মিনা ট্রাজেডির পর সবাই শিয়াদের বিরুদ্ধে স্টেটাস দিচ্ছেন। তাদের চিনতে হবে সতর্ক থাকতে হবে ইত্যাদিতে আমার ওয়ালও ভেসে গেছে। কিন্তু যেই বিষয়টা আসল চিন্তার তার ধারে কাছেও কি আমরা যাচ্ছি?
প্রতি বছর বিশ্বে মুসলিমের সংখ্যা বৃদ্ধিতে আমাদের আত্মসম্মানবোধের কমতি নেই। কিন্তু কয়টা মুসলিম সত্যিকারের মুসলিম থাকছে তার হিশেব করবে কে? পিউ রিসার্চ তো আর মুসলিমদের ফায়দা দিতে তৈরি হয়নি। সেটা তৈরি করতে হবে আরেকটা মুসলিম গোষ্ঠিকেই।
বাংলাদেশে ৯০ পার্সেন্ট মুসলিম। এই নিয়ে গর্বে ঘাড় ফোলাই আমরা। পায়জামার ফিতা রাবারের না কাপড়ের এই গবেষণায় দিন পাড় করি। কিন্তু কতজন মানুষ ইসলামিক তার হিশাব কখনো রাখি না। এই যে ক্রমান্বয়ে মুসলিম বাড়ছে আর কমছে ইসলাম তার ক্ষত কতটা গভীর তা কি টের পাচ্ছেন বোদ্ধাজনরা।
আগামী পৃথিবীর টপিক যে শিয়া সুন্নি, বলতে পারেন তৃতীয় বা চতুর্থ বিশ্বযুদ্ধটা যে এই শিয়া সুন্নি মতবাদ কেন্দ্র করেই সংঘটিত হবে সেটা যারা এখনো বুঝতে পারেননি তারা মুড়ি ছেড়ে বাডি খান। আর বিশ্ব ক্ষমতার দখল কার হাতে আছে, কার হাতে যাচ্ছে সেই চিন্তাটাকে ঝামেলা মনে করে দূরে রাখুন। মধ্যপ্রাচ্যের দখল তো শেষ। পাক আফগানও খেয়ে ফেলা হয়েছে। বাংলাদেশও জঙ্গি রাষ্ট্র। জিগির শুরু হয়েছে এবার খাওয়ার পালা। আর ওদিকে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি করছে বর্তমান সুপার পাওয়ার। নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিচ্ছে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো। আরব দখলে ইরান ইসরাইল এক হচ্ছে। হাওয়া দিচ্ছে রাশিয়া। এর মধ্যে আপনার আকাশ কই?
ইরান শিয়া রাষ্ট্র। তাদের খারাপ ভাবতে হবে। আনেকে ভাবেন না। বরং তাদের নতুন ইসলামিক চিন্তাকৌশল ও যৌক্তিকতা দেখে দুর্বল হচ্ছে অসংখ্য তরুণ। শিয়ারা তাদের মতাদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করতে যা করার সেটা ভালোভাবেই করে যাচ্ছে। সমাজ সংস্কৃতি শিক্ষা ও প্রযুক্তির আধুনিক সিলেবাসটা তারা যেভাবে নিতে পেরেছে তার ধারে কাছেও সুন্নিরা আছে কিনা গবেষণা করে বলতে হবে। আজকের প্রশ্নটা তাই হওয়া উচিত, শিয়াদের এই অগ্রসর ভূমিকা মোকাবিলায় আপনি কী করছেন। নাকি খারাপ ভাবলেই কেল্লা ফতে হয়ে যাবে।
শরীফ মুহাম্মদ স্যার একবার আমাদের ক্লাসে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশে যতজন মুসলিম আছে দাঁড়িয়ে প্রশ্রাব করলেই ইরাইল ভেসে যাবে’ এমন আবেগ নিয়া বড় হবেন না। এসব ফালতু কল্পনা থেকে সরে আসুন। বাস্তবের বিশ্ব অনেক দূর এগিয়েছে। সেটাকে মোকাবিলা করতে হলে কাজ করতে হবে।
বাস্তব সত্যটা বলতে গেলে অনেকেই আমার প্রতি চরম ক্ষোভিত হবেন। আসলে ওই ধরনের আবেগের মধ্যেই আমরা এখনো ঘোরপাক খাচ্ছি। এগুনোর চেষ্টাটা কেবল কিছু মানুষের মাথায়ই ঘোরপাক খাচ্ছে। বাকিরা ব্যস্ত আদি ও আসল খাবনামা পড়ার দিকে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন