথার তাবলীগ করিতে।
যদি বলেন আমার সব কথা ভুয়া ,বলতেই পারেন। যতক্ষন না আপনি আল্লাহর তায়ালার রাস্তায় বের না হবেন। শুধু এ‌তোটুকু অনু‌রোধ অাল্লাহ তায়ালার রাস্তায় সময় দেন।
চলুন আল্লাহর রাস্তায় বের হই, কমছে কম নিয়ত করি। হ্যা সূচক আওয়াজ দেই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন