বুধবার, ১ জুন, ২০১৬

যারা আমার সোনার বাংলা পাঠ করে


যারা আমার সোনার বাংলা পাঠ করে ভাবে ভাবে গদগদ হয়ে চিন্তা করেন খুব দেশপ্রেম দেখালেন তারা কি অবগত যে রবীন্দ্রঠগ এই লিখা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে লিখা ? 

১. দৈনিক দি নিউইয়র্ক টাইমস এ বিষয়ে একটি চমৎপ্রদ তথ্য প্রকাশ করেছে। কথাটি উঠেছে সামন্ত সুব্রামিয়ামের একটি লেখাকে উপলক্ষ করে “দেশ ভাগের আগে দেশভাগ”, ৩ অক্টোবর ২০১১। সূত্রে — বৃটিশরা মুসলমানদের অনুভূতি নিয়ে খেললো। ১৯০৪ সালের ফেব্রুয়ারীতে লর্ড কার্জন ঢাকায় বলেছিল, ‘ইস্ট বেঙ্গল হওয়ার ফলে মুসলিমরা এমন এক ঐক্যের স্বাদ পাবে যেটা তারা বহু আগে যখন মুসলিম রাজা বাদশার আমলে পেয়েছিল, কলকাতার জনগণ এ দিনটিকে শোক দিবস হিসাবে পালন করবে। কলকাতা শহরে প্রথম বাংলা ভাগের প্রতিবাদে ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি গাওয়া হয়েছিল। ১৯১১ সালে দুই বাংলা পুনরায় একত্রিত হয়েছিল, তবে তা ১৯৪৭ সালে পুনরায় ভাগ হওয়ার জন্য। নিউইয়র্ক টাইমসএর এই নিবন্ধের শেষ বাক্য: ইতিহাসের অনেক পরিহাস। তবে বঙ্গের অন্যতম পরিহাস হলো, ১৯৭১ সালে ইস্ট বেঙ্গল স্বাধীনতা পেল আর তারা কিনা তাদের জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে বেছে নিলো ‘আমার সোনার বাংলা’ র প্রথম দশ লাইন। সেটি ছিল রবীন্দ্রনাথের এমন একটি কবিতা, যা অবিভক্ত বাংলার চেতনায় অনুপ্রাণিত।
২. ১৯৯৯ সালের ২৭শে জুলাই “দৈনিক সংগ্রাম” পত্রিকার ‘জহুরী’ কলামে পাওয়া যায় পশ্চিমবঙ্গের এই ‘বাংলা’ নামবদল ঘটনার জটিলতা সে লেখাটিতেও ফুটে উঠেছিল। অনেক তথ্য যুক্তির মন্তব্যে সমৃদ্ধ বিশাল লেখাটির পর শেষের মন্তব্যটি ছিল “এ গান এপার বাংলার মুসলিম জনগোষ্ঠীর স্বার্থের বিরুদ্ধেই রচিত হয়েছিল। ১৯০৫ সালে যে বীজ বপন করা হয়েছিল তা অঙ্কুরিত হতে সময় লেগেছিল বটে, আমরা একে জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে গ্রহণ করে সাক্ষ্য দিলাম এপার বাংলা ওপার বাংলা একই বাংলা। এখন আর কিছুই করার নেই। তবে পথ একটাই খোলা আছে, তাদের গান তাদের জন্য ছেড়ে দেয়া। এ গানের বাংলা তাদের বাংলা। আমাদের বাংলা আবহমান কালের বাংলা। এ বাংলার জন্য নতুন গান রচনা করা। বলবেন আমাদেরটা দেশ ওদেরটা প্রদেশ। আমাদেরটা স্বাধীন সার্বভৌম ওদেরটা তা নয়। এসব যুক্তি চলবে না। আমাদের ভূখন্ডটা একসময় একটি দেশের প্রদেশ ছিল, পরে হয়েছে দেশ। নামে নামে জমে টানে। অদূর ভবিষ্যতে প্রদেশের রাহুগ্রাস থেকে কি দেশ বাঁচানো যাবে? এখনি তো গিলে গিলে অবস্থা। (উপরের কয়েকটি প্যারা টুকে দিলাম নাজমা মোস্তফার ‘একই ধর্ম একই ধারা’ গ্রন্থের, ১০৩-১০৫ পৃষ্ঠা থেকে, প্রকাশকাল জানুয়ারী ২০১২সাল)।

অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথের আমার সোনার বাংলা গান বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী গান। যে গানে সে অবিভক্ত বাংলা চেয়েছে। যে গানে সে বংগভংগের বিরোধীতা করেছে। যে গানে সে তার দেবী মায়ের প্রশংসা করেছে।
এমন একটি লিখনী কি করে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হতে পারে?
আমাদের দেশপ্রেম, জাতীয়তাবোধ কি এতই ঠুনকো?
অবিলম্বে কাট্রা ইসলামবিদ্বেষী , বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী প্রথম রাজাকার রবিন্দ্রনাথের লিখনি বাদ দিয়ে মুসলিম লিখকদের লিখাকে জাতীয় লিখনী করা হোক।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন