প্রশ্ন
আস-সালামু আলাইকুম,
হযরত নিচের এই বক্তব্যটি কতটা সঠিক?
“আমাদের নবীজিও (সাঃ) কয়েকবার বিষন্নতায় ভুগে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন কিন্তু ভাগ্য ভালো যে ফেরেশতা জিব্রাইল (আঃ) এসে বাঁধা দেয়ায় তিনি এই সর্বনাশা কাজটি করতে পারেন নি।”
এই সম্পর্কে নিম্নোক্ত হাদিসের রেফেরেন্সটি কি সঠিক?
“উম্মুল মুমেনীন সৈয়দা আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) থেকে বর্নিত হয়েছে, রাসূল (সাঃ) মাঝে মাঝে এত বিষন্ন হয়ে যেতেন যে তিনি পাহাড়ের চূড়ায় উঠে যেতেন এবং সেখান থেকে ঝাপিয়ে নিচে পড়ে যেতে চাইতেন কিন্তু প্রতিবার জিব্রাইল (আঃ) এসে উনাকে বাধা দিতেন এবং বলতেন, ও মোহাম্মদ, আপনি অবশ্যই আল্লাহর রাসূল, আপনি এ কাজ করবেন না। তিনি জিব্রাইলের কথায় শান্ত হতেন এবং ঘরে ফিরে আসতেন।
বুখারী শরীফ, হাদিস-৬৯৮২, ইবনে ইসাকের সিরাত রাসূলুল্লাহ”
নিবেদক,
মইনুল ইসলাম।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
প্রথমে আমরা পূর্ণ হাদীসটি আগে দেখে নেই-
قَالَ الزُّهْرِيُّ فَأَخْبَرَنِي عُرْوَةُ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا أَنَّهَا قَالَتْ أَوَّلُ مَا بُدِئَ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ الْوَحْيِ الرُّؤْيَا الصَّادِقَةُ فِي النَّوْمِ فَكَانَ لَا يَرَى رُؤْيَا إِلَّا جَاءَتْ مِثْلَ فَلَقِ الصُّبْحِ فَكَانَ يَأْتِي حِرَاءً فَيَتَحَنَّثُ فِيهِ وَهُوَ التَّعَبُّدُ اللَّيَالِيَ ذَوَاتِ الْعَدَدِ وَيَتَزَوَّدُ لِذَلِكَ ثُمَّ يَرْجِعُ إِلَى خَدِيجَةَ فَتُزَوِّدُهُ لِمِثْلِهَا حَتَّى فَجِئَهُ الْحَقُّ وَهُوَ فِي غَارِ حِرَاءٍ فَجَاءَهُ الْمَلَكُ فِيهِ فَقَالَ اقْرَأْ فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ مَا أَنَا بِقَارِئٍ فَأَخَذَنِي فَغَطَّنِي حَتَّى بَلَغَ مِنِّي الْجَهْدُ ثُمَّ أَرْسَلَنِي فَقَالَ اقْرَأْ فَقُلْتُ مَا أَنَا بِقَارِئٍ فَأَخَذَنِي فَغَطَّنِي الثَّانِيَةَ حَتَّى بَلَغَ مِنِّي الْجَهْدُ ثُمَّ أَرْسَلَنِي فَقَالَ اقْرَأْ فَقُلْتُ مَا أَنَا بِقَارِئٍ فَأَخَذَنِي فَغَطَّنِي الثَّالِثَةَ حَتَّى بَلَغَ مِنِّي الْجَهْدُ ثُمَّ أَرْسَلَنِي فَقَالَ { اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ } حَتَّى بَلَغَ { عَلَّمَ الْإِنْسَانَ مَا لَمْ يَعْلَمْ } فَرَجَعَ بِهَا تَرْجُفُ بَوَادِرُهُ حَتَّى دَخَلَ عَلَى خَدِيجَةَ فَقَالَ زَمِّلُونِي زَمِّلُونِي فَزَمَّلُوهُ حَتَّى ذَهَبَ عَنْهُ الرَّوْعُ فَقَالَ يَا خَدِيجَةُ مَا لِي وَأَخْبَرَهَا الْخَبَرَ وَقَالَ قَدْ خَشِيتُ عَلَى نَفْسِي فَقَالَتْ لَهُ كَلَّا أَبْشِرْ فَوَاللَّهِ لَا يُخْزِيكَ اللَّهُ أَبَدًا إِنَّكَ لَتَصِلُ الرَّحِمَ وَتَصْدُقُ الْحَدِيثَ وَتَحْمِلُ الْكَلَّ وَتَقْرِي الضَّيْفَ وَتُعِينُ عَلَى نَوَائِبِ الْحَقِّ ثُمَّ انْطَلَقَتْ بِهِ خَدِيجَةُ حَتَّى أَتَتْ بِهِ وَرَقَةَ بْنَ نَوْفَلِ بْنِ أَسَدِ بْنِ عَبْدِ الْعُزَّى بْنِ قُصَيٍّ وَهُوَ ابْنُ عَمِّ خَدِيجَةَ أَخُو أَبِيهَا وَكَانَ امْرَأً تَنَصَّرَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَكَانَ يَكْتُبُ الْكِتَابَ الْعَرَبِيَّ فَيَكْتُبُ بِالْعَرَبِيَّةِ مِنْ الْإِنْجِيلِ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَكْتُبَ وَكَانَ شَيْخًا كَبِيرًا قَدْ عَمِيَ فَقَالَتْ لَهُ خَدِيجَةُ أَيْ ابْنَ عَمِّ اسْمَعْ مِنْ ابْنِ أَخِيكَ فَقَالَ وَرَقَةُ ابْنَ أَخِي مَاذَا تَرَى فَأَخْبَرَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا رَأَى فَقَالَ وَرَقَةُ هَذَا النَّامُوسُ الَّذِي أُنْزِلَ عَلَى مُوسَى يَا لَيْتَنِي فِيهَا جَذَعًا أَكُونُ حَيًّا حِينَ يُخْرِجُكَ قَوْمُكَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوَمُخْرِجِيَّ هُمْ فَقَالَ وَرَقَةُ نَعَمْ لَمْ يَأْتِ رَجُلٌ قَطُّ بِمِثْلِ مَا جِئْتَ بِهِ إِلَّا عُودِيَ وَإِنْ يُدْرِكْنِي يَوْمُكَ أَنْصُرْكَ نَصْرًا مُؤَزَّرًا ثُمَّ لَمْ يَنْشَبْ وَرَقَةُ أَنْ تُوُفِّيَ وَفَتَرَ الْوَحْيُ فَتْرَةً حَتَّى حَزِنَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيمَا بَلَغَنَا حُزْنًا غَدَا مِنْهُ مِرَارًا كَيْ يَتَرَدَّى مِنْ رُءُوسِ شَوَاهِقِ الْجِبَالِ فَكُلَّمَا أَوْفَى بِذِرْوَةِ جَبَلٍ لِكَيْ يُلْقِيَ مِنْهُ نَفْسَهُ تَبَدَّى لَهُ جِبْرِيلُ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ إِنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ حَقًّا فَيَسْكُنُ لِذَلِكَ جَأْشُهُ وَتَقِرُّ نَفْسُهُ فَيَرْجِعُ فَإِذَا طَالَتْ عَلَيْهِ فَتْرَةُ الْوَحْيِ غَدَا لِمِثْلِ ذَلِكَ فَإِذَا أَوْفَى بِذِرْوَةِ جَبَلٍ تَبَدَّى لَهُ جِبْرِيلُ فَقَالَ لَهُ مِثْلَ ذَلِكَ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ { فَالِقُ الْإِصْبَاحِ } ضَوْءُ الشَّمْسِ بِالنَّهَارِ وَضَوْءُ الْقَمَرِ بِاللَّيْلِ
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ এর ওহীর শুরু হয় ঘুমের মাঝে ভাল স্বপ্নের মাধ্যমে। তিনি যে স্বপ্নই দেখতেন তা ভোরের আলোর মত পরিচ্ছন্ন হতো। তিনি হেরা গুহায় গিয়ে সেখানে বেশ কয়েক রাত ইবাদতে কাটিয়ে দিতেন এবং এজন্য খাদ্য দ্রব্যও সঙ্গে নিয়ে যেতেন। এরপর খাদিজা রাঃ এর কাছে ফিরে আসতেন এবং তিনি তাকে এরূপ খ্যা দ্রব্য তৈরী করে দিতেন। শেষে তাঁর কাছে সত্যের বাণী আসল। আর এ সময় তিনি হেরা গুহায় ছিলেন। সেখানে ফেরেশতা এসে তাঁকে বললেন, আপনি পড়ুন। রাসূল সাঃ বলেন, আমি পড়তে পারি না। তখন তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে চেপে ধরলেন। এমনকি এতে আমার খুব কষ্ট হল। তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিলেন এবং বললেন আপনি পড়ুন। আমি বললাম আমি পড়তে পারি না। তিনি দ্বিতীয়বার আমাকে শক্ত করে চেপে ধরলেন। এবারেও এতে আমার খুব কষ্ট হল। তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, আপনি পড়ুন। আমি বললাম, আমিতো পড়তে পারি না। এরপর তিনি তৃতীয়বার আমাকে শক্ত করে এমন চেপে ধরলেন যে, এবারেও এতে আমার খুব কষ্ট হল। তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, পাঠ করুন, আপনার প্রতিপালকের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন… যা সে জানতো না। [সুরা ইনশিরাহ১-৫] পর্যন্ত। এরপর তিনি তা নিয়ে খাদিজা রাঃ এর কাছে কম্পিত হৃদয়ে ফিরে এলেন। আর বললেন, আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও। আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও। ফলে তাঁরা তাঁকে কম্বল দিয়ে ঢেলে দিলেন। অবশেষে তাঁর থেকে ভীতি দূর হয়ে গেল। এরপর তিনি বললেন, হে খাদীজা! আমার কী হল? তারপর তিনি তাকে সমস্ত বৃত্তান্ত শুনালেন। আর বললেন, আমি আমার জীবন সম্পর্কে শংকাবোধ করছি। খাদীজা রাঃ তাকে বললেন, কক্ষনো না। আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন। আল্লাহর কসম! আল্লাহ আপনাকে লাঞ্ছিত করবেন না। কেননা, আপনি তো আত্মীয়তার বন্ধন জুড়ে রাখেন। সত্যকথা বলেন, অনাথ অক্ষমদের বোঝা বহন করেন। মেহমানদেরকে মেহমানদারী করেন এবং হকের পথে আগত ব্যক্তিদের সহায়তা করেন। তারপর খাদীজা রাঃ তাকে নিয়ে চললেন। তারপর তাকে নিয়ে ওরাকা বিন নাওফেল বিন আসাদ বিন আব্দুল উজ্জা বিন কুসাই এর কাছে এলেন। আর তিনি খাদিজা রাঃ এর চাচাতো ভাই এবং তার পিতার পক্ষ থেকে চাচাও ছিলেন। তিনি জাহিলীয়াতের যুগে খৃষ্ট ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি আরবী কিতাব লিখতেন। তাই সে ইঞ্জিল আরবীতে অনুবাদ করতেন। যতখানি লেখা আল্লাহর মঞ্জুর হতো। তিনি ছিলেন অতি বৃদ্ধ, দৃষ্টিহীন লোক। খাদিজা রাঃ তাকে বললেন, হে আমার চাচাতো ভাই। তোমার ভাতিজার কথা শুন। তখন ওরাকা বললেন, হে ভাতিজা। তুমি কি দেখেছো? রাসূল সাঃ যা কিছু দেখেছিলেন তা তাকে জানালেন। তখন ওরাকা বললেন, এতো আল্লাহর সেই নামুস তথা দূত যাকে মুসা আঃ এর কাছে প্রেরণ করা হয়েছিল। হায় আফসোস। যদি সেদিন আমি জীবিত থাকতাম যেদিন তোমার কওম তোমাকে বের করে দিবে। রাসূল সাঃ বললেন, তারা কি আমাকে বের করে দিবে? ওরাকা বললেন, হ্যা, তুমি যা নিয়ে এসেছো, এমন বস্তু নিয়ে কোনদিনই কেউ আসেনি যার সঙ্গে শত্রুতা করা হয়নি। যদি তোমার জীবনকাল আমাকে পায়, তাহলে আমি সর্বোতভাবে তোমাকে সাহায্য করবো। এরপর কিছুদিনের মধ্যেই ওরাকার মৃত্যু হয়। আর কিছু দিনের জন্য ওহী বন্ধ থাকে। এমনকি রাসূল সাঃ এ অবস্থার কারণে অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়লেন। এমনকি আমরা এ সম্পর্কে তার থেকে জানতে পেরেছি যে, তিনি পর্বতের চূড়া থেকে নিচে পড়ে যাবার জন্য একাধিকবার দ্রুত সেখানে চলে গেছেন। যখনই নিজেকে ফেলে দেয়ার জন্য পর্বতের চূড়ায় পৌছতেন, তখনি জিবরাঈল আঃ তার সামনে আত্মপ্রকাশ হয়ে বলতেন, হে মুহাম্মদ। নিঃসন্দেহে আপনি আল্লাহর রাসূল। এতে তার অস্থিরতা দূর হতো এবং নিজ মনে শান্তিবোধ করতেন। তাই সেখান থেকে ফিরে আসতেন। ওহী বন্ধ অবস্থা যখন তার উপর দীর্ঘ হতো তখনি তিনি ঐরূপ উদ্দেশ্যে দ্রুত চলে যেতেন। যখনি তিনি পর্বতের চূড়ায় পৌছতেন, তখনি জিবরাঈল তার সামনে আত্মপ্রকাশ করে আগের মত বলতেন। {বুখারী, হাদীস নং-৬৯৮২}
উক্ত বিষয়ে মুহাদ্দিসীনে কেরাম থেকে একাধিক জবাব রয়েছে। যার কয়েকটি নিচে উদ্ধৃত করা হল,
১
ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ বলেন,
ثم إن القائل ” فيما بَلَغَنا ” هو الزهري ، ومعنى الكلام : أن في جملة ما وصل إلينا من خبر رسول الله صلى الله عليه وسلم في هذه القصة . وهو من بلاغات الزهري وليس موصولاً ، وقال الكرماني : هذا هو الظاهر .
” فتح الباري ” ( 12 / 359 ) .
উক্ত বর্ণনায় “এমনকি আমরা এ সম্পর্কে তার থেকে জানতে পেরেছি যে” এরপর থেকে যা বর্ণিত হয়েছে এর প্রবক্তা হলেন ইমাম জুহরী রহঃ [হযরত আয়শা রাঃ নয়]। আর উপরোক্ত কথা অর্থ হল, এ বিষয়ে আমাদের কাছে যা পৌঁছেছে এর সারমর্ম হল…..।
বাকি বর্ণনা ইমাম জুহরী বাড়িয়েছেন। এটি মুত্তাসিল তথা হযরত আয়শা রাঃ পর্যন্ত সূত্রবদ্ধ নয়। আল্লামা কিরমানী রহঃ বলেন, একথাই পরিস্কার বুঝা যাচ্ছে। {ফাতহুল বারী-১২/৩৫৯}
২
আল্লামা মাকদিসী রহঃ বলেন,
هذا من كلام الزهري أو غيره ، غير عائشة ، والله أعلم ؛ لقوله : ” فيما بلغنا ” ، ولم تقل عائشة في شيء من هذا الحديث ذلك (شرح الحديث المقتفى فى مبعث النبى المصطفى-177) .
এটি ইমাম জুহরী রহঃ বা অন্য কারো বক্তব্য। হযরত আয়শা রাঃ এর বক্তব্য নয়। তথা “এমনকি আমরা এ সম্পর্কে তার থেকে জানতে পেরেছি যে” এর পরের বক্তব্যটি। হযরত আয়শা রাঃ উক্ত হাদীসে এ বিষয়ে কিছুই বলেননি। {আলহাদীসুল মুকতাফী ফী মাবআছিন নাবীয়্যিল মুসতাফা-১৭৭}
৩
উক্ত অংশটি সন্দিহান হওয়ার আরেকটি কারণ হল, ইমাম বুখারী রহঃ কিতাবুত তাবীরে যে হাদীসটি এনেছেন তা তিনি বুখারী শরীফের প্রথম খন্ডের বাদউল ওহীতে এনেছেন। কিন্তু তাতে এ অতিরিক্ত অংশটি আনেননি।
উক্ত অতিরিক্ত অংশসহ ইমাম আহমাদ মুসনাদে আহমাদে ৬/২৩২-২৩৩ পৃষ্ঠায় এবং আবু নুআইম তার আদদালায়েল গ্রন্থের ৬৮-৬৯ পৃষ্ঠায় এবং ইমাম বায়হাকী তা আদদালায়েল গ্রন্থের ১/৩৯৩-৩৯৫ পৃষ্ঠায় আব্দুর রাজ্জাক মামার থেকে বর্ণনা করেছেন।
এই একই সুত্রে ইমাম মুসলিম সহীহ মুসলিমের ১/৯৮ পৃষ্ঠায় এনেছেন। কিন্তু তাতে এ অতিরিক্ত অংশ নেই।
এমনিভাবে আকীল বিন খালিদের সূত্রে সহীহ মুসলিম এবং মুসনাদে আহমাদের ৬/২২৩ নং পৃষ্ঠায় এনেছেন। কিন্তু তাতে এ অতিরিক্ত অংশ নেই।
তাহলে কি বুঝা গেল? আকীল এবং ইউনুসের বর্ণনায় এ অংশ নেই। আছে শুধু মামারের বর্ণনায়। তাই এটি শাজ বর্ণনা।
৪
আত্মহত্যা নিষিদ্ধ হবার আগের আমল ছিল এটি। তাই এটি কোন দোষণীয় আমল ছিল না। নিষিদ্ধ হবার পর রাসূল সাঃ এম করেননি। {ইরশাদস সারী}
আমাদের বক্তব্য
মুহাদ্দিসীনে কেরামের উপরোক্ত বক্তব্য এবং পূর্ণাঙ্গ হাদীসটি পড়ার দ্বারা একথাই বুঝা যাচ্ছে যে, রাসূল সাঃ এর উপরোক্ত আমলটি ছিল মানুষ হিসেবে স্বাভাবিক আমল। রাসূল সাঃ এর উপর প্রথম অহী নাজিল হবার পদ্ধতিটি ছিল খুবই অস্বাভাবিক। একটি গহীন স্থানে হঠাৎ ভিন গ্রহের একজন এসে বারবার জোরে জড়িয়ে ধরা। তারপর কিছু পড়তে বলা খুবই অস্বাভাবিক একটি বিষয়। যার ফলে একজন মানুষ স্বন্ত্রস্ত হওয়া স্বাভাবিক। আর যেহেতু তিনি নবী কি না? তা পরিস্কার ভাষায় জানিয়ে কোন আয়াতও নাজিল হয়নি। তাই তিনি ছিলেন পেরেশান। সেই সাথে কাফেরদের ষড়যন্ত্র ও হত্যা চেষ্টার কারণে মানুষ হিসেবে ছিলেন তটস্ত। তাই এমন আচরণ কোন দোষণীয় থাকে না।
আর এ আমলটি ছিল মূলত আত্মহত্যা নিষিদ্ধ হবার আগের আমল। তাই এ বর্ণনা দ্বারা কোন প্রকার দলীল প্রমাণ পেশ করা বা রাসূল সাঃ চরিত্রে কালিমা লেপন করা বা বুখারী শরীফকে অগ্রহণীয় সাব্যস্ত করার পায়তারা কোনটিই সমীচিন হবে না।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন