বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৫

‪#‎শ্যার্লি_হ্যাবদো‬ হত্যাকাণ্ডঃ মুসলিম সন্ত্রাসবাদ নাকি অ্যামেরিকার সাজানো আরও একটি “Counter Terrorism”???

#শ্যার্লি_হ্যাবদো হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি এখন চলমান বিশ্বের সব থেকে আলোচিত বিষয় । তবে সব থেকে বেশী আলোড়ন সৃষ্টিকারী ব্যাপার যেটা, সেটার সাথে গতানুগতিকভাবে আমরা সবাই কম বেশী পরিচিত, আর তাহোল, ‘মুসলিম সন্ত্রাসবাদ’ । বিশ্বের কোন প্রান্তে কেউ একটু সশব্দে বায়ু নিঃসরণ করলে, তার দায়ও ইসলাম পন্থীদের কাঁধে চাপানো হয় । যুগ যুগ ধরে আমরা সেটাই দেখে আসছি । একইভাবে “শ্যার্লি হ্যাবদো” নামক ফ্রান্সের একটি ব্যাঙ্গ পত্রিকার অফিসে কয়েকজন বন্দুকধারী প্রবেশ করে সেই অফিসে কর্মরত ১২ জনকে হত্যা করেছে । কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে এই “শ্যার্লি হ্যাবদো” পত্রিকাটি বিগত কয়েক বছরে মুসলিম জাহানের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর বেশ কিছু ব্যাঙ্গাত্বক ছবি প্রকাশ করেছে । যা সমগ্র মুসলিম জাহানের কাছে চরম অবমাননাকর । আর এরই প্রতিশোধ নিতে ‘আল-কায়েদা’র সাথে জড়িত মুসলিম সন্ত্রাসীরা এই বর্বরতা চালিয়েছে । সারা দুনিয়ার লোক জানছে মুসলিমরা কত বড় সন্ত্রাসী । তারা মৌলবাদী । ধর্মীয় মৌলবাদের দোহায় দিয়ে তারা সমগ্র বিশ্বের মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ করতে চাইছে ।
উপরের বর্ণীত প্লটটি আমরা দেখালাম । এটা বিশ্বের মোহিত বা নিদ্রিত অবস্থায় থাকা মানুষগুলোকে আরও বেশী নিদ্রিত করার জন্য যথেষ্ট । আমরা যারা মিডিয়াতে এই ধরণের বর্ণনা দেখি বা শুনি তখন তা গলধকরনের পূর্বে বাছ বিচার করিনা । আসলে আমরা প্রতিনিয়ত মধুর বোতলে মদকে মধু মনে করে গিলছি । কিন্তু এই ধরণের খবরের সত্যতা কতটুকু ? নাকি আদও এমনটি ঘটেছে কিনা তা আমাদের ভাববার বিষয় । কেননা আমি পূর্বে অনেক স্ট্যাটাসে বিশ্ব রাজনীতিতে পশ্চিমা বিশ্ব, অ্যামেরিকা- ইসরায়েল এর মত সম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর বিভিন্ন কূট কৌশলের কিছুটা তথ্য প্রমাণ তুলে ধরেছিলাম । দেখিয়েছিলাম, কিভাবে ইসরায়েল বার বার ফিলিস্তিনে হামলা করেও পার পেয়ে যায় । আইসিস, তালেবান, আল-কায়েদা জাতীয় কথিত ইসলামিক চরমপন্থি সংগঠনগুলোকে অ্যামেরিকা ও তার মিত্ররা কিভাবে এবং কোন স্বার্থে সৃষ্টি করেছিল । ‪#‎ইবোলা‬ ভাইরাস নিয়ে অ্যামেরিকার মিথ্যাচার । মালালা ইউসুফ জাইয়ের উপর হামলা ও তার নোবেল প্রাপ্তি নিয়ে অ্যামেরিকার পূর্ব পরিকল্পনা কি ছিল । কিন্তু আমি মূর্খ মানব, আমার সে লেখায় কেউ দৃষ্টিপাত করেনি বা মনোযোগ দিয়ে পড়েনি । কারো যদি আমার পূর্বের স্ট্যাটাসগুলো ভাল করে পড়া থাকে, তবে “শ্যার্লি হ্যাবদো”র ঘটনাটি যে একটি সাজানো নাটক এবং সমগ্র মুসলিম জাতি হল তার “গিনিপিগ” তা সকলেরই স্পষ্টভাবে বুঝতে সহজ হবে ।
আমরা উপমহাদেশের জনগণ এটা অন্তত জানি যে, ব্রিটিশরা কিভাবে ‘বিভাজন ও শাসন’ নীতি প্রয়োগ করে এই ভারত বর্ষে দুটি প্রধান জাতিকে আলাদা করেছিল তাদের মধ্যে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে দ্বন্দ্ব বিভেদ সৃষ্টি করেছিল এবং টানা ১৯০ বছর শাসন করেছিল । সারা বিশ্বকে মার্কিন মিডিয়া এমনভাবে গ্রাস করেছে যে, তাদের সৃষ্ট প্রপাগন্ডা আমরা হার হামেশাই গিলছি । আমরা সামনে থেকে যেটাকে দেখছি সেটাকেই সত্য বলে মানছি । ভেতরের আসল রহস্যটা কেউ জানতে পারছিনা । এটাই অ্যামেরিকার কারসাজী । এখানে তারা বিশ্বের নিদ্রিত মানব গুলোর উপর সাইকোলজিক্যাল গেইম খেলে থাকে । তাদের নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ার দ্বারা মানুষগুলোকে প্রতিনিয়ত ‘হিপ্টোনাইসড’ করে যাচ্ছে । আর একাজে তারা বিভিন্ন মতবাদ বা ডক্ট্রিনকে কাজে লাগায় । আমাদের উপমহাদেশে যেসকল ডক্ট্রিন তারা ব্যাবহার করেছিল তার মধ্যে ‘ডিভাইড এন্ড রুল’ বা ‘মনরো ডক্ট্রিন’ ছিল উল্লেখ করার মত । বি. আরযের লেখা ‘প্রাচীন যুগের ইতিহাস সৃষ্টির নেপথ্য কথা’ বইয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে । তবে বর্তমানে তারা যে ডক্ট্রিন দিয়ে তাদের কারয সিদ্ধি করছে তা অ্যামেরিকান সমাজ বিজ্ঞানী উইলিয়াম হান্টিংটনের দেয়া ‘মানব সভ্যতার দ্বন্দ্ব সংঘাত’ বা ‘Clash of civilization’ । এই তত্বে তিনি একমাত্র মুসলিমদেরকে পশ্চিমা বা অ্যামেরিকার প্রতিপক্ষ হিসেবে দাড় করিয়েছেন । বরতমানে ফ্রান্সে যে ঘটনা ঘটল তা এই সূত্রেরই প্রয়োগ । একটিই অস্ত্র দিয়ে একই সময়ে দুজন প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা । তবে দোষটা বরাবরই ‘Clash of civilization’ অনুযায়ী মুসলিমদের ঘাড়ে চাপানো হবে ।
#শ্যার্লি_হ্যাবদো'র মত ঘটনা পূর্বেও অসংখ্যবার সংঘটিত হয়েছে । অ্যামেরিকান গোয়েন্দা সংস্থা FBI এসকল হামলা চালিয়ে থাকে । যাকে ‘Counter Terrorism’ বা ‘Sting Operatin’ বলা হয় । এগুলো মুলত অ্যামেরিকার স্বার্থে ব্যাবহার হয়ে থাকে । কিংবা অ্যামেরিকার স্বার্থ বিরোধী কোন কর্মকাণ্ড হলে শত্রুর বিরুদ্ধে এই অপারেশন চালানো হয় এবং দোষ দেয়া হয় তাদের প্রতিপক্ষকে । এসকল কাজের জন্য ‘ব্ল্যাকমেইল’ হল তাদের মুল অস্ত্র । তারা সেটা অতি গোপনীয়তার সাথে করে থাকে । শত্রু পক্ষের কেউ কিছু বুঝে ফেললে তাকে হত্যা করা হয় । এ ধরণের Sting operation ও পরে তার Investigation সম্পর্কে ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’র পরিচালনাধীন State of Colombia Law School থেকে প্রকাশিত ‘Illusion of Justice’ বইয়ের চতুর্থ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে,
‪#‎We‬ documented the following patterns that raise serious human rights concerns:
• Discriminatory investigations, often targeting particularly vulnerable
individuals (including people with intellectual and mental disabilities and
the indigent), in which the government—often acting through informants—
is actively involved in developing the plot, persuading and sometimes
pressuring the target to participate, and providing the resources to carry it
out.
• Use of overly broad material support charges, punishing behavior that did
not demonstrate intent to support terrorism.
• Prosecutorial tactics that may violate fair trial rights, such as introducing
prejudicial evidence—including evidence obtained by coercion, classified
evidence that cannot be fairly contested, and inflammatory evidence about
terrorism in which defendants played no part; and limited ability to
challenge surveillance warrants due to excessive government secrecy.
• Harsh and at times abusive conditions of confinement, which often appear
excessive in relation to the security risk posed. These include:
• Prolonged solitary confinement and severe restrictions on communicating
in pretrial detention, possibly impeding defendants’ ability to assist in their
own defense and contributing to their pleading guilty.
• Excessive lengthening of sentences and draconian conditions postconviction,
including prolonged solitary confinement and severe
restrictions on contact with families or others, sometimes without
explanation or recourse. One detainee called it “a touch of hell”:
গত বছর ইসরাইল, ফিলিস্তিনের উপর যে বর্বর হামলা চালিয়েছিল তা স্বাভাবিক দৃষ্টিতে বিশ্ববাসীর বিবেককে নাড়া দিয়েছিল । ইউরোপের দেশগুলো ইসরাইলের উপর চাপ প্রয়োগ করেছিল । তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছিল । ফ্রান্সের বর্তমান সরকার হল বামপন্থী এবং “শ্যার্লি হ্যাবদো” পত্রিকাটিও ছিল বামপন্থী । অ্যামেরিকা ও তার মিত্র ইসরাইলের প্রচণ্ড চাপ থাকা সত্বেও ফ্রান্স ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছিল । আর সেকারণে ফ্রান্সে তথা ইউরোপের মধ্যে মুসলিমদের উপর নতুন করে খারাপ ধারণা সৃষ্টির জন্য এই “শ্যার্লি হ্যাবদো”কে বেছে নেওয়া হয় । এটি একটি সাজানো প্লট ছাড়া আর কিছুই নয় । এ সম্পর্কে – Dr. Paul Craig Roberts, a former White House official, এর এই আর্টিকেলটি পড়ুন । http://bit.ly/1IoIyKF
আরও জানতে এই লিংকের আর্টিকেলগুলো খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ুন
আরও গুরুত্বপূর্ণ………..
1. http://bit.ly/1FvHTJq
2. http://bit.ly/1mHTrQy
তারপর বিচার করুন কারা মূল সন্ত্রাসী আর কারাই বা কি উদ্দেশ্যে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়ে মুসলিমদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে । আর আমরা সবাই ভাবছি যে এটা মুসলিমদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড । কিন্তু এইভাবে আর কতদিন এভাবে মুসলিমদেরকে ফাঁসানো হবে ,আর কতদিন বিশ্বের তামাম জোনগণকে অ্যামেরিকা ও তার দোসররা এভাবেই বোকা বানিয়ে রাখবে ?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন