শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

আইয়ামুত তাশরীক এর ফযিলত এ দিনগুলোর ফযিলত সম্পর্কে যে সকল বিষয় এসেছে তা নীচে আলোচনা করা হল: —

[১] এ দিনগুলো ইবাদত-বন্দেগি, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের জিকির ও তার শুকরিয়া আদায়ের দিন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:— ﴿ ۞ ﻭَﭐﺫۡﻛُﺮُﻭﺍْ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻓِﻲٓ ﺃَﻳَّﺎﻡٖ ﻣَّﻌۡﺪُﻭﺩَٰﺕٖۚ ٢٠٣ ﴾ [ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ : ٢٠٣ ] ‘তোমরা নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহকে স্মরণ করবে।’[ সূরা বাকারাহ, আয়াত: ২০৩] এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম বুখারি রহ. বলেন:— ﻋﻦ ﺃﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ... ﺍﻷﻳﺎﻡ ﺍﻟﻤﻌﺪﻭﺩﺍﺕ : ﺃﻳﺎﻡ ﺍﻟﺘﺸﺮﻳﻖ . [ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻌﻴﺪﻳﻦ ] ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন—‘নির্দিষ্ট দিনগুলো বলতে আইয়ামুত-তাশরীককে বুঝানো হয়েছে।’ ইমাম কুরতুবী রহ. বলেন: ইবনে আব্বাসের এ ব্যাখ্যা গ্রহণে কারো কোনো দ্বি-মত নেই। আর মূলত এ দিনগুলো হজের মওসুমে মিনাতে অবস্থানের দিন। কেননা হাদিসে এসেছে— ... ﺃﻳﺎﻡ ﻣﻨﻰ ﺛﻼﺛﺔ : ﻓﻤﻦ ﺗﻌﺠﻞ ﻓﻲ ﻳﻮﻣﻴﻦ ﻓﻼ ﺇﺛﻢ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﻣﻦ ﺗﺄﺧﺮ ﻓﻼ ﺇﺛﻢ ﻋﻠﻴﻪ . [ ﺭﻭﺍﻩ ﺃﺑﻮ ﺩﺍﻭﺩ ﻭﺻﺤﺤﻪ ﺍﻷﻟﺒﺎﻧﻲ ] মিনায় অবস্থানের দিন হল তিন দিন। যদি কেউ তাড়াতাড়ি করে দু দিনে চলে আসে তবে তার কোনো পাপ নেই। আর যদি কেউ বিলম্ব করে তবে তারও কোনো পাপ নেই। [আবু দাউদ: ১৯৪৯] হাদিসে এসেছে— ﻋﻦ ﻧﺒﻴﺸﺔ ﺍﻟﻬﺬﻟﻲ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ - ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ - ﻗﺎﻝ : « ﺃﻳﺎﻡ ﺍﻟﺘﺸﺮﻳﻖ ﺃﻳﺎﻡ ﺃﻛﻞ ﻭﺷﺮﺏ ﻭﺫﻛﺮ ﺍﻟﻠﻪ . » [ ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ ] নাবীশা হাজালী থেকে বর্ণিত যে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘আইয়ামুত-তাশরীক হল খাওয়া-দাওয়া ও আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের যিকিরের দিন।’[মুসলিম: ১১৪১] ইমাম ইবনে রজব রহ. এ হাদিসের ব্যাখ্যায় চমৎকার কথা বলেছেন। তিনি বলেন: আইয়ামুত-তাশরীক এমন কতগুলো দিন যাতে ঈমানদারদের দেহের নেয়ামত ও স্বাচ্ছন্দ্য এবং মনের নেয়ামত তথা স্বাচ্ছন্দ্য একত্র করা হয়েছে। খাওয়া- দাওয়া হল দেহের খোরাক আর আল্লাহর জিকির ও শুকরিয়া হল হৃদয়ের খোরাক। আর এভাবেই নেয়ামতের পূর্ণতা লাভ করল এ দিনসমূহে।
,
[২] আইয়ামুত-তাশরীকের দিনগুলো ঈদের দিন হিসেবে গণ্য। যেমন হাদিসে এসেছে — ﻋﻦ ﻋﻘﺒﺔ ﺑﻦ ﻋﺎﻣﺮ - ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ - ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : «ﻳﻮﻡ ﻋﺮﻓﺔ، ﻭﻳﻮﻡ ﺍﻟﻨﺤﺮ، ﻭﺃﻳﺎﻡ ﻣﻨﻰ ﻋﻴﺪﻧﺎ ﺃﻫﻞ ﺍﻹﺳﻼﻡ، ﻭﻫﻲ ﺃﻳﺎﻡ ﺃﻛﻞ ﻭﺷﺮﺏ» . [ ﺭﻭﺍﻩ ﺃﺑﻮ ﺩﺍﻭﺩ ﻭﺻﺤﺤﻪ ﺍﻷﻟﺒﺎﻧﻲ ] ‘সাহাবি উকবাহ ইবনে আমের রা. থেকে বর্ণিত যে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: আরাফাহ দিবস, কুরবানির দিন ও মিনার দিনসমূহ [কুরবানি পরবর্তী তিন দিন] আমাদের ইসলাম অনুসারীদের ঈদের দিন।’[আবু দাউদ: ২৪১৩]
,
[৩] এ দিনসমূহ যিলহজ মাসের প্রথম দশকের সাথে লাগানো। যে দশক খুবই ফযিলত পূর্ণ। তাই এ কারণেও এর যথেষ্ট মর্যাদা রয়েছে।
,
[৪] এ দিনগুলোতে হজের কতিপয় আমল সম্পাদন করা হয়ে থাকে। এ কারণেও এ দিনগুলো ফযিলতের অধিকারী। যিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন, ঈদ, কুরবানি ও আইয়ামে তাশরীকের দিনসমূহ করনীয়, বর্জনীয় ও সুন্নাহ সমূহ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন