বৃহস্পতিবার, ২ জুন, ২০১৬

" হাদিসের ইমামগণ যে মাযহাবের ছিলেন

ইমাম বুখারী রহঃ , ইমাম মুসলিম রহঃ , ইমাম তিরমিযী রহঃ সহ হাদিসের অন্যান্য ইমামগণ মাযহাব অনুসরণ করতেন। 
লা-মাযহাবী ভাইয়েরা বলে ' মাযহাব মানা শিরক ! ' আমি তাদের বলি — ' মাযহাব মানা যদি শিরক-বিদআতই হয় তাহলে ছিহাহ ছিত্তা সহ হাদিসের অন্যান্য ইমামগণ কি মুশরিক বা বিদ’আতী ছিলেন ? '
'
বড় আশ্চর্যের বিষয় হল লা-মাযহাবীদের প্রথম কাতারের নেতা নবাব ছিদ্দীক হাসান খান তার স্বলিখিত বইয়ের মাঝে " হাদিসের ইমামগণ কোন মাযহাবের অনুসারী ছিলেন " তা সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন। 
'
যা নিম্নরূপ : 
'
১। ইমাম বুখারী রহঃ শাফেয়ী মাযহাবের অনুসারী ছিলেন। 
( সুত্রঃ নবাব ছিদ্দিক হাসান খান লিখিত আবজাদুল উলুম পৃষ্ঠা নং ৮১০, আলহিত্তা পৃষ্ঠা নং ২৮৩ এবং শাহ ওয়ালিউল্লাহ রহঃ লিখিত আল-ইনসাফ পৃষ্ঠা নং ৬৭ , আল্লামা তাজ উদ্দীন সুবকী রহঃ লিখিত ত্ববকাতুশ শাফেয়ী পৃষ্ঠা নং ২/২ ) 
'
২। ইমাম মুসলিম রহঃ শাফেয়ী মাযহাবের অনুসারী ছিলেন ।
(সুত্রঃ ছিদ্দিক হাসান খান লিখিত আল-হিত্তা পৃষ্ঠা নং ২২৮ ) 
'
৩। ইমাম তিরমিজী নিজে মুজতাহিদ ছিলেন। 
তবে হানাফী ও হাম্বলী মাযহাবের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। 
( সুত্রঃ শাহ ওয়ালিউল্লাহ রহঃ লিখিত আল-ইনসাফ পৃষ্ঠা নং ৭৯ ) 
'
৪। ইমাম নাসাঈ শাফেয়ী মাযহাবের অনুসারী ছিলেন। 
( সুত্রঃ নওয়াব ছিদ্দিক হাসান লিখিত আল-হিত্তা পৃষ্ঠা নং ২৯৩ ) 
'
৫। ইমাম আবু দাউদ রহঃ শাফেয়ী মাযহাবের অনুসারী ছিলেন। 
( সুত্রঃ আল-হিত্তা পৃষ্ঠা নং ২২৮ , 
আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী রহঃ ইবনে তাইমিয়ার উদ্দৃতি দিয়ে ফয়জুল বারী ১/৫৮ তে ইমাম আবু দাউদ রহঃ কে হাম্বলী বলে উল্যেখ করেছেন। ) 
'
৬। ইমাম ইবনে মাজাহ শাফেয়ী মাযহাবের অনুসারী ছিলেন। 
( সুত্রঃ ফয়জুলবারী ১/৫৮ )
'
অতএব ছিহাহ ছিত্তার ইমামগণ মাযহাবের অনুসারী ছিলেন তা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট । 
এছাড়াও হাদিসের অন্যান্য ইমামগণ কোন কোন মাযহাবের অনুসারী ছিলেন তার বর্ণনায় প্রখ্যাত লা-লাযহাবী আলেম নবাব ছিদ্দিক হাসান খান সাহেব তার লিখিত " আল-হিত্তা " কিতাব লিখেন — 
'
৭। মিশকাত শরিফ প্রণেতা শাফেয়ী, পৃঃ১৩৫ 
৮। ইমাম খাত্তাবী রহঃ শাফেয়ী, পৃঃ ১৩৫ 
৯। ইমাম নববী রহঃ শাফেয়ী, পৃঃ ১৩৫ 
১০। ইমাম বাগভী রহঃ শাফেয়ী, পৃঃ ১৩৮ 
১১। ইমাম ত্বহাবী হাম্বলী, পৃঃ১৩৫ 
১২। বড় পীর আঃ কাদের জিলানী রহঃ হাম্বলী, পৃঃ ৩০০ 
১৩। ইমাম ইবনে তাইমিয়া হাম্বলী, পৃঃ ১৬৮ 
১৪। ইবনে কায়্যিম রহঃ হাম্বলী, পৃঃ১৬৮ 
১৫। ইমাম আঃ বার রহঃ মালেকী, পৃঃ১৩৫ 
১৬। ইমাম আঃ হক রহঃ হানাফী, পৃঃ১৬০ 
১৭। শাহ ওয়ালিউল্লাহ রহঃ হানাফী, পৃঃ১৬০-১৬৩ 
১৮। ইমাম ইবনে বাত্তাল মালেকী, পৃঃ২১৩ 
১৯। ইমাম হালাবী রহঃ হানাফী ,পৃঃ২১৩ 
২০। ইমাম শামসুদ্দীন আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে আব্দুদ দায়েম রহঃ শাফেয়ী , পৃঃ২১৫ 
২১। ইমাম বদরুদ্দীন আঈনী রহঃ হানাফী,পৃঃ২১৬ 
২২। ইমাম যারকানী রহঃ শাফেয়ী, পৃঃ ২১৭ 
২৩। ইমাম ক্বাজী মুহিব্বুদ্দীন হাম্বলী, পৃঃ২১৮ 
২৪। ইমাম ইবনে রজব হাম্বলী, পৃঃ২১৯ 
২৫। ইমাম বুলকিনী শাফেয়ী, পৃঃ ২১৯ 
২৬। ইমাম মার্যুকী মালেকী পৃঃ ২২০ 
২৭। ইমাম জালালুদ্দীন বকরী শাফেয়ী, পৃঃ২২০ 
২৮। ইমাম কুস্তলানী শাফেয়ী, পৃঃ২২২ 
২৯। ইমাম ইবনে আরাবী মালেকী, পৃঃ ২২৪ 
'
এমন কি তাদের মডেল আব্দুল ওয়াহ্হাব নজদীকেও হাম্বলী বলে উল্লেখ করেছেন তার 'আল্-হিত্তাতু ফিস সিহাহিস সিত্তাহ’র ১৬৭ পৃষ্ঠায়-
'
পরিশেষে বলবো মাযহাবের অনুসরন করা শিরক হলে উপরে বর্ণিত সম্মানিত ইমামগণ কি মুশরিক ছিলেন ? তাঁরা শিরক চিনতে পারেন নাই ! শিরক চিনেছে ১৮৮৬ সালে জন্ম নেওয়া " আহলে হাদিস " নামক লা-মাযহাবী ভাইয়েরা ! যারা কিনা " আহলে হাদিস " নামটাও বৃটিশ সরকারের কাছ থেকে ভিক্ষা নিয়েছেন । 
( সূত্র — ইশারায়ে সুন্নাহ : ১১/৩২-৩৯)

সুতরাং যারা বলে মাযহাব অনুসরণ করা শিরক তাদের উচিত তাওবা করা । অন্যথায় তারা তাদের দাবির উপর অটল থেকেই মাযহাবি আলেমের লেখা কিতাবকে গ্রহণযোগ্য মনে করলে বুঝতে হবে তারা ফেতনাবাজ , উম্মাহর ঐক্যের শত্রু , সকল মুসলমানের শত্রু ! বুঝতে হবে তাদের মাঝে মুনাফিকের আলামত বিদ্যমান রয়েছে ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন